আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাধুরীর ‘দেড় ইশকিয়া’

যেখানে বলিউডের নায়িকাদের বিয়ে ও একটু বয়স হলেই কদর কমে যায় সেখানে ৪৬ বছর বয়সে ‘দেড় ইশকিয়া’ সিনেমায় নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করে মাধুরী প্রমাণ করেছেন, বিরতি নিলেও হারিয়ে যাননি তিনি।

প্রায় সাত বছর পর রুপোলি পর্দায় দেখা যাবে মাধুরীকে। তাই নিঃসন্দেহে সবার আগ্রহ ছিল চরমে। দর্শক থেকে সমালোচক, এই গুণী অভিনেত্রীর কাছে সবার প্রত্যাশা ছিল যেন একটু বেশিই। তার উপর ব্ল্যাক কমেডি ধাঁচের মুভি ‘দেড় ইশকিয়া’ হল সুপারহিট সিনেমা ‘ইশকিয়া’র সিকুয়েল।

এক্ষেত্রে ‘বেগম পারা’র ভূমিকায় মাধুরীর সাবলীল অভিনয় সিনেমাপ্রেমীদের অনেকটা বাকরুদ্ধ করেই ছেড়েছে।

বিধবা বেগম পারা (মাধুরী দীক্ষিত) বাস করেন তার বিশাল মহলে, যেখানে নিঃসঙ্গতা হল নিত্যসঙ্গী। সুন্দরী বেগম পারা খুঁজে বেড়াচ্ছেন এমন কাউকে, যাকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে পারবেন। প্রয়াত স্বামীকে দেওয়া এই প্রতিজ্ঞা রাখতে বেগম সিদ্ধান্ত নেন, যে পুরুষ কবিতা শুনিয়ের ভোলাতে পারবে তার মন, তিনিই হবেন তার স্বামী। সংগীত এবং কবিতার অনুরাগী বেগম পারা একদিন তার মহলে আয়োজন করেন এক উৎসবের।

সেই উৎসবে হাজির হন বিখ্যাত জুটি খালুজান (নাসিরুদ্দিন শাহ) এবং বাব্বান (আরশাদ ওয়ার্সি)। নিঃসঙ্গ সুন্দরী বেগম পারার মন আর তার অঢেল সম্পত্তি যখন খালুজানের হাতের মুঠোয় প্রায় চলেই আসে, তখনই বাঁধে বিপত্তি।

উর্দু কবিতা, গজল আর বেগম পারার সৌন্দর্য, এর সঙ্গে বাড়তি পাওয়া হল মজার এক কাহিনি। ‘ইশকিয়া’র ভক্তদের জন্য উপভোগ করার মতো উপাদানের কোনো অভাব নেই এই সিনেমায়।  

বেগম পারার সার্বক্ষণিক সঙ্গী হল মুনিরা (হুমা কুরেশি) নামের একটি মেয়ে, যার প্রেমে পড়ে বাব্বান।

অনেকেই বলছেন, সিনেমায় নাসিরের চাইতে হুমার সঙ্গে মাধুরীর পর্দা রসায়ন ছিল দেখার মতো কিছু।

একজন গুণী শিল্পীর ভেতরকার সৃজনশীলতা বের করে আনতে পারেন কেবল একজন গুণী নির্মাতাই। পরিচালক অভিষেক চৌবে হলেন সেই নির্মাতাদের মধ্যে একজন, যারা হিন্দি সিনেমাকে একই সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং শৈল্পিক দুভাবেই উপস্থাপন করতে পেরেছেন।

‘ধুম’ কিংবা ‘কৃষ’-এর মতো সিনেমার দর্শকদের বাজারে ‘দেড় ইশকিয়া’ অবশ্যই একটি ভিন্নধর্মী কমেডির স্বাদ দেবে, সেইসঙ্গে বলিউডি সিনেমার শৈল্পিক দিকটি আরও একবার দেখার সুযোগ মিলবে।

আবারও ফেরা যাক মাধুরীর প্রসঙ্গে।

দুই ছেলের মা এবং চিকিