আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আল্লাহের মানবিক গুনাবলী গিগা পোষ্ট

সিরাতুল মুস্তাকিম চাই, সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন, তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি আল্লাহের গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে **** দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়েগেছে

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আল্লাহের মানবিক গুনাবলী আল্লাহের নামগুলো নাকি মানুষের কল্পনার সৃষ্টি এবং নাম গুলো নাকি মানবিক বিভিন্ন গুন। অনেক সো-কল্ড প্রগতি বাদীর লেখাতে এই রূপ পড়েছি, সত্যি কথা বলতে কি অনেক সময় কনফিউজড হয়ে গেছি আর প্রতিবাদের ভাষাও পাইনি। আমারা মুসলিমরা কত অজ্ঞ হাড়ে হাড়ে টের পাই, যে ধর্মটাকে আমরা অনেক সময় অন্ধের মত ভালোবাসি সেই ধর্ম সম্পর্কেই আমরা নুন্যতম জ্ঞান রাখিনা। আল্লাহের সিফাত গুলোযে মানবিক না তা আগেই জানতাম, কিন্তু সবগুলো নাম আলাদা আলাদা করে স্টাডি করা ছিলোনা।

আপনারা অনেকেই হয়ত আমার মতই। তাই ভাবলাম সবার জন্য আল্লাহের সিফাত গুলো নিয়েই লিখি। হাদিসে আছে এই নাম গুলো আত্নস্থ হলে নাকি জান্নাত পাওয়া যাবে। দেখুন না চেষ্টা করে, এই ক্ষুদ্র এ্যফোর্টেই খুশি হোয়ে আল্লাহ যদি জান্নাত দিয়ে দেন, সমস্যা কি!!! হাদিসেই আছে আল্লাহের ৯৯ নামের কথা, আবার অনেকেই বলেছেন হাদিসটার ভিত্তি নাকি দূর্বল। আবার হাদিসেই আছে আল্লাহের অপ্রকাশিত অনেক নামের কথা, অর্থাৎ যে নাম গুলো আল্লাহ মানুষের কাছে প্রকাশ করেন নাই তার কথা।

তাওরাত আর যবুরে নাকি আরো অনেক অনেক বেশী নামের অস্তিত্ত ছিল। আর কুরয়ানে নাম আকারে বা গুন আকারে এই ৯৯টার সব গুলো নাই। কোন কোন টা আছে ক্রিয়ার আকারে। যাই হোক আমি আরবী ভাষা বা গ্রামার জানি না, আমি মুহাদ্দিসও নই। তাই এই গুলার সমালোচনার যোগ্যতা আমার নাই।

আমি নাম গুলো এক জন ধর্মিক মুসলমান হিসাবে যতটুকু বুঝলাম, ততটুকুই লিখলাম, আসলে প্রতিটা নাম নিয়ে হয়ত রচনা লেখা যাবে কিন্তু অত জ্ঞান আমার নাই। ক্ষমা সুন্দর মনভাব কাম্য। তবে ভুল দেখিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ থাকবো। সূরা আল বাকারা, আয়াত ১৩৮(২:১৩৮) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ স্বিবগাতাল্লাহি ওয়ামান আহসানু মিনাল্লাহি স্বিবগাতান ওয়ানাহনু লাহু আবিদুন। কাছাকাছি অর্থঃ আমরা আল্লাহর রং গ্রহণ করেছি।

আল্লাহর রং এর চাইতে উত্তম রং আর কার হতে পারে? আমরা তাঁরই এবাদত করি। এই আয়াতে আল্লাহ শব্দটি ব্যাবহারিত হয়েছে। ১) ইয়া আল্লাহু (এই নামের অর্থ কেউ জানে কিনা তা আমি জানি না, বলা হয় এটা আল্লাহের সত্তাগত নাম) সূরা আল হাশর, আয়াত ২২,২৩,২৪ (৫৯:২২,২৩,২৪) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ হুয়াল্লাহুল্লাযি লাইলাহা ইল্লাহুয়া, আলিমুল গাইবি ওয়াশশাহাদাতি হুয়াররাহমানুররাহিম। হুয়াল্লাহুল্লাযি লাইলাহা ইল্লাহুয়া আল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মুউমিনুল মুহাইমিনুল আযিযুল জাব্বারুল মুতাকাব্বিরু সুবহানাল্লহি আমমা ইয়ুশরিকুন। হুয়াল্লাহুল খ্বালিক্বুল বারিউল মুসাওউইরু, লাহুল আসমাউল হুসনা, ইউসাব্বিহু লাহুমাফিসসামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি ওয়াহুয়াল আযিযুল হাকিম।

কাছাকাছি অর্থঃ তিনিই আল্লাহ , তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যকে জানেন তিনি পরম দয়ালু, অসীম দাতা। তিনিই আল্লাহ তিনি ব্যতিত কোন উপাস্য নেই। তিনিই একমাত্র মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তাদাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রান্ত, প্রতাপান্বিত, মাহাত্নশীল। তারা যাকে অংশীদার করে আল্লাহ তা থেকে পবিত্র। তিনিই আল্লাহ স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই।

নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়। এই আয়াত গুলো থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ১৪টি সিফাতঃ ২) ইয়া রাহমানু (হে পরম করুনাময়) কিছু কথাঃ আপনি আপনার তুলনায় অনেক নিম্ন ক্ষমতার কাউকে করুনা করতে পারেন। তা এক জন হতে পারে দুইজন, ২০০জন বা দুই লক্ষ জন কিন্তু পরম করুনাময় আল্লাহ তার সৃষ্টির সকল কিছুকে করুনা করে থাকেন, এই মহাবিশ্বের কোন কিছুই তার করুনার বাইরে না। আবার ইসলামের দৃষ্টিতে আপনি যখন কাউকে সম্পদ দিয়ে করুনা করছেন, তখন আসলে আপনি আল্লাহকে ঋন দিচ্ছেন, উত্তম ঋন, এই ঋনের সকল কিছুতো আপনি ফিরত পাবেনই, বরং তারচেয়ে অনেক গুন বেশি আপনি আখিরাতে পাবেন।

