আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্যালারির চেহারা দেখে চোখে পানি আসে

১৯৮৩ সালে ফেডারেশন কাপ ফুটবল ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচ। সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় খেলা শুরু। অথচ দুপুর ২টার মধ্যে পুরো গ্যালারি ভরে গেছে। বেলা ১২টা থেকে তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে টিকিট কিনতে হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমীর ভিড়। পুরো ঢাকা শহরে দুই দলের পতাকা ভরে গিয়েছিল।

শুধু ঢাকা কেন তখন মর্যাদার লড়াই মানে দেশ জুড়েই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ত। কেননা তখন ফুটবলের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। গতকালের দৃশ্য চিন্তা করুন, গ্যালারি দেখেই মনে হয়নি ফেডারেশন কাপে মোহামেডান-আবাহনী লড়ছে। আগের রাতে ম্যাচে কি হতে পারে তা জানতে দুই দলের বেশক'জন সাবেক ফুটবলারকে ফোন করা হয়েছিল। তাদের অনেকেই অবাক হয়ে বলেছেন, তাই নাকি আগামীকাল মোহামেডান-আবাহনীর খেলা।

আগে দুই দলের ম্যাচকে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহ আগে থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ত। প্র্যাকটিস মাঠেও উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যেত। আর এখন সোমবার ম্যাচ অথচ রবিবার রাতেও ফুটবলাররা জানেন না চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের লড়াইয়ের কথা। সত্যি বলতে কি, দুই দলের কাছে ম্যাচের গুরুত্ব থাকলেও এখন আর এ নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যায় না। এতটা খারাপ অবস্থা যে চেষ্টা করলে গ্যালারিতে দর্শকও গোনা যাবে।

কাজী জসিমউদ্দিন জোসি ৮০ দশকে আলোচিত ফুটবলার ছিলেন। মোহামেডানের অনেক জয়ের নায়ক তিনি। বিশেষ করে আবাহনীর বিপক্ষে জোসি তেলেবেগুনে জ্বলে উঠতেন। লেফট আউট পজিশন থেকে আক্রমণ করে আবাহনীকে দিশেহারা করে রাখতেন। সেই জোসি গতকাল ম্যাচ দেখতে দেখতে ফুটবলের স্মৃতিচারণ করছিলেন।

বললেন, ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত আমি ফেডারেশন কাপ বা লিগে মোহামেডানের জয়ে খেলেছি। তখন আবাহনীর সঙ্গে খেলা মানে খেলোয়াড়রা আলাদা এক টেনশনে থাকতেন। গ্যালারি ভরা দর্শকদের সামনে কেমন খেলব এ চিন্তা পেয়ে বসত অনেক আগে থেকে। ১৯৮৩ সালে সালাম মুর্শেদীর নেতৃত্বে মোহামেডান ফেডারেশন কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়। ফাইনালে আমরা ২-০ গোলে আবাহনীকে পরাজিত করেছিলাম।

মনে আছে ম্যাচে প্রথম গোলটা আমিই করেছিলাম। জালে বল জড়াতেই দেখি সমর্থকরা চিৎকার দিয়ে উল্লাস করছেন। বিশ্বাস করুন সেই দৃশ্যগুলো এখন আমার কাছে স্বপ্নই মনে হচ্ছে। কারণ এখন চিৎকার দেবে কারা? গ্যালারিতে তো এখন দর্শকই হয় না। এরপর জোসি গ্যালারি দেখিয়ে বললেন, কেউ কি চিন্তা করেছিল মোহামেডান-আবাহনীর খেলাতেও এমন ফাঁকা থাকবে।

জোসি বলেন, ফুটবলকে ভালোবাসি বলে এখনো মাঠে ছুটে আসি। কিন্তু গ্যালারি ও খেলার মান দেখলে বিশ্বাস করবেন না চোখে পানি এসে যায়। জানি না ফুটবলে এমন করুণ হাল কখনো দূর হবে কিনা।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।