যদিও অনেকে বলছেন রূপচর্চা বলে কথা। তাই বলে সে চর্চায় শামুক! আচ্ছা শামুক না হয় মানা গেল তাই বলে শুঁয়োপোকা? আরও আছে, ইদানিং রূপচর্চায় নাকি আগুন, সাপের বিষ সবই ব্যবহূত হচ্ছে! বলা যেতে পারে কি নেই সেখানে!
সেই প্রাচীনকাল থেকেই নানা ধরনের উপাদান ব্যবহূত হয়ে আসছে রূপচর্চায়। তবে ইদানিং রূপচর্চার ক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছে এমনই সব অদ্ভুত উপাদান। সৌন্দর্য-সচেতনরা অবশ্য জোর দাবি করছেন, সৌন্দর্যের সাধনায় নাকি মনের জোরও থাকতে হয়! ভয় পেলে রূপচর্চা হয় না। যাঁরা সুন্দর ত্বকের পূজারি তাঁদের কাছে গা ছমছম করার অনুভূতির চেয়ে সজীব, পেলব ত্বকই মুখ্য।
ফেসিয়ালের ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়েই যেসব অদ্ভুত পদ্ধতিগুলো রয়েছে তা নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জিনিউজ।
মুখের ওপর শুঁয়োপোকার বাসা
শুঁয়োপোকা! নাম শুনলেই অনেকের গা শিরশির করে! প্রজাপতিতে পরিণত হওয়ার আগে যে কচি কলা পাতা রঙের মিল্কউইডে এ শুঁয়োপোকা বাসা বাঁধে তা দিয়েই রূপচর্চা করা হয়। মিল্কউইডের সঙ্গে ইয়োগার্ট মিশিয়ে যে উপাদান তৈরি হয় তা ফেসিয়াল হিসেবে ব্যবহূত হয়। বিকট গন্ধের ফেসিয়ালের উপাদানটি মুখে মাখার পর এক ঘণ্টা বিশ্রামে থাকতে হয়। গন্ধ যতই কটু হোক না কেনো ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে এবং মসৃণ ত্বক পেতে অনেকেই এ ফেসিয়াল করান।
এর নাম মিল্কউইড ফেসিয়াল।
মুখের ওপর আগুন
মুখের ওপর আগুন জ্বালানোর এ পদ্ধতিটির নাম ফায়ার ফেসিয়াল। এ ফেসিয়ালটি চীনে ব্যাপক জনপ্রিয়। চামড়া কুচকে যাওয়া, বলিরেখা প্রভৃতি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চীনে ‘হুয়ো লিয়াউ’ নামের এই ফেসিয়াল করান সৌন্দর্য-সচেতন অনেকেই। তোয়ালেতে বিশেষ ধরনের রাসায়নিকের সঙ্গে অ্যালকোহল মিশিয়ে ত্বকের ওপর বসানো হয় এবং তাতে আগুন জ্বালানো হয়।
ত্বক পুড়ে যাওয়ার আগে আবার আগুন নিভিয়ে ফেলাও হয়। আগুন আর রাসায়নিকের বিশেষ এই ফেসিয়ালে ত্বকে আগুনের মতো আভা দেখা যায় বলেই মনে করেন অনেকে।
মুখের ওপর সাপের বিষ
ইদানিং সাপের বিষের ফেসিয়ালও অনেক সৌন্দর্য-সচেতন ফ্যাশনপ্রেমীদের আগ্রহ বাড়াচ্ছে। এটি বোটক্সের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে যে বিশেষ উপাদান রয়েছে তা নাকি ত্বকের বলিরেখা ঠেকাতে সক্ষম।
সাপের কামড়ে যেমন দেহ অচল হয়ে পড়ে, সাপের বিষের ফেসিয়ালে ত্বকের ওপর সেরকম প্রভাব পড়ে। মুখের ওপর বয়সের ছাপ দূর করতে অনেকেই সাপের বিষের এই ফেসিয়াল করান যাতে তাঁদে মুখের বলিরেখা দূরে থাকে।
রক্ত-স্নান!
এই ফেসিয়াল পদ্ধতিটি মোটেও দুর্বলচিত্তের জন্য নয়। তারকা অভিনেত্রীদের মধ্যে এ ধরনের ফেসিয়াল করা প্রবণতা রয়েছে। এ পদ্ধতিটি অনেকটাই চলচ্চিত্রে দেখানো ড্রাকুলা চরিত্রগুলোর রক্ত শোষণ করার মতো।
এ পদ্ধতিতে প্রথমে লেজার চিকিত্সা করা হয় পরে ব্যক্তির শরীর থেকে প্লাটিলেট সমৃদ্ধ প্লাজমা (পিআরপি) ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সুঁই ব্যবহার করে মুখে যোগ করা হয়। মুখে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফুটো করে এ ফেসিয়াল করা হয়। এই ফেসিয়াল করা হলে সহজে বলিরেখা পড়ে না এবং ত্বক টানটান থাকে বলে দাবি করা হয়।
সজীব ত্বকের জন্য বিড়ালের মল!
অবিশ্বাস্য শোনালেও বিড়ালের মলকে পাউডার বানিয়ে তা বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে মিশিয়ে ফেসিয়াল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্রী গন্ধ দূর করতে এর সঙ্গে গোলাপ জলও যোগ করা হয়।
দাবি করা হয়, অদ্ভুত এ ফেসিয়াল নরম ও পেলব ত্বক পেতে সহায়ক।
মুখের ওপর ভেড়ার গর্ভফুল
ভেড়ার প্ল্যাসেন্টা বা গর্ভফুলকেও ফেসিয়ালের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতিটি নাকি ব্যবহার করেন ভিক্টোরিয়া বেকহাম। শুনতে যতই বিদঘুটে শোনাক, এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভেড়ার গর্ভফুল ব্যবহার করে ত্বকে আর্দ্রতা আনা যায় ফলে ত্বক সজীব ও পেলব থাকে।
শামুক থেরাপি
রূপচর্চার উপাদান জীবন্ত শামুক! মুখের ওপর জীবন্ত শামুক ছেড়ে, এক ঘণ্টার পরিপূর্ণ বিশ্রাম! এতে ত্বক হবে সতেজ।
জাপানে ব্যবহূত হচ্ছে এই শামুক থেরাপি। শামুক থেকে নির্গত বিশেষ আঠালো উপাদানই মুখের ত্বকের কোষগুলোকে সতেজ করে তোলে। শামুক থেকে নির্গত বিশেষ আঠালো পদার্থে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির উপাদান হিসেবে রয়েছে প্রোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও হায়ালিউরনিক অ্যাসিডের মিশ্রণ। এ রাসায়নিক উপাদানগুলো ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায়, প্রদাহ কমায় ও মৃত কোষগুলো সরিয়ে ফেলে।
মাড থেরাপি বা কাদা চিকিৎসা
সৌন্দর্যচর্চাতেও মাটির ব্যবহার দীর্ঘদিনের।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই মাটি দিয়ে রূপচর্চা করার চল রয়েছে। মাটিতে যেসব খনিজ উপাদান রয়েছে, তা ত্বকে মৃত কোষ পরিষ্কারের পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজারের কাজ করে। মুলতানি মাটি, লাল আঠালো এঁটেল মাটির ব্যবহার দেখা যায়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।