তাই আপনি যখন কাউকে করুনা করছেন আসলে আপনি তা আপনার নিজের জন্যই করছেন। কারন এরচেয়ে অনেক গুন বেশি ফেরতের আশায় করছেন। তাহলে কর্মটা আর এবসোলুট হইলনা কিন্তু!!! আবার কাউকে যখন আপনি অবস্তুগত কোন করুনা করছেন, তখনো আপনি নিশ্চিত যে আল্লাহ এর বিনিময়ে আপনাকে করুনা করবেন, তাই এই কর্মটাও কিন্তু এবসোলুট হইল না!!! তাই মানুষ রহমান হয় না, রহমানের দাশ হইতে পারে, তাঁর দাশ হয়ে, তাঁর বলে দেয়া অনুসারে তাঁর অন্য সৃষ্টি কে আপেক্ষিক করুনা করতে পারে, এর বেশি কিছুতো না!! ৩) ইয়া রাহিমু (হে পরম দয়ালু) কিছু কথাঃ পরমকরুনাময় সম্পর্কে বুঝলে পরমদয়ালু সম্পর্কে বলার আর কিছু থাকে না। নবীজী সাঃ বলেছেন, “যে অন্যকে দয়া করেনা,সে আল্লাহের দয়া হতে বঞ্চিত। ” অর্থাৎ আপনি যখন কাউকে দয়া করবেন তা আল্লাহের দয়া পাবার আশায়ই করবেন।

আসলে ইসলাম হইল, হিজ হিজ হুজ হুজ ধর্ম, এর মূল concept খুবই স্বার্থপর। কারন আপনার নিজের ultimate targate হইল বেহেস্ত আর বেহেস্তের নিয়ামত, আর কিছু না। আপনার চারপাশের কেউ কেয়ামতের দিন আপনার দিকে তাকাবে পর্যন্ত না, না আপনার বাবা, না আপনার মা। its only you, you all alone । আপনি বেহেস্তের প্রতি এমন লোভী হবেন যে দুনিয়ার কোন কিছুর প্রতি আর লোভ করবেন না, তাই আপনার লোভ দ্বারা দুনিয়ার কেউ বঞ্চিতও হবে না।

as simple as that. ৪) ইয়া মালিকু (হে প্রকৃত বাদশাহ) কিছু কথাঃ এই বাদশাহ হলেন সেই যিনি নিজের গুন দ্বারাই সব কিছু থেকে স্বাধিন, যে কোন কিছু থেকে অমুখাপেক্ষি, সবকিছুর অস্তিত্তই তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল, তাঁর রাজ্যের সমস্ত কিছুই তাঁর। আপনারা এই রকম কোন বাদশাহকে চিনেন নাকি??? আল্লাহ ছাড়া। ৫) ইয়া কুদ্দুসু (হে পবিত্র) কিছু কথাঃ প্রকৃত পক্ষে, আল্লাহের পবিত্রতার ধারনা মানুষের কল্পনার শক্তি নাই। তিনি পবিত্র এবং সকল অপবিত্রতার উর্ধে। কোন মানুষ আছে নাকি যার দ্বারা এই রকম হওয়া সম্ভব?? আপনি যত পরিস্কারই হন না কেন, you are full of shit. আপনি বাহ্যিক ভাবে যত পরিস্কারি হন না কেন, your inside stinks. বিশ্বাস না হলে যে কোন সার্জেন কে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।

৬) ইয়া সালামু (হে শান্তিদাতা) কিছু কথাঃ শান্তিদাতার অর্থ হল, এমন যে সকল প্রকার খুত ও অক্ষমতার উর্ধে, যার গুন গুলোতে কোন অভাব নাই, যার যে কোন কাজ খারাপের সংস্পর্শতার বাইরে। তাই সে এমন যে, তাঁকে ছাড়া শান্তি ও সৌহার্দের অস্তিত্ত্ব নাই। কি বুঝলেন? যার ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে বা যার কাজে খারাপের সংস্পর্শতা আছে সে সত্যিকারের শান্তিদাতা হতে পারে না!! ৭) ইয়া মুউমিনু (হে নিরাপত্তাদাতা) কিছু কথাঃ যে আপনার সকল ভয়কে সরিয়ে নিতে পারে, সেই আপনার নিরাপত্তাদাতা। যতক্ষন আপনার সকল ভয় জয় না হয় ততক্ষন আপনি নিরাপদ বোধ করতে পারবেন না। আর আপনার জীবন হারানোর সম্ভাবনা যতক্ষন থাকে ততক্ষন আপনার ভয়ও বিদ্যামান থাকবে!!! আর এই জীবনের মালিকতো এক মাত্র আল্লাহ।

