আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাঠে নেই প্রার্থীরা, ভোটার বাড়াতে প্রচারণায় ইসি

প্রধান বিরোধী দল ছাড়া নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় প্রার্থীরা মাঠে না থাকায় ভোটারদের ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছে স্বয়ং নির্বাচন কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে এ প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এ প্রচারণা চলবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।

জানা গেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর বিটিআরসিকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠিও দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে-ভোটগ্রহণের দিন ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সব মোবাইল অপারেটর থেকে পর্যায়ক্রমে সব ভোটার এলাকায় এসএমএস পাঠিয়ে নির্বাচন বিষয়ে প্রচার চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২৮ নভেম্বর বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। প্রচারণার স্লোগান থাকছে- 'ভোট গণতান্ত্রিক অধিকার, নির্বাচনে ভোট দিয়ে আপনার অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন'। 'শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখুন'। 'নির্বাচনে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে, নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন'।

এদিকে, সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।

এক্ষেত্রে দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটারদের ব্যাপক সচেতনতা বাড়াতে 'ভোটার এডুকেশন' ক্যাম্পেইনের ব্যবস্থা করছে ইসি। বিগত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে মাত্র ২৬ শতাংশ ভোট পড়ায় এবারের একতরফা নির্বাচনেও ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন রিটার্নিং অফিসাররা। তবে ভোটারদের ভোটকেন্দ্র আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে উপস্থিতি বাড়বে বলেও মনে করছেন তারা। এক্ষেত্রে ভোটদানে উৎসাহ ও ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে বিশেষ ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে ভোটারদের মাঝে। এ ছাড়া ইসির পক্ষ থেকে ভোট দানে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, আগে তো বলা যাচ্ছে না। দেখি কী হয়! মাঠ পর্যায় থেকে বেশ কিছু ভালো প্রস্তাব এসেছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে তা করার চেষ্টা করব। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টিসহ ১২টি দলের অংশগ্রহণে ১৪৭টি আসনে ভোট হচ্ছে। এতে ৪ কোটি ৩৬ লাখের বেশি ভোটার রয়েছে।

এর আগে ১৯৯৬ সালের বহুল আলোচিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপিসহ ৪১টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। ভোট পড়ে মাত্র ২৬ শতাংশ। এর মধ্যে বিএনপি পেয়েছিল ৭৭ শতাংশ। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। নির্বাচনে ভালো ভোট পড়ার হার থাকবে বলে আশা করেন তিনি।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিরোধী দল না থাকায় উপ-নির্বাচনের মতোই ভোট হতে পারে। তবে বিরোধী দল না থাকলেও ৫০ শতাংশের ওপর (শুধু আওয়ামী লীগ-জাপা হিসেবে) ভোট পড়তে পারে। সর্বশেষ গত অক্টোবরে বরগুনা-২ উপ-নির্বাচনে ৫১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। নবম সংসদ নির্বাচনে ৮৭ শতাংশ ভোট পড়লেও পরে উপ-নির্বাচনে ৩৪-৭৩ শতাংশ ভোটের নজিরও রয়েছে। ২০০৯ সালে রংপুর-৩ আসনে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, খেলাফত মজলিস ও গণফ্রন্ট অংশ নিয়ে রওশন এরশাদ জিতেছিল।

ওই নির্বাচনে ৩৪ শতাংশ ভোট পড়ে, যার ৭৭ শতাংশ পেয়েছিল জাতীয় পার্টি। বাগেরহাট-১ আসনে বিএনপি-আওয়ামী লীগের উপস্থিতিতে ভোট পড়েছিল ৬৮ শতাংশ।

ভোটের হার : সবচেয়ে বেশি রেকর্ড করা ভোট পড়ে নবম সংসদে। ২০০৮ সালের নবম সংসদে ৩৮টি নিবন্ধিত দল অংশ নিয়ে ৮৭ শতাংশ ভোটের রেকর্ড রয়েছে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নির্বাচন বাতিল হয় ২০০৬ সালের ২২ জানুয়ারি।

অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ৫৪টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়ে ভোট পড়ে ৭৫ শতাংশ। ৮১টি রাজনৈতিক দলের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ৭৫ শতাংশ ভোট পড়ে। ৫৫ শতাংশ ভোট পড়ে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে। এতে ৭৫টি দল অংশ নেয়। ১৯৮৮ সালে চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে ৮টি দলের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৫৫ শতাংশ।

তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৮টি দল অংশ নিয়েছিল। এতে ৫০ শতাংশ ভোট পড়ে। ২৯টি দল অংশ নিলে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৫১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে ১৪টি দল অংশ নিয়ে ভোট পড়ে ৫৪ শতাংশ। দেশের প্রথম নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ১১ সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বি্বতায় নির্বাচিত হন।

অর্ধেকের নিচে নেমে এলো আইনশৃঙ্খলা ব্যয় : অর্ধেকেরও বেশি প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ১৫৪ সংসদীয় আসনে ভোট নেই। অবশিষ্ট ১৪৭ আসনে নির্বাচন পরিচালনায় ৬৬ কোটি টাকা, আর আইনশৃঙ্খলায় ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। যা সম্ভাব্য ব্যয়-বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম। ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ব্যয় কমে গেছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.