আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছোটগল্পঃ আমাদের গোপা'দার সংসার।



আমাদের গোপা’দার মন খুব খারাপ... মন খারাপ হবার অবশ্য কারন অনেক। কিন্তু তিনি তা নিয়ে চিন্তিত নন। তার চিন্তা একটাই। গোপী তাকে বকেছে। ওহ... গোপী হল গোপাদার বউ।

আমাদের বউদি। তার নাম গোলাপী। আদর করে তিনি গোপী ডাকেন। তাও আবার আড়ালে আবডালে, আমাদের সামনে। গোলাপীর সামনে তাকে গোপী নাম কেন... তার দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহসই নেই আমাদের গোপাদার।

আমরাও তেমনি গোপাল দাদাকে গোপা’দা বলে ডাকি। আড়ালে আবডালে। গোপাদার হাহাকার... বুঝলিরে জীবনে নারীজাতিকে কখনও বিশ্বাস করতে নাই। নইলে যার জন্য এতকিছু করলাম। সে কিনা আমাকে সারাদিন ঝাড়ি দেয়।

-কেন গোপাদা? -তার আগে তুই বল, আমি কি দেখতে খুব কাল? কিংবা দিন দিন মোটা হয়ে যাচ্ছি?? -যা, তুমি কি যে কি বলনা? কে বলেছে? তোমার ভুঁড়িটাতো কত সুইট! আর সারাদিন রোদে ঘোরাঘুরি করলে চেহারা একটু আধটু এই রকমই হয়। (সত্যি কথা বলতে কি, গোপা’দার ভুঁড়িটা দিন দিন বেড়েই চলছে। হাজার হলেও আমরা তো আর আমাদের সাধের দাদাকে মোটকু বলতে পারিনা)। -(গোপাদার মুখটা হাজার ওয়াটের বাল্বের মত জ্বলে উঠল)... সত্যিই তাই? আর ওই গোপী আমাকে বলে আমি নাকি দিন দিন কালো হাতি হয়ে যাচ্ছি, আমি কোন কাজের না। হাতি যেমন কলার বাগান আগামাথা খেয়ে শেষ করে আমিও নাকি শুধু খেয়ে খেয়ে সংসার ধ্বংস করছি।

তাই আজকেই সকালে একদফা হয়ে গেছে। আমিও বলে দিয়েছি, না পোষালে তোমার জন্য দরজা খোলা। সকালে না খেয়েই বের হয়েছি। -কি বল গোপা’দা এখন তো বিকেল। তারমানে সারাদিন...... -কি করবরে, সবই আমার কপাল।

আর তুই তো জানিস, স্ত্রীলোকের ঘ্যানরঘ্যানর প্যানরপ্যানর আমি একদম সহ্য করতে পারিনা। এবার কিছু একটা করেই ছাড়তে হবে। -না দাদা, বৌদি তোমাকে অনেক বেশী ভালবাসেন। তুমি বাসায় ফিরে যাও... .........বলতে না বলতেই ক্রিং ক্রিং ক্রিং শব্দ... গোপাদার ফোনে কথোপকথোন... এরপর একগাল বিস্তৃত হাসি... -বুঝলিরে, তোর বউদি ফোন করেছিল, সে নাকি আমার পছন্দের খাসির মাংশ আর আলুভর্তা রান্না করে রেখেছে। আমি এখনো বাসায় যায়নি জন্য সে না খেয়ে আছে।

কি করি বলতো? ......... দাদা আমার কথা উপেক্ষা করেই বলেন, নারে তোর বউদি খুব ভালমানুষ। আমাকে অনেক ভালবাসে। থাক, আমি বাসায় যাই। তোর বউদি নইলে ক্ষিধেয় মারা যাবে, ও আবার একদম ক্ষিধে সহ্য করে থাকতে পারেনা। আমি তার চোখে দেখছিলাম,এক অপুর্ব দ্যুতি খেলা করছে।

তার গমনপথের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আমার আর কিছুই ছিলনা। এ এক আমোঘ ভালবাসার টান। এ টান উপেক্ষা করা অসম্ভব। সত্যি, সত্যিই অসম্ভব। স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, আমার পক্ষেও যেন এ টান উপেক্ষা করা সম্ভব না হয়।

ভালবাসা ঘিরে থাক পৃথিবীর সকল দম্পতিকে। জয় হোক ভালবাসার। জয়তু ভালবাসা। (মাঝে মাঝে লেখালেখির ইচ্ছা হয়, তাই আনমনে লেখা। তাই হয়ত তেমন কিছুই লিখতে পারিনা।

তবুও স্বপ্ন দেখি অনেক ভাল কিছু লেখার। জানিনা হবে কিনা? থাকুক না কিছু স্বপ্ন, পুরন করুক জীবনের চলার পাথেয় কে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।