তাই তাঁর চেয়ে বড় বা এবসোলুট নিরাপত্তাদাতা কি কেউ আছেন??? ৮) ইয়া মুহাইমিনু (হে রক্ষাকারী) কিছু কথাঃ যার জ্ঞানের বাইরে এই মহাবিশ্বের কিছুই নাই, তা হোক যত ক্ষুদ্র বা বিশাল, যার হুকুমের বাইরে কোন কিছুই নাই, যিনি চরম নিরাপত্তাদাতা তিনিই সবচেয়ে ক্ষমতাবান রক্ষাকারি। উনি রক্ষাকরার ইচ্ছা করলে সাধহরন কয়েক জন যুবকও কয়েক শত বছর এক গুহায় ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়, আর তিনি রক্ষা না করলে প্রতাপশালী রাজাও সমুদ্রে ডুবে মরে!!! তিনি রক্ষা করার ইচ্ছা না করলে ইমানদারের ঘরেও নাস্তিকের জন্ম হয় আবার তিনি রক্ষা করতে চাইলে মূর্তি পূজকের ঘরেও নবীরা জন্মান। ৯) ইয়া আযিযু (হে মহাপ্রভাবশালী) কিছু কথাঃ সমস্ত প্রশংসা যার, যিনি কখন কোন ভুল করেন নাই, কারো কাছে কোন কারনে ইতস্তত হন নাই, যার কোন ক্ষতি করার ক্ষমতা কারো নাই, যার অনুকরন করা সম্ভব না, যাকে পরাজিত করা সম্ভব না, যার ক্ষমতার ধারের কাছেও কেউ কোন দিন যেতে পারবে না তিনিই আলআযিয। ১০) ইয়া জাব্বারু (হে মহাক্ষমতাশালী) কিছু কথাঃ তিনি সেই যে, না খালি সকল নষ্ট হয়ে যাওয়া জিনিস ঠিক করেন বরং সেই জিনিসের আরো উন্নতি ঘটান। সংক্ষেপে বললে তিনি সকল অসংগতি ঠিক করেন।

অন্য আরেক ভাবে বলাহয় যে তিনি সেই যার ইচ্ছার বিপরীত কিছুই হয় না, কেউ তা পছন্দ করুক বা অপছন্দ। ১১) ইয়া মুতাকাব্বিরু (হে গৌরবান্বিত) কিছু কথাঃ আলমুতাকাব্বির তিনিই যিনি সকল প্রকার মহানতার অধিকারি, যিনি তাঁর সৃষ্ট কোন কিছুর গুনাবলী ধারন করেন না, তাঁর সৃষ্ট কোন কিছুই তাঁর ক্ষতি করতে পারেনা। যার মহানতা আর অহংকার সর্বচ্চ। ১২) ইয়া খালিকু (হে সৃষ্টিকর্তা) কিছু কথাঃ তিনিই যিনি আমাদের জানা অজানা সকল কিছু সৃষ্টি করেছেন। যিনি সব কিছু পার্ফেক্টলি সৃষ্টি করেন, অন্য কারো বুদ্ধি ছাড়া অন্য কারো জ্ঞান ছাড়া, তিনি কোন সৃষ্টিতে এমন বিকৃতি আনেন যা না ঘটা পর্যন্ত কোন দ্বিতীয় কেউ কল্পনাও করতে পারে না।

১৩) ইয়া বারিউ (হে উদ্ভাবনকর্তা) কিছু কথাঃ যিনি শূন্য থেকে কিছু সৃষ্টি করেন বা কিছুনা থেকে কিছু সৃষ্টি করেন। যিনি এমন কিছু সৃষ্টি করেন যে জিনিসের মত কিছু আগে ছিল না। ১৪) ইয়া মুসাউইরু (হে আকৃতিদানকারী) কিছু কথাঃ মুসাউইরু তিনি যিনি সবছেয়ে বড় স্টাইলিশ। তাঁর চেয়ে স্টাইলিশ কেউ নাই। তাঁর প্রতিটা সৃষ্টির ভিন্ন ভিন্ন আকৃতিদেন তিনি।

তাঁর প্রতিটি সৃষ্টিই ইউনিক !! তাঁর ক্ষমতা সম্পর্কে একবার ভাবুন। ?? এমনকি মনোজাইগোটিক টুইনদেরকেও সহজেই আলাদা করে চেনা যায় আর সুক্ষ পার্থক্যতো তাদের অনেকই থাকে, অথচ তারা একি জাইগোট থেকেই সৃষ্ট। ১৫) ইয়া হাকিমু (হে প্রজ্ঞার অধিকারী) কিছু কথাঃ তিনিই হাকিম যার কাছে সকল কিছুর জ্ঞান আছে। প্রকৃতপক্ষে তাঁর প্রজ্ঞার সঙ্গা তিনি ব্যাতিত আর কেউ ভালো করে দিতে পারবে না!!! ডাক্টার বা বায়োক্যামিস্ট্রির কেউ কি আছেন, একবার ভাবেন মানুষকে যদি আমরা কৃত্রিম ভাবে বানাতে চাই, কি পরিমান প্রজ্ঞা প্রয়োজন, কত মানুষের বছরের পর বছরের কাজ, এক করলে একটা মানুষ তৈরি করা যাবে? বা আদৌকি তা সম্ভব?? বোটানি বা জুলজির কেউ কি আছেন পারবেন কি একটা নতুন ইকোসিস্টেম তৈরি করতে?? বা পুরনো কোন ডিয়ারেঞ্জড ইকোসিস্টেমকে সারিয়ে তুলতে?? বা অ্যাসট্রোফিজিসিশটরা ভাবেন কি পরিমান প্রজ্ঞা থাকলে গোল্ডিস লক জোনে পৃথিবীর অবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব?? পৃথিবীর কক্ষপথটা আর এক কিলো এদিক সেদিক হলে কিই বা এমন হত?? সূরা আল হাদীদ, আয়াত ১,২,৩ (৫৭:১,২,৩) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ সাব্বাহালিল্লাহি মাফিসসামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি ওয়াহুয়াল আযিযুল হাকিম। লাহু মুলকুসসামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি ইউহই ওয়া ইউমিইতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদির ।

হুয়াল আউয়ালু ওয়াল আখ্বিরু ওয়াযযোহিরু ওয়াল বাতিনু ওয়াহুয়া বিকুল্লি শাইইন আলিম। কাছাকাছি অর্থঃ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবাই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি শক্তিধর; প্রজ্ঞাময়। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান।

