আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেরির দুঃখপ্রকাশ, দেবযানী জাতিসংঘে

বৃহস্পতিবার ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানায়, বুধবার রাতে শিবশঙ্করকে ফোন করেন জন কেরি। গ্রেপ্তারের পর দেবযানীকে নিয়ে যেসব কর্মকাণ্ড হয়েছে সেগুলোর জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে কেরি ও শিবশঙ্করের টেলিফোন কথোপকথন তুলে ধরে বলা হয়েছে, “দেবযানীকে গ্রেপ্তারের পর তাকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা ভারতের কাছ থেকে শুনেছি সেজন্য তার সমবয়সী দুই মেয়ের বাবা হিসেবে সেক্রেটারি সমবেদনা জানিয়েছেন।
“জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেননের কাছে এজন্য তিনি দুঃখপ্রকাশ করেছেন। ভারতের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না বলেও তিনি জানিয়েছেন।

” 
গৃহকর্মীর ভিসা আবেদনে মজুরি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেয়া এবং তাকে চুক্তি অনুযায়ী পারিশ্রমিক না দিয়ে বেশি কাজ করানোর অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় কনস্যুলেটের ডেপুটি কনসাল জেনারেল দেবযানী খোবরাগাড়েকে গ্রেপ্তারের পর প্রকাশ্যে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায় নিউ ইয়র্কের পুলিশ।
থানায় নেয়ার পর ওই কূটনীতিককে বিবস্ত্র করে তল্লাশি চালানো হয় এবং তাকে মাদক চোরাচালানী ও যৌনকর্মীদের সঙ্গে একই কারাকক্ষে রাখা হয় বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর।  
এ পুরো ঘটনাটিকে ওয়াশিংটনের ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছে নয়া দিল্লি।
ভারতের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চক্রান্তের অংশ হিসেবে দেবযানীর গৃহকর্মী সঙ্গীতা রিচার্ডস ও তার পরিবারের অবৈধ অভিবাসনকে উৎসাহিত করে তাদের আমেরিকায় যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।
দেবযানীকে গ্রেপ্তারের দুই দিন আগে ১০ ডিসেম্বর এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্র যান সঙ্গীতা, তার স্বামী ও দুই সন্তান।


গত জুনে সঙ্গীতার হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়া, দেবযানীকে তার হয়রানির চেষ্টা, তার পাসপোর্ট জব্দ এবং দিল্লি হাই কোর্টের তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়গুলো যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকে জানানোর পরেও সপরিবারে তাকে আমেরিকায় যাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র শুধু খারাপ উদ্দেশ্য নিয়েই দেবযানীকে গ্রেপ্তার ও হেনস্তার ষড়যন্ত্র করেনি, বরং এর ‘কৌশলগত অংশীদারের’ নাক কাটার জন্য এটা করেছে বলে ভারত মনে করে।
আমেরিকানদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে ‘শোচনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ পার্লামেন্টে বলেছেন, ভারতের কূটনীতিকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ একটি ষড়যন্ত্র করেছে বলে ভারত সন্দেহ করছে।
এদিকে দেবযানীকে নিউ ইয়র্কে কনস্যুলেট থেকে সরিয়ে জাতিসংঘে দেশের স্থায়ী মিশনে নিয়োজিত করেছে ভারত।

এ পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে যে কোনো ধরনের বিচারিক প্রক্রিয়া থেকে কূটনৈতিক ছাড় পাবেন তিনি।
এই ঘটনার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে দেবযানীর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ভারত।
ওয়াশিংটনের ওই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় নয়া দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের নিরাপত্তা চৌকি তুলে নেয়াসহ  বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়ে ভারত ইতোমধ্যে বুঝিয়েছে, দেবযানীকাণ্ডে তারা কতোটা ক্ষুব্ধ।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের জন্য বিমান বন্দরের পাস বাতিল এবং যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের জন্য আমদানি ছাড়পত্র প্রত্যাহারেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের কথা থাকলেও তা বাতিল করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা রাহুল গান্ধী ও বিরোধী দলের নেতা নরেন্দ্র মোদি।


এছাড়া ভারতে অবস্থানরত মার্কিন কূটনীতিকদের ক্ষেত্রে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।  
ভারতের এই তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, তারা দেবযানীর বিষয়টি  পর্যালোচনা করে দেখছেন।
আর সুজাতা সিংও দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ন্যান্সি পাওয়েলকে জানিয়ে দিয়েছেন যে, ওয়াশিংটন নিজেদের অবস্থান থেকে না সরলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।    

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.