আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দাগ দেখে সুন্দরবনের বাঘ গুনবে বন বিভাগ

ডোরাকাটা দাগ দেখে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা গুনতে যাচ্ছে বন বিভাগ। ক্যামেরা ফাঁদ বসিয়ে স্থিরচিত্র ধারণ করে বাঘের এই সংখ্যার ধারণা পাওয়া যাবে। বন বিভাগকে এই প্রকল্পে আর্থিকভাবে সহায়তা করছে বিশ্বব্যাংক এবং কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। বন বিভাগের আশা, এর মাধ্যমে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা নিয়ে অতীতের ভ্রান্তি দূর হবে।
আজ বৃহস্পতিবার থেকে ৬ মে পর্যন্ত সুন্দরবনের কটকা-কচিখালী অঞ্চলে মাঠ পর্যায়ে ক্যামেরা ফাঁদ প্রকল্পের পাইলটিং ও প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে।

বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পরই সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে প্রায় ৪৫ দিনের বাঘ পরিবীক্ষণ ও গণনা অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় ৬০১৭ বর্গকিলোমিটার সুন্দরবনের ৯৯৯টি গ্রিড স্টেশনে এই ক্যামেরা ফাঁদ বসানো হবে। এই কার্যক্রমে ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া থেকে ইয়াদভেন্দ্রদেভ ঝালা, কামার কোরেশী, দীপাঞ্জন ও মাঞ্জারি অংশ নেবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ বন বিভাগের সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগ, সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগ, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনা এবং বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের ২৭ কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেবেন। প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুছ আলীর তত্ত্বাবধানে বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক তপন কুমার দে পুরো কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।


২০০৪ সালে ইউএনডিপি, বাংলাদেশ ও ভারতের বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় বাঘের পায়ের চিহ্নের ওপর ভিত্তি করে একটি জরিপ করেছিল বন বিভাগ। জরিপে বাঘের সংখ্যা ৪৪০টি বলে জানা যায়। এর মধ্যে পুরুষ বাঘ ছিল ১২১টি, বাঘিনী ২৯৮টি ও বাচ্চা ২১টি। জাতীয় সংসদের সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বাঘের এই সংখ্যাটি তুলে ধরেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ২০০৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনিরুল এইচ খানের তত্ত্বাবধানে ব্রিটিশ জুয়োলজিক্যাল সোসাইটির সহায়তায় ক্যামেরা ফাঁদ পদ্ধতিতে বাঘের সংখ্যা বের হয় মাত্র ২০০টি।

সব শেষে বন বিভাগ ও বন্যা প্রাণী ট্রাস্টের সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশের খালে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে এক জরিপ চালানো হয়। এই জরিপে জানা যায়, ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত চার বছরে সুন্দরবনে বাঘ কমে গেছে প্রায় ৬৯ শতাংশ। তবে বন বিভাগ এই জরিপকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করে।
ক্যামেরা ফাঁদ বসিয়ে ছবি তোলা হলে বাঘের বিজ্ঞানভিত্তিক সংখ্যা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুছ আলী। প্রথম আলো ডটকমকে তিনি বলেন, ‘খাল জরিপের মাধ্যমে বাঘের সংখ্যার বের করা আসলে ওঝা দিয়ে রোগীর রোগ সারানোর মতো।

এভাবে আসলে বাঘের সংখ্যা জানা সম্ভব নয়। ’
সঠিক পরিকল্পনা নেওয়া হলে ক্যামেরা ফাঁদের মাধ্যমে বাঘের সংখ্যা নির্ণয় সম্ভব বলে মনে করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ। প্রথম আলো ডটকমকে তিনি বলেন, ‘আঙুলের ছাপ পরীক্ষা করে যেমন মানুষের পরিচয় জানা যায়, তেমনি একেকটি বাঘের ডোরাকাটা দাগ একেক রকমের। তাই এটি খুব কার্যকর বিজ্ঞানভিত্তিক। ক্যামেরা ফাঁদ বসিয়ে এর আগে সুন্দরবনে স্বল্প পরিসরে এ ধরনের কাজ এ দেশের বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা করেছিলেন।

তবে এই কার্যক্রমে দেশীয় বিশেষজ্ঞদের রাখা উচিত ছিল। ’।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে ১৪ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।