তিনি সবকিছু করতে সক্ষম। তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। এই আয়াত গুলো থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ৮টি সিফাতঃ ১৬) ইয়া মুহঈ (হে জীবনদাতা) কিছু কথাঃ বলার কিছুই নাই। কিন্তু মানুষ জীবনদাতা হতে পারে কি?? প্রতি মুহুর্তে আপনার ভিতর অসংখ্য কোষ জন্ম নিচ্ছে, কোন কনট্রোল আছে কি আপনার?? জীবন কি আপনি তা জানেন কি ?? ১৭) ইয়া মুমিতু (হে মৃত্যুদাতা) কিছু কথাঃ এখানেও বলার কিছু নাই!!! প্রতি মূহর্তে আপনার শরিরের ভিতর অসংখ্য কোষ মরে যাচ্ছে, কোন কনট্রোল আছে কি আপনার?? আপনার কি ক্ষমতা আছে আপনাকে মারবার বা অন্য কাউকে? আপনি জাস্ট একটা উপায় হতে পারেন এই আর কি ?? ১৮) ইয়া কাদিরু (হে সামর্থবান) কিছু কথাঃ যিনি তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দ্বারা যা প্রয়োজন তাই করতে পারেন, এরচেয়ে বেশীও করেন না বা এরচেয়ে কমও করেন না তিনি কাদির। সামর্থবান কথাটা উচ্চারন করলেই কেমন যেন সামর্থবান পুরুষ কথাটা চলে আসে, যাই হোক সামর্থবান পুরুষদের কেই জিজ্ঞাস করি, তিনি না চাইলে আপনার স্ত্রীকে সন্তান দিতে পারবেন?? আর তিনি চাইলে কোন ভাবে সন্তান হওয়া থেকে বাধা দিতে পারবেন???? ১৯) ইয়া আউয়ালু (হে সর্বপ্রথম) কিছু কথাঃ আউয়াল তিনিই যার পূর্বে কোন কিছুর অস্তিত্ত ছিল না।

বা সকল কিছু অস্তিত্তে আসার পূর্বেই তিনি ছিলেন। একবার এক বেদুইন রাসূল সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন, “সৃষ্টি করার আগে আল্লাহ কোথায় ছিলেন?”উত্তরে রাসূল সাঃ বললেন, “তিনি ছিলেন,আর তাঁর সাথে কিছুই ছিল না। ” বেদুইন আবার জিজ্ঞাসা করলেন, “এখনকার অবস্থা কি?” রাসূল সাঃ উত্তরে বললেন, “তিনি যেমন ছিলেন তেমনি আছেন। ” ২০) ইয়া আখিরু (হে সর্বশেষ) কিছু কথাঃ সৃষ্টির কিছুই যখন অস্তিত্তে থাকবে না, তখনো তিনি থাকবেন। ২১) ইয়া যাহিরু (হে প্রকাশমান) ২২) ইয়া বাতিনু (হে অপ্রকাশমান) কিছু কথাঃ একভাবে বলাহয় যে তিনি যাহির কারন তাঁর কাছে যাকিছু প্রকাশমান তার জ্ঞান বিদ্যমান, আর তিনিই বাতিন কারন তাঁর কাছে যাকিছু অপ্রকাশমান তার জ্ঞানও বিদ্যমান।

আরেক ভাবে বলতে গেলে, তিনি যাহির যথেষ্টতার দ্বারা, তিনি বাতিন বস্তুনিষ্ঠতার দ্বারা, তিনি যাহির তাঁর উদারতার কারনে, তিনি বাতিন তাঁর করুনার কারনে। প্রকাশ্যেই সব কিছু তাঁর নিয়ন্ত্রনাধিন আবার তিনি সব কিছুর গোপন খবর জানেন। তিনি প্রকাশ্য তাঁর অস্তিত্তের অকট্য প্রমানের কারনে, তিনি অপ্রকাশমান কারন তাঁর আকৃতি আমরা দেখতে পাই না। সকল সৃষ্টির আরালে আছেন তিনি তাঁর জ্যোতি দ্বারা, তিনি আরালে আছেন তাঁর উপস্থিতির তিব্রতার কারনে। ২৩) ইয়া আলিমু (হে সর্বজ্ঞ) কিছু কথাঃ যিনি সব কিছু জানেন, যিনি সব কিছুর সব কিছু জানেন।

তাঁর জ্ঞানের বাইরে কিছুই নাই বা থাকতে পারে না। সূরা আল বাকারা, আয়াত ২৫৫ (২:২৫৫)/আয়াতুল কুরশী কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ আল্লাহু লাইলাহা ইল্লাহুয়াল হাইয়ুল ক্বাইইয়ুম, লাতাখ্বুজুহু সিনাতাহুম ওয়ালা নায়ুম, লাহু মাফিসসামাওয়াতি ওয়ামাফিল আরদ্বি, মান যাল্লাযি ইয়াশফায়ু ইন্দাহু ইল্লা বিইযনিহি, ইয়ালামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামাখ্বালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতুনা বিশাইইম মিনইলমিহি, ইল্লাবিমাশাআ, ওয়াসিয়াকুরসিহুসসামাওয়াতি ওয়ালারদ্বা, ওয়ালা ইয়াইয়ুদ্দুহু হিফযুহুমা, ওয়াহুয়াল আলিয়ুল আযিম। কাছাকাছি অর্থঃ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর।

কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।

এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের কিছু সিফাতঃ ২৪) ইয়া হাইয়ু (হে চিরঞ্জীব) ২৫) ইয়া কাইয়ুমু (হে চিরস্থায়ী) কিছু কথাঃ কিছুই বলার নাই, না বুঝারও কিছু নাই। খুব সম্ভবত আল হাইয়ু আর আল কাইউমু আল্লাহের মহানতম দুইটি সিফাত। ২৬) ইয়া আলিয়ু (হে অত্যুচ্চ) কিছু কথাঃ তাঁর সত্তা এতটাই উচ্চ যে তাঁর পূর্নাংগ সত্তাকে উপলব্ধি করা কোন মানুষের দ্বারা সম্ভব না। তাঁর সত্তাকে দেখা কোন মানুষের দ্বারা সম্ভব না। ২৭) ইয়া আযিমু (হে অতিমাহান) কিছু কথাঃ কিছু বলার নাই, তাঁর চেয়ে মহান কি কেউ আছে? আপনার জানা? সূরা আলে ইমরান,আয়াত ২৬ (৩:২৬) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ ক্বুলিল্লাহুমমা মালিকালমুলকি তুয়তিলমুলকা মানতাশায়ু ওয়াতানযিউল মুলকা মিম মানতাশায়ু ওয়াতুইযযু মানতাশাউ ওয়াতুযিল্লু মানতাশায়ু বিইয়াদিকাল খ্বাইরু ইন্নাকা আলা কুল্লিশাইইন ক্বাদির।

কাছাকাছি অর্থঃ বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ৩টি সিফাতঃ ২৮) ইয়া মালিকালমুলকি (হে সার্বভৌমত্তের মালিক) কিছু কথাঃ খেয়াল করলে দেখবেন যে, দুনিয়ার কোন রাজাই প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা বা সার্বভৌমত্তের মালিক নয়, তারা সকলেই কোন না কোন শক্তির উপর নির্ভর করে, কেউ তাদের সেনাবাহিনি, কেউ তাদের অর্থ-সম্পদ, কেউ তার মন্ত্রীদের উপর, কেউবা সরাসরি জনগনের উপর, আবার তাদের সার্বভৌমত্ত স্থায়ীও হয় না, প্রতি নিয়তই ছোট শক্তি বড় শক্তির কাছে পরাজিত হয়।

আবার আজ যে বড় শক্তি কাল সে ছোট শক্তি। কিন্তু সকল রাজাদের রাজা আল্লাহ প্রকৃত সার্বভৌমত্তের মালিক। তাঁর ক্ষমতা খর্ব করার মত কেউ নাই। । তাই তিনিই প্রকৃত সার্বভৌমত্তের মালিক।

তিনিই সকল ক্ষমতার উৎস। ২৯) ইয়া মুইযযু ( হে সম্মানদাতা) ৩০) ইয়া মুযিল্লু (হে অপমানকারী) কিছু কথাঃ আসলে কে কখন কিভাবে সম্মানিত হবেন আর অপমানিত হবেন তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আল্লাহের ইচ্ছার বাইরে কেউ প্রকৃত সম্মান প্রাপ্ত হতে পারেন না। আর আল্লহ যাকে অপমানিত করেন, তাকে কেউই সম্মান ফিরিয়ে দিতে পারে না, আল্লাহ ছাড়া। আল্লাহের কাছে যিনি সম্মানিত তিনি হয়ত জানেন তার সম্মানের কথা, অন্যের এই ব্যাপারে জ্ঞান নাই থাকতে পারে।

একি কথা আল্লহের কাছে যে অপমানিত তার বেলায়ও প্রযোজ্য। কিন্তু দুনিয়াতে যে কেউ আপনাকে সম্মানদেখালেই আপনি নিশ্চত হতে পারবেন না যে সে আপনাকে সম্মান দেখাল। একি কথা উলটা ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সূরা সাদ,আয়াত ৬৫,৬৬(৩৮:৬৫,৬৬) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ ক্বুল ইন্নামা আনা মুনযিরুন ওয়ামামিন ইলাহিন ইল্লাল্লাহুল ওয়াহিদুল কাহহার। রাব্বুসসামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়ামাবাইনাহুমাল আযিযুল গাফফারু।

কাছাকাছি অর্থঃ বলুন, আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং এক পরাক্রমশালী আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তিনি আসমান-যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সব কিছুর পালনকর্তা, পরাক্রমশালী, মার্জনাকারী। এই আয়াত গুলো থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ৩টি সিফাতঃ ৩১) ইয়া ওয়াহিদু (হে এক-অদ্বিতীয়) কিছু কথাঃ কিছু বলার নাই। বিশাল তিনি, মহান তিনি, অসীম তিনি Al-Wahid cannot be counted. He Alone is the source of all knowledge; the Only One Who reveals what is hidden. His existence has neither duration nor a limit, nor can anyone carry out a decision against Him, nor can His Essence ever suffer any decrease or increase whatever ৩২) ইয়া কাহহারু (হে শাস্তিদাতা) কিছু কথাঃ কাহহার হচ্ছেন তিনি, যিনি যখন শাস্তি দেন বা প্রতিশোধ নেন তখন কেউই ক্ষমতা রাখেনা তা প্রতিরোধ করবার। ঠিক যতটুকু অন্যায় ততটুকু শাস্তি।

৩ জনকে কেউ খুন করলে ঐ খুনিকে তিনবার মৃত্যুরস্বাধ কেউ কি দিতে পারবেন?? কাহহারু পারবেন। ৩৩) ইয়া গাফফারু (হে ক্ষমাকারী) কিছু কথাঃ ধরুন আপনি অনেক ক্ষমতাশালী আপনার প্রতি অন্যায় করেছে এমন কয়জন কে ক্ষমা কবেন আপনি? আপনি হয়ত, আপনার প্রতি করা, সবার অন্যায়ের হিসাবই করতে পারবেন না!! গাফফারু তিনি যিনি সকল সৃষ্টির সকল অপরাধ ক্ষমাকরার ক্ষমতা রাখেন। সূরা আলে ইমরান,আয়াত ৮,৯ (৩:৮,৯) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ রাব্বানা লা তুযিগ ক্বুলুয় বানা বায়দা ইয হাদাইতানা ওয়াহাবলানা মিল্লাদুনকারাহমাতান ইন্নাকা আন্তাল ওয়াহহাব। রাব্বানা ইন্নাকা জামিউন নাসি লিইয়াওমিল লারাইবাফিইহি ইন্নাল্লাহা লা ইউখ্বলিফুলমিইয়াদ। কাছাকাছি অর্থঃ হে আমাদের পালনকর্তা! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্যলংঘনে প্রবৃত্ত করোনা এবং তোমার নিকট থেকে আমাদিগকে অনুগ্রহ দান কর।

