আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিচারপতিকে শেষ শ্রদ্ধা

শনিবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান এই রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ, ভাষা সংগ্রামী।   সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে এরপর শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদনপর্ব।

সাবেক প্রধান বিচারপতির কফিনে শ্রদ্ধা জানাতে আগেই সেখানে উপস্থিত হন  তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাতীয় মানাবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, আইনজীবী ড. কামাল হোসেনসহ সদ্য গঠিত সরকারের সাবেক ও নতুন মন্ত্রীরা।

ইনু বলেন, “তার (হাবিবুর রহমান) বয়স হলেও তিনি সবকিছু পর্যবেক্ষণ করতে পারতেন, মতামত দিতে পারতেন।

জাতির সঙ্কটকালে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিতেন। তিনি শুধু দক্ষ বিচারপতি নন, গবেষক, লেখক এবং ভাষা সংগ্রামীও ছিলেন। ”

জাসদ সভাপতি ইনু মনে করেন, সামরিকতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে হাবিবুর রহমানের ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

“বর্তমানে জঙ্গিবাদ থেকে গণতন্ত্রের ধারার দিকে যে অগ্রযাত্রা, এ সময়ও তার বড় ধরনের অবদান রাখার সুযোগ ছিল। ”

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বিচারপতি হাবিবুর রহমান কেবল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান বা প্রধান বিচারপতি হিসেবেই নন, একজন ভাষা সংগ্রামী ও প্রগতীশীলতার ধারক হিসাবেও সবার শ্রদ্ধাভাজন।

“তার দিক নির্দেশনা থেকে আমরা বঞ্চিত হলাম। তবে তিনি যে ৭০টির মতো বই লিখেছেন, সেখানে যে পথ আমাদর দেখিয়েছেন, তার মাধ্যমেই তিনি বঁচে থাকবেন। ”

ড. কামাল হোসেন বলেন, “আমরা বড় মাপের একজন মানুষকে হারিয়েছি। তিনি মানুষের শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন, প্রগতীশীলতার চর্চা করেছেন। তিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি।

সঠিক পথ নির্দেশনা ও উচিৎ কথা বলার জন্য যদি কাউকে চিন্তা করতে হতো; তবে সবার মধ্যে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নামই উচ্চারণ করতে হতো। ”

সাবেক এই বিচারপতির চলে যাওয়া এ দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলেও মন্তব্য করেন কামাল।

“তবে আমরা সৌভাগ্যবান যে তার মতো মেধাবী সন্তান এই বাংলাদেশ পেয়েছিল। ”

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, হাবিবুর রহমান মানুষকে ভালবেসেছেন, দেশকে ভালবেসেছেন। তার অভাব পূরণ হবার নয়।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, নতুন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, নাট্যকার রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসূফ বাচ্চু, সাংবাদিক কামাল লোহানী, শিল্পী রফিকুন্নবী ও কাইয়ূম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচারয মিজানুর রহমান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুনর রশিদও শহীদ মিনারে আসেন সাবেক প্রধানবিচারপতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।   

হাবিবুর রহমানের মেয়ে রুবাবা রহমান জানান, সোমবার তার বাবার তিনটি জানাজা হবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজা শেষে তার কফিন নিয়ে যাওয়া হয় তার এক সময়ের কর্মস্থল সুপ্রিম কোর্টে।

সেখানে দ্বিতীয় জানাজার পর বিকালে গুলশানের আজাদ মসজিদে হবে শেষ জানাজা। এরপর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে রুবাবা জানান।

১৯৯৫ সালে প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসর নেন হাবিবুর রহমান। সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হিসেবে তিনি ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন।

তার অধীনে ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।




সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।