আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বর্ষবরণ নানান দেশে নানান রীতি

আঙুর খেলেই ইচ্ছাপূরণ!

মেঙ্েিকাতেও ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে ১২ বার ঘণ্টা বাজানো হয়। এ সময় প্রতি ঘণ্টাধ্বনির সঙ্গে একটি করে আঙুর খাওয়া হয়। তারা বিশ্বাস করে এ সময় যা কামনা করা হয়, তাই পূরণ হয়। নতুন বছরে তাদের যাবতীয় ইচ্ছাপূরণ হবে এ আশায় তারা বাড়িঘর সাজায় কিছু নির্দিষ্ট রং ব্যবহার করে। মেঙ্কিান মিষ্টি-রুটির মধ্যে পয়সা বা জাদুমন্ত্র লুকিয়ে রাখা হয়।

রুটি পরিবেশন করা হলে যিনি রুটির ভেতর লুকানো পয়সা বা জাদুমন্ত্র পান, বলা হয়ে থাকে নতুন বছর তার জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে।

 

প্রথম পা দিলেই সৌভাগ্য!

যুক্তরাজ্যে নতুন বছরে মধ্যরাতের পর যে পুরুষ প্রথম বাড়িতে পা দেয়, বলা হয় সে বাড়িতে সৌভাগ্য নিয়ে আসে। এ সময় পুরুষরা নিজেদের বাড়িতে টাকা, রুটি, কয়লা এবং অন্যান্য সামগ্রী উপহার হিসেবে নিয়ে আসে, যাতে করে সারা বছর পরিবারের সদস্যদের এসব জিনিসের কমতি না হয়। মধ্যরাতের পর বাড়িতে পা দেওয়া প্রথম মানুষটি অবশ্যই সোনালি বা লাল চুলওয়ালা এবং মহিলা হতে পারবে না। বলা হয়, এতে করে বাড়িতে দুর্ভাগ্য আসে।

লন্ডনে নববর্ষের আগ মুহূর্তে ট্রাফালগার স্কয়ার এবং পিকাডেলি সার্কাসে বিশাল পরিসরে মানুষ সমবেত হয়। মধ্যরাতে বিগবেনের ধ্বনি শুনে এরা একত্রে নববর্ষকে বরণ করে নেয়।

 

ঠিকানাবিহীন নতুন বছর

চীনা নববর্ষ অনুষ্ঠিত হয় তাদের নিজস্ব রীতিতে। শুধু তাই নয়, চীনারা তাদের নিজস্ব বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করে থাকে। তাদের নববর্ষ পালনের উৎসব এক মাস ধরে চলে।

এ উৎসব শুরু হয় বছরের শেষ মাসের মাঝামাঝি এবং শেষ হয়ে নতুন বছরের প্রথম মাসে। এ উৎসবকে তারা বলে বসন্ত উৎসব। তবে চীনের নতুন বছর প্রকৃতপক্ষে কোন তারিখ থেকে শুরু হবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। কারণ এ তারিখটি প্রতি বছর পরিবর্তন হয়ে যায়।

 

৭ ডুব আর ৭ ফুল

ব্রাজিলিয়ানরা অনেক ধুমধামের সঙ্গে নতুন বছর উদযাপন করে থাকে।

ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো সমুদ্রসৈকতে নববর্ষের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানটি হয়। এর অন্যতম আকর্ষণ চোখধাঁধানো আতশবাজির প্রদর্শনী। সমুদ্রে সাতটি ডুব দিলে এবং সাতটি ফুল ছুড়ে দিয়ে তারা মনে করে বছরটি খুব ভালো কাটবে। এ উৎসবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় দুই মিলিয়ন পর্যটক যোগ দেন।

 

নির্ঘুম কোরিয়ানরা

কোরিয়াতে নববর্ষ শুরুর সময় কেউ ঘুমায় না।

এ সময় ঘুমালে নাকি চোখের ভ্রু সাদা হয়ে যায়! রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে টিভিতে ৩৩ বার ঘণ্টা বাজানো হয়।

কোরিয়ার ৩৩ বীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এটি করা হয়। কোরিয়াতে প্রায় সবাই সূর্যোদয় দেখে। সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়ার সময় একজন আরেকজনকে শুভেচ্ছা জানায়।

 

জ্যাক স্ট্র

হাঙ্গেরিতে নববর্ষ পালনের সময় অদ্ভুত একটি রীতি রয়েছে।

তারা এই দিনে কুশপুত্তলিকা দাহ করে। এই কুশপুত্তলিকাকে 'জ্যাক স্ট্র' বলে। আগের বছরে ঘটে যাওয়া সব দুর্ঘটনা এবং খারাপ কাজের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। এই কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে দুর্ভাগ্যকে ছুড়ে ফেলা হয়।

 

ভাঙচুরে সৌভাগ্য!

ডেনমার্কে নববর্ষ উদযাপনের কায়দাটা আবার একটু অন্যরকম।

ড্যানিশরা নতুন বছরে প্রতিবেশীদের সদর দরজায় কাচের ডিশ, গ্লাস, বাটি ছোড়াছুড়ি করে থাকে।

সেসব ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে যায়। প্রতিবেশীদের এমন আচরণে বিরক্ত হওয়ারই কথা, কিন্তু আইরিশরা হয় এর উল্টো। তারা প্রার্থনা করে, বেশি বেশি ভাঙা কাচ যেন জমা হয় দরজার সামনে। তারা বিশ্বাস করে, যার দরজার সামনে যত বড় স্তূপ হবে, সেই-ই তত ভাগ্যবান।

 

খারাপ আত্দা দূরে

জাপানে নববর্ষের সময় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। খারাপ আত্দাকে দূরে রাখার জন্য এ সময় বাড়ির বাইরে দড়ি দিয়ে খড়ের টুকরা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এটাকে তারা সুখ এবং সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে দেখে। নতুন বর্ষ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাপানিরা হাসা শুরু করে, বলা হয় এতে করে নতুন বর্ষ সৌভাগ্য নিয়ে আসে।

 

আতশবাজির রাজ্য!

নববর্ষে অস্ট্রেলিয়ানদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ আতশবাজি পোড়ানো।

সিডনিতে নববর্ষ উপলক্ষে প্রায় ৮০ হাজার আতশবাজি ফোটানো হয় যা ১৫ লাখ লোক উপভোগ করে।

 

সবচেয়ে বড় নিউ ইয়ার পার্টি

যুক্তরাষ্ট্রের নববর্ষ উদযাপনের কেন্দ্রবিন্দু হয় টাইমস স্কয়ার। এখানে নতুন বছর শুরু হওয়ার ১০ সেকেন্ড আগে এক বিশালাকার ক্রিস্টাল বল নেমে নতুন বর্ষের আগমনের কাউন্ট-ডাউন শুরু করে। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিউ ইয়ার পার্টি যাতে প্রায় ৩০ লাখ লোক অংশগ্রহণ করে।

 

গাছের পাতা বালিশের নিচে

আইরিশ সংস্কৃতির সঙ্গে আবার জড়িয়ে রয়েছে মিস্টলটো গাছের পাতা।

ক্রিসমাসের ঘর সাজাতে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে বহুকাল আগে থেকে। আইরিশ মেয়েরা নববর্ষের আগের রাতে বালিশের নিচে মিস্টলটো গাছের পাতা রেখে ঘুমায়। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, এতে নতুন বছরে তারা ভালো একজন সঙ্গী খুঁজে পাবে।

 

 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।