তুমিই সব কিছুর দাতা। হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি মানুষকে একদিন অবশ্যই একত্রিত করবেঃ এতে কোনই সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর ওয়াদার অন্যথা করেন না। এই আয়াত গুলো থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ২টি সিফাতঃ ৩৪) ইয়া ওয়হহাবু (হে মাহান দাতা) কিছু কথাঃ তিনি আপনাকে আপনার যা চাহিদা তাই দিতে পারেন, তিনি যাইচ্ছা তাই দিতে পারেন, তিনি এই দানের কোন বিনিময় গ্রহন করেন না বা করবেন না বা করেন নি। ৩৫) ইয়া জামিউ (হে মহান একত্রকারী) কিছু কথাঃ তিনি শেষ বিচারের দিনে আমাদের সকল কে একত্রিত করবেন, সকল সৃষ্টিকে তিনি একত্রিত করবেন।

সূরা আযযারিয়াত,আয়াত ৫৮(৫১:৫৮) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ ইন্নাল্লাহা হুয়াররাযযাক্বু যুল ক্বুওয়াতিল মাতিনু। কাছাকাছি অর্থঃ আল্লাহ তাআলাই তো জীবিকাদাতা শক্তির আধার, পরাক্রান্ত। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ২টি সিফাতঃ ৩৬) ইয়া রাযযাক্বু (হে রিযিকদাতা) কিছু কথাঃ আপনার বেচে থাকবার জন্য যা প্রয়োজন তাই হচ্ছে রিযিক। এর মধ্য খাদ্য, বাতাস, গাছপালা, পশু পাখি, ছত্রাক, এমিবা, ব্যাক্টিরিয়া............ইত্যাদি সবই আপনি যোগ করতে পারেন। যিনি এই রিজিক দান করেন তিনিই রিযিক দাতা।

৩৭) ইয়া মাতিনু (হে অটল) কিছু কথাঃ তাঁর যা ইচ্ছা তিনি তাই করেন, কেউ তা পরিবর্তন করতে পারে না। সূরা সাবা,আয়াত ২৬(৩৪:২৬) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ ক্বুল ইয়াজমায়ু বাইনানা রাব্বুনা স্বুমমা ইয়াফতাহু বাইনানা বিলহাক্বক্বি ওয়াহুয়াল ফাত্তাহুল আলিম। কাছাকাছি অর্থঃ বলুন, আমাদের পালনকর্তা আমাদেরকে সমবেত করবেন, অতঃপর তিনি আমাদের মধ্যে সঠিকভাবে ফয়সালা করবেন। তিনি ফয়সালাকারী, সর্বজ্ঞ। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ১টি সিফাতঃ ৩৮) ইয়া ফাত্তাহু (হে বিজয়দানকারী) কিছু কথাঃ তিনি অমিমাংসিত বিষয় গুলোর মিমাংসা করেন, কঠিন বিষয় গুলোকে সরল করে দেন, তিনি খুলেন যা কিছু বন্ধ আছে, তাঁর কাছে সব কিছুর চাবি আছে, তিনি যেকারো জন্য বন্ধ পথ আপনার জন্য খুলে দিতে পারেন, যার ফলে আপনি বিজয়ী হবেন।

সূরা আল বাকারা, আয়াত ২৪৫ (২:২৪৫) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ মান যাল্লাযি ইউক্বরিদ্বুল্লাহা ক্বারদ্বান হাসানান ফাইউদ্বায়িফাহু লাহু আদ্বয়াফান কাস্বাইরিতান ওয়াল্লাহু ইক্ববিদ্বু ওয়া ইয়াবসুতু ওয়াইলাইহি তুরজিয়ুওন। কাছাকাছি অর্থঃ এমন কে আছে যে, আল্লাহকে করজ দেবে, উত্তম করজ; অতঃপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিবেন। আল্লাহই সংকোচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এবং তাঁরই নিকট তোমরা সবাই ফিরে যাবে। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ২টি সিফাতঃ ৩৯) ইয়া ক্বাবিদ্বু (হে সংকোচনকারী) কিছু কথাঃ তিনিই যিনি আমাদের আত্নাকে আমাদের শরির থেকে, তাঁর অধিনে নিয়ে নেন। ৪০) ইয়া বাসিতু (হে প্রশস্ততাকারী) কিছু কথাঃ তিনিই যিনি আমাদের আত্নাকে শান্তিদেন খুশি আর আনন্দের মাধ্যমে।

সূরা আল মুজাদালাহ,আয়াত ১১(৫৮:১১) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ ইয়া আইয়ুহাল্লাযিনা আমানু ইযাক্বিইলা লাকুম তাফাসসাহুও ফিলমাজালিসি ফাফসাহুও ইয়াফসাহিল্লাহু লাকুম ওয়াইযা ক্বিইলানশুযুও ফানশুযুও ইয়া রফাইল্লাহুল্লাযিইনা আমানু মিনকুম ওয়াল্লাযিইনায়ুতুলইলমা দারাজাতিন ওয়াল্লাহু বিমা তায়মালুনা খ্বাবিইর। কাছাকাছি অর্থঃ মুমিনগণ, যখন তোমাদেরকে বলা হয়ঃ মজলিসে স্থান প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা স্থান প্রশস্ত করে দিও। আল্লাহর জন্যে তোমাদের জন্য প্রশস্ত করে দিবেন। যখন বলা হয়ঃ উঠে যাও, তখন উঠে যেয়ো। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন।

আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা কর। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ২টি সিফাতঃ ৪১) ইয়া রাফিউ (হে সমুন্নতকারী) কিছু কথাঃ তিনিই যিনি সকল বস্তুগত জিনিস বা অবস্তুগত জিনিস উপরে তুলতে পারেন, তিনি যেমন কারো মানের উন্নতি করেন তেমনি তাঁর ইচ্ছাতেই একটা পাখি আকাশে উড়ে বেরায়। ৪২) ইয়া খ্বাবিরু (হে সর্বাজ্ঞ) কিছু কথাঃ সকল কিছুর সুক্ষ গুপ্ত জ্ঞান তাঁর কাছে আছে। তিনি সকল কিছুর গোপন ভেদ জানেন। তিনি জানেন কিভাবে সমস্যার সৃষ্টি হয় আর তিনি জানেন কিভাবে তাঁর সমাধান করা যায়।

সূরা আন নিসা,আয়াত ৫৮(৪:৫৮) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ ইন্নাল্লাহা ইয়ামুরুকুম আন তুয়াদ্দুল আমানাতি ইলা আহলিহা ওয়াইযা হাকামাতুম বাইনাননাসি আনতাহকুমুবিল আদলি ইন্নাল্লাহা নিয়িমমাইয়াইযুকুমবিহি ইন্নাল্লাহা কানা সামিইয়াম বাসিইর। কাছাকাছি অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের নিকট পৌছে দাও। আর যখন তোমরা মানুষের কোন বিচার-মীমাংসা করতে আরম্ভ কর, তখন মীমাংসা কর ন্যায় ভিত্তিক। আল্লাহ তোমাদিগকে সদুপদেশ দান করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ শ্রবণকারী, দর্শনকারী।

এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ৩টি সিফাতঃ ৪৩) ইয়া হাকামু (হে হুকুমদাতা) কিছু কথাঃ তিনিই যিনি হুকুমদেন, যে হুকুমকে কেউ প্রশ্ন বিদ্ধকরতে পারে না। যে হুকুমকে কেউ অমান্য করতে পারে না। তিনি সেই যার প্রতিজ্ঞায় কোন সন্দেহ নাই, তিনি সেই যার কাজে কোন ভুল নাই, যার হুকুমে আত্নারা তাঁর অনুগত আর অধিনস্ত। তিনি সত্যকে মিথ্যা হতে আলাদা করে দেন। ৪৪) ইয়া সামিয়ু (হে সর্বশ্রোতা) কিছু কথাঃ যিনি তাঁর সকল সৃষ্টিকে শুনেন এবং তার উত্তর দেন।

৪৫) ইয়া বাসিরু (হে সর্বদ্রষ্টা) কিছু কথাঃ তিনি সব কিছু দেখেন। মাইক্রস্কোপিক অথবা ম্যেক্রস্কোপিক !! ইলেকট্রন বা প্রটন !! সূরা আল আনআম,আয়াত ১১৫(৬:১১৫) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ ওয়াতামমাত কালিমাতু রাব্বিকা সিদক্বিন ওয়া আদলাল লা মুবাদদিলা লিকালিমাতিহি ওয়াহুয়াসসামিউল আলিম। কাছাকাছি অর্থঃ আপনার প্রতিপালকের বাক্য পূর্ণ সত্য ও সুষম। তাঁর বাক্যের কোন পরিবর্তনকারী নেই। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।

এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ১টি সিফাতঃ ৪৬) ইয়া আদলু (হে ন্যায় বিচারক) কিছু কথাঃ তিনি ছাড়া আর কেউ প্রকৃত ন্যায় বিচার করতে পারেন না। দুনিয়ার বিচারকরা যা করতে পারেন তা হচ্ছে আপেক্ষিক ন্যায় বিচার। আর বিচারের নামে আজকাল কি কি হয় তা তো সবাই দেখছেন!!! সূরা আশশূরা,আয়াত ১৯(৪২:১৯) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ আল্লাহু লাতিফুম বিইবাদিহি ইয়ারযুক্বু মানইয়াশাউ ওয়াহুয়াল ক্বাউইয়ুল আযিয। কাছাকাছি অর্থঃ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়ালু। তিনি যাকে ইচ্ছা, রিযিক দান করেন।

তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ২টি সিফাতঃ ৪৭) ইয়া লাতিফু (হে সুক্ষদর্শী) কিছু কথাঃ তিনি সবচেয়ে জ্ঞানী, সবচেয়ে দয়ালু, সবচেয়ে উদার, তাই তিনি তাঁর সৃষ্টির প্রতি সবচেয়ে স্নেহ শীল। ৪৮) ইয়া ক্বাবিয়ু (হে শক্তির আধার) আমি যা বুঝিঃ যার শক্তি আপরিসিম। যার শক্তির কাছে তাঁর শত্রুদের শক্তি ও ক্ষমতা কিছুই না বা যার কোন তুলনাই হয় না। মজার ব্যাপার হচ্ছে তাঁর শত্রুও শক্তির জন্য তাঁরই মুখাপেক্ষি !!!! সূরা বনী ইসরাঈল,আয়াত ৪৪(১৭:৪৪) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ তুসাব্বিহু লাহুসসামাওয়াতুসসাবয়ু ওয়াল আরদ্বু ওয়ামান ফিহিননা ওয়াইমমান শাইইন ইল্লা ইউসাববিহু বিহামদিহি ওয়ালাকিললা তাফক্বাহুনা তাসবিহাহুম ইন্নাহু কানা হালিমান গাফুর।

কাছাকাছি অর্থঃ সপ্ত আকাশ ও পৃথিবী এবং এগুলোর মধ্যে যাকিছু আছে সমস্ত কিছু তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। এবং এমন কিছু নেই যা তার সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করে না। কিন্তু তাদের পবিত্রতা, মহিমা ঘোষণা তোমরা অনুধাবন করতে পার না। নিশ্চয় তিনি অতি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ২টি সিফাতঃ ৪৯) ইয়া হালিমু (হে অত্যন্ত ধৈর্যশীল) কিছু কথাঃ আসলে এখানে কিছুই বলার নাই।

তিনি সাথে সাথে প্রতিশোধ গ্রহন করেন না, তিনি তাঁর বান্দাদের প্রতিনিয়ত ভালো হবার সুযোগ দিতেই থাকেন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। আর এ জন্যই হয়ত নাস্তিকেরা প্রতিনিয়ত আল্লাহের সানের প্রতি ব্যায়াদবি করে যান এবং কেউ কেউ প্রকাশ্য নিজেদের ধবংস কামনা করেন, কিন্তু তাঁরা ধবংস হন না। প্রকৃত পক্ষে তারা হয়ত আল্লাহের এই সিফাতটা জানেনই না!!!!!! ৫০) ইয়া গাফুরু (হে ক্ষমাশীল) আমি যা বুঝিঃ যিনি বারবার ক্ষমা করতেই থাকেন। আর ক্ষমা করতেই থাকেন কোন বিনিময় ছাড়া। সূরা ফাতির,আয়াত ৩৪(৩৫:৩৪) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ ওয়াক্বালুল হামদুলিল্লাহিল্লাযি আযহাবা আন্নালহাযানা ইন্না রাব্বানা লাগাফুরুন শাকুর।

কাছাকাছি অর্থঃ আর তারা বলবে-সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দূঃখ দূর করেছেন। নিশ্চয় আমাদের পালনকর্তা ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ১টি সিফাতঃ ৫১) ইয়া শাকুরু (হে কৃতজ্ঞতা পছন্দকারী) আমি যা বুঝিঃ আল্লাহ কৃতজ্ঞতা পছন্দ করেন। তিনি বান্দাকে সামান্য ভালো কাজের বিনিময়ে অসীম নেয়ামত দান করেন। সামান্য একটা ভালো কাজ হয়ত আমাদের অনেককে জান্নাতে নিয়ে যাবে।

সূরা রাদ,আয়াত ৯(১৩:৯) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ আলিমুলগাইবি ওয়াশশাহাদাতিল কাবিরুল মুতাআলি। কাছাকাছি অর্থঃ তিনি সকল গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় অবগত, মহোত্তম, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ২টি সিফাতঃ ৫২) ইয়া কাবিরু (হে অতিবড়) আমি যা বুঝিঃ তাঁর চেয়ে বড় আর কিছু নাই, না তাঁরচেয়ে ক্ষমতায় বড় কেউ আছে না শক্তিতে?????!!! ৫৩) ইয়া মুতাআলি (হে সর্বচ্চ) আমি যা বুঝিঃ যার সম্মান ও মহত্ত্ব সর্বচ্চ। তাঁর অবস্থান এত উচুতে যে তা কোন মানব মন কল্পনাও করতে পারে না। সূরা হাজ্জ,আয়াত ৬৪(২২:৬৪) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ লাহুমাফিসসামাওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি ওয়াইন্নাল্লাহা লাহুয়াল গানিইউল হামিদ।

কাছাকাছি অর্থঃ নভোমন্ডল ও ভুপৃষ্ঠে যা কিছু আছে, সব তাঁরই এবং আল্লাহই অভাবমুক্ত প্রশংসার অধিকারী। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ২টি সিফাতঃ ৫৪) ইয়া গানিয়ু (হে অফুরন্ত সম্পদশালী) আমি যা বুঝিঃ তিনি সেলফ সাফিসিয়েন্ট। তাঁর কোন রকম কোন অভাব নাই। তাঁর কোন প্রয়জনের জন্য অন্যের উপর নির্ভর করতে হয় না। তিনি যখন যা ইচ্ছা যাকে ইচ্ছা প্রচুর সম্পদ দিতে পারেন, এর জন্য তাঁর কোন হিতাহিত চিন্তা করতে হয় না।

এর ফলে তাঁর সম্পদের ভান্ডারে কোন কমতিও হয় না। ৫৫) ইয়া হামিদু (হে প্রশংসিত) আমি যা বুঝিঃ তিনি প্রশংসিত। অন্য কারো ইচ্ছায় না, নিজের গুনের কারনেই প্রশংসিত। সূরা আশশূরা,আয়াত ৬(৪২:৬) কাছাকাছি বাংলাউচ্চারনঃ ওয়াল্লাযিনাত তাখ্বাজু মিনদুওনিহি আওলিয়া আল্লাহু হাফিইযুন আলাইহিম ওয়ামা আনতা আলাইহিম বিওয়াকিইল। কাছাকাছি অর্থঃ যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে অভিভাবক হিসাবে গ্রহণ করে, আল্লাহ তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখেন।

আপনার উপর নয় তাদের দায়-দায়িত্ব। এই আয়াত থেকে পাওয়া যায় এমন আল্লাহের ১টি সিফাতঃ ৫৬) ইয়া হাফিযু (হে মাহারক্ষক) আমি যা বুঝিঃ তিনি সেই যিনি কোন কিছু ভুলেন না, কোন কিছু অবহেলা করেন না, কখনো অসতর্ক হন না। তিনি সেই যিনি ইলেকট্রন কে প্রটন থেকে রক্ষা করেন, তিনি সেই যিনি গরমকে গরম আর ঠান্ডাকে ঠান্ডা রাখেন। তিনি সেই যিনি সাগরের লবনাক্ত পানি নদিতে মিশে যেতে দেন না। তিনি সেই যা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।