আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্রীমঙ্গলে দাদন ব্যবসায়ীর ফাঁদে পড়ে ১০ পর

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দাদন ব্যবসায়ী ঋণের ফাঁদে পড়ে সাতগাঁও চা-বাগানের ফাঁড়ি বাগান মাকড়িছড়া চা বাগানের ১০টি চা-শ্রমিক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ঋণের টাকা পরিশোধ করেও আতঙ্কের মধ্য রয়েছে ওই বাগানের আরও ২০/২৫টি পরিবার। টাকা পরিশোধ না করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে পরিবারগুলোকে। গতকাল সরজমিনে মাকড়িছড়া চা বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের আলিসারকুল গ্রামের মোশাহিদ মিয়া তিন বছর আগে চা-শ্রমিকদের চড়া সুদে দাদন দেন। তার কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে বাগান থেকে পালিয়ে গেছেন বাগানের বাসালাইনের নরেন্দ্র রায়, গোপাল চাষা, দিলীপ গোয়ালা, আপন গোয়ালা, ফুলটিলার সাত্তু কর্মকার, দক্ষিণলাইনের সলিল চাষা, পালকু সাঁত্ততাল, সলিল গোয়ালা, আপানা আল্মিক ও উপেন্দ কুর্মি। তাদের কয়েকটি বসতঘর বাগান কর্তৃপক্ষ অন্য শ্রমিকদের দিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া এখনো দুটি ঘর খালি পড়ে আছে। বাগান ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া নরেন্দগি্ন ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী দিপ্তী রায় বলে, তার মামা মোশাহিদ মিয়ার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল। টাকার বদলে মোশাহিদ তাদের বাঁশঝাড়ের বাঁশ নিয়ে যায়। পরবর্তীতে আবারো টাকার জন্য চাপ দিলে নরেন্দ তার মার প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা তুলে মোশাহিদকে ৫০ হাজার টাকা দেন। এর কিছুদিন পর আরও টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেয় মোশাহিদ। তখন মামা নরেন্দ বাগান ছেড়ে পালিয়ে যায়। সলিল চাষার ছেলে রানা চাষা বলেন, মোশাহিদের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিল তার বাবা। সপ্তাহে ৬২০ টাকা করে দুই বছর কিস্তি দিয়ে যায়। এরপরও টাকা পরিশোধ হয়নি বলে টাকার জন্য বাবাকে চাপ দেওয়া হয়। এই ঋণের জ্বালায় মাকে নিয়ে পালিয়ে যান রানার বাবা। দক্ষিণলাইনের রাজেন্দ গোয়ালা বলেন, ১৬ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম মোশাহিদের কাছ থেকে। সপ্তাহে ৬২০ টাকা করে দুই বছর দিয়েছি। এরপর আমার কাছ থেকে জোর করে আরও ছয় মাস টাকা নিয়েছে মোশাহিদ। এখন আবার টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। রাতে ঘরে এসে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। টাকা না দিলে ছয় টুকরা করে ফেলবে। এ ছাড়া আমার ন্যাশনাল আইডি কার্ডটিও নিয়ে গেছে। সাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ভরত কুর্মি জানান, ঋণের দায়ে ১০টি পরিবার চলে গেছে। অন্য পরিবারগুলোও আতঙ্কের মধ্যে আছে। সাতগাঁও চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো রফিকুল ইসলাম বলেন, মাকড়িছড়া চা-বাগানের শ্রমিকরা মোশাহিদের আতঙ্কে আছে। সে অনেক শ্রমিককে সুদে টাকা দিয়েছে। মোশাহিদ মিয়া বলেন, আমার পাওনা টাকা শ্রমিকরা পরিশোধ করে দিয়েছে। এখন আমি আর ওই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.