আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্বাসকষ্টের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা

শ্বাসকষ্টজনিত রোগকেই সাধারণত হাঁপানি বা অ্যাজমা বলা হয়ে থাকে। এ রোগের সঙ্গে সবাই কম বেশি পরিচিত। ধুলোবালি ও শীতকালে এ রোগের তীব্রতা একটু বেড়ে যায়। হাঁপানি হলো মানুষের দেহের একটি অসহনীয় ও মারাত্দক ব্যাধি। অ্যাজমার প্রধান উপসর্গ হচ্ছে শ্বাসকষ্ট।

এ জাতীয় রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বেশিরভাগ সময় তারা মধ্যরাতে বা ভোরের দিকে ঘুম থেকে উঠে বিছানায় বসে থাকে। কারণ সে সময় তাদের শ্বাস টানতে এবং ছাড়তে ভীষণ কষ্ট হয়। বুকের মধ্যে অাঁটসাঁটভাবে এবং বাঁশির মতো সাঁই সাঁই আওয়াজ হয়। যারা রোগীর পাশে এ সময় থাকেন তাদের কানেও আওয়াজ যায়। রোগীর সারা শরীর ঘামে ভিজে যায়।

ছোট শিশুদের জন্য এটি অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক ব্যাধি। বাচ্চাদের সঙ্গে সঙ্গে তাদের বাবা, মা এবং পুরো পরিবারই সারা রাত জেগে থাকে।

সাধারণত ভোরের দিকে এ রোগের আক্রমণ শুরু হলেও যারা এ রোগে নতুন আক্রান্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে দিনের যে কোনো সময় হাঁপানি হতে পারে। হাঁপানি বা অ্যাজমা শুরুতে অল্প পরিমাণের শ্বাসকষ্ট হয়, যা পরক্ষণে দীর্ঘ সময় স্থায়ী হয়। এছাড়াও এ রোগ সৃষ্টি হওয়ার আগে কতকগুলো উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়।

সেগুলো হল- চোখ, নাক এবং মুখ চুলকানো, চোখ এবং নাক দিয়ে পানি পড়া, অনবরত হাঁচি হওয়া। যে সব রোগী অনেক দিন ধরে হাঁপানি রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যবস্থা এক ধরনের। যারা হঠাৎ বা নতুন করে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা ব্যবস্থা আলাদা, তবে নতুন এবং পুরাতন রোগীদের ক্ষেত্রে ইনহেলারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইনহেলার অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের জন্য একটি কার্যকর চিকিৎসা ব্যবস্থা। এ যন্ত্রের সাহায্যে খুব সহজেই শ্বাসের সঙ্গে ওষুধ টেনে নেওয়া যায়।

ইনহেলার ছাড়া এ সব রোগীর মুখে সেবনের যে ধরনের ওষুধ রয়েছে সেগুলো সেবন করলে রোগীদের ঘুমের পরিমাণ কমে যায়। হাত-পা কাঁপে, বুক ধড়ফড় করে। এদিক দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে ইনহেলার ব্যবহার করাই শ্রেয়। কারণ ইনহেলার যন্ত্রের মাধ্যমে শ্বাসনালিতে যে ওষুধ প্রেরণ করা হয়, তা কাজ করে খুব দ্রুত। এ যন্ত্রটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ওষুধ শ্বাসনালিতে ঠিকমতো পেঁৗছায়।

নতুবা এটা ব্যবহার করলে রোগীর কোনো উপকার হবে না। হাঁপানি রোগের প্রথম পর্যায়ের চিকিৎসা হচ্ছে ইনহেলার। কোনো শ্বাসকষ্টের রোগীর যদি ইনহেলার ব্যবহার করেও শ্বাসকষ্টের পরিমাণ বেড়ে যায়, তবে তাকে মুখে সেবনের ট্যাবলেট বা ক্ষেত্র বিশেষে ইনজেকশন দেওয়া হয়। ইনহেলার ব্যবহারের পর অন্য ওষুধ রোগীর শরীরে কাজে লাগে। এর কোনো পাশর্্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

এটি ব্যবহার করলে ওষুধ লাগে কম এবং এর ফল পাওয়া যায় খুব তাড়াতাড়ি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহার করতে হবে। তবে অ্যাজমা রোগীর শ্বাসকষ্টের পরিমাণ যদি একেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় সে ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

শিশুদের ক্ষেত্রে : শিশুদের জন্য এটি অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক ব্যাপার। তাই শিশুদের হঠাৎ হাঁপানির সৃষ্টি হলে তা খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

বেশিরভাগ সময় এসব ক্ষেত্রে শিশুদের সালবুটামল জাতীয় ইনহেলার দেওয়া হয় স্পেসারের সাহায্যে। শ্বাসের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এর সাহায্যে পাফ দেওয়া হয় কয়েক সেকেন্ড পরপর। তবে সর্বোচ্চ ২০ পাফ পর্যন্ত নেওয়া যায়। একেবারে ছোট বাচ্চাদের জন্য নেবুলাইজার ব্যবহার করা হয়।

লেখক : বক্ষব্যাধি বিষেশজ্ঞ, ঢাকা মেডিকেল

কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।

ফোন : ০১৭১১-১৭১৬৩৪

 

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/index.php     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।