আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মৃত্যুঞ্জয়ী নেলসন ম্যান্ডেলা

গণতন্ত্র, সাম্য, শান্তি ও সমঝোতার মূর্ত প্রতীক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। দক্ষিণ আফ্রিকার এই রাষ্ট্রপিতা জীবন্ত কিংবদন্তি হিসেবে নন্দিত হয়েছেন বিশ্বের সব প্রান্তের মানুষের কাছে। বিশাল দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ শাসকরা সে দেশে কায়েম করে বর্ণবাদী শাসন। সাদা-কালো আর ভারতীয়- এই তিন ভাগে বিভক্ত করা হয় সে দেশের মানুষকে। শ্বেতাঙ্গদের বসত এলাকায় কৃষ্ণাঙ্গদের প্রবেশও ছিল নিষিদ্ধ। ভূমিপুত্র সংখ্যাগুরু কৃষ্ণাঙ্গদের কার্যত মানুষ বলেই ভাবা হতো না। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। সে আন্দোলন এক পর্যায়ে সশস্ত্র সংগ্রামে পরিণত হয়। বর্ণবাদী শাসক গোষ্ঠী ম্যান্ডেলাকে নির্জন কারাগারে আটক করে রাখে একটানা ২৭ বছর। চরম নির্যাতন চালিয়েও নেলসন ম্যান্ডেলাকে তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত করা যায়নি। দমন করা যায়নি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গদের আন্দোলন। কারাবন্দী নেলসন ম্যান্ডেলা এক পর্যায়ে মুক্তি ও গণতন্ত্রের প্রতীক হয়ে দাঁড়ান বিশ্ব সমাজের কাছে। দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের আন্দোলন সংগ্রাম ও বিশ্ব সমাজের চাপে ১৯৯০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ম্যান্ডেলার দল এএনসির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। এর মাত্র এক সপ্তাহ পর ম্যান্ডেলাকে মুক্তি দেওয়া হয়। শুরু হয় দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসন অবসানের সংলাপ। ১৯৯৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি দেশের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হন। দক্ষিণ আফ্রিকাকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক এবং বর্ণবৈষম্যহীন দেশে রূপান্তরের যে প্রয়াস নেলসন ম্যান্ডেলা চালিয়েছেন তা শুধু দেশবাসীই নয়, বিশ্ব সম্প্রদায়েরও আস্থা অর্জন করে। যে পশ্চিমা বিশ্ব তাকে সন্ত্রাসী বলে ভাবত তারাও তাকে শান্তি ও গণতন্ত্রের মূর্তপ্রতীক হিসেবে স্বীকার করতে বাধ্য হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তি সংগ্রামের প্রতি বঙ্গবন্ধু সমর্থন জানিয়েছিলেন। ১৯৯০ পর্যন্ত যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে তারা এ ব্যাপারে অভিন্ন ভূমিকা রেখেছে। এ কথাটি মনে করেই ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ২৫তম বার্ষিকীতে ম্যান্ডেলা বাংলাদেশে আসেন। নেলসন ম্যান্ডেলার মহাপ্রয়াণে বাংলাদেশে তিন দিনের জাতীয় শোক পালন করা হচ্ছে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হচ্ছে তার সম্মানে। মৃত্যুঞ্জয়ী নেলসন ম্যান্ডেলাকে আমাদের শেষ অভিবাদন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.