আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শাবির অনিক-খায়রুল হত্যা মামলার রায়ের অপেক্ষা

নিহত দীপঙ্কর ঘোষ অনিক ও খায়রুল কবির ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইজ্ঞিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী।
সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক দিলীপ কুমার দেবনাথের আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হবে।
সিলেটে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) কিশোর কুমার কর বলেন, “আমরা মামলাটি আদালতে সুষ্ঠুভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছি। ”
ঘটনার দিন
২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইজ্ঞিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছয় শিক্ষার্থীসহ আটজন সিলেটের চেঙ্গেরখালে নৌভ্রমণে যান।


ফেরার পথে কান্দিগাঁও ইউনিয়নের নোয়াপুটা-নীলগাঁওয়ের কাছে আরেকটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে পাঁচ-ছয়জন যুবক তাদের তাড়া করে।
ওই সময় মাঝি ইঞ্জিন বন্ধ করে দিলে বখাটেরা তাদের নৌকায় উঠে সবার মুঠোফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। বখাটেরা ছাত্রীদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে দীপঙ্কর ও খায়রুল বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটেরা তাদের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে পানিতে ফেলে দেয়।
পরদিন খাল থেকে অণিক ও খায়রুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক ইশফাকুল হোসেন সিলেটের জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে নৌকার মাঝি গুলজারসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।


বিচার প্রক্রিয়া
গত বছরের ৪ মার্চ নৌকার মাঝিসহ নয়জনকে আসামি করে সিলেটের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জালালাবাদ থানার উপপরিদর্শক সঞ্জিব দাশ।  
অভিযুক্তরা হলেন সদর উপজেলার নলকট গ্রামের গুলজার মিয়া ওরফে গুলজার মাঝি, একই গ্রামের ছইল মিয়া, শাহিন আহমদ, লাল মিয়া, সাইম মিয়া, জালাল মিয়া, রকিব আহমদ, আবদুল্লাহ ও সেলিম আহমদ।
একই সঙ্গে কারাগারে থাকা তারেক আহমদ, সুহেল মিয়া ও সইল মিয়াকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা হয় অভিযোগপত্রে।


মামলার বাদী এ অভিযোগপত্রের ওপর নারাজি দিলে ৭ মে আদালত এক আদেশে অধিক তদন্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।
পরে জালালবাদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল লতিফ পুনঃতদন্ত শেষে গত বছরের ১৫ জুন অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন।
চলতি বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত বিশেষ জজ আদালতে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। ২৫ মে মামলাটি সিলেটের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের পর বিচারকাজ শুরু হয়।
৪৩ কার্যদিবসে মামলার ৪৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ এবং রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২৮ নভেম্বর বিচারক দিলীপ কুমার দেবনাথ ১৯ ডিসেম্বর মামলার রায়ের দিন ঠিক করেন।


জামিনে ৮ আসামি
এদিকে অভিযুক্ত নয় আসামির মধ্যে আট জন ২০১২ সালের ডিসেম্বরে এবং বাকি একজন ২০১৩ সালের নভেম্বরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।
পিপি কিশোর কুমার কর বলেন, “রায়ের দিন ঠিক করার পর আমরা আসামিদের জামিন বাতিল করে রাষ্ট্রীয় জিম্মায় রাখতে আদালতের কাছে আবেদন করেছিলাম।
“পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন বহাল রেখে রায়ের দিন তাদের জিম্মায় আসামিদের আদালতে হাজির করবেন বলে আদালতের কাছে আবেদন জানায়। আদালত আসামিপক্ষের আইনজীবীদের জিম্মায় রেখে রায়ের দিন আদালাতে হাজির করতে বলেছেন। ”
সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছেন।


অনিকের বাবা দীপক ঘোষ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি আমার সন্তানকে হারিয়েছি, এর বিনিময় তো অন্য কিছু হতে পারে না। ”
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমি তো আর আমার ছেলেকে ফিরে পাব না। তাই হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা হোক এটাই আমি চাই। যাতে ভবিষ্যতে আর কোন বাবা- মা তার প্রিয় সন্তানকে না হারান। ”
একই চাওয়া নিহত খায়রুলের মা শাহিদা বেগমেরও ।


নিহত দুই শিক্ষার্থীর সহপাঠী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও চান আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি।
ওই দিন নৌকা ভ্রমণে যাওয়া জাহিদ রহমান জোসেফ বলেন, “আমরা আমাদের সহপাঠী খায়রুল কবির ও দীপংকর ঘোষের হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ড চাই, যা দেখে ভবিষ্যতে আর কেউ যেন এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ করতে সাহস না পায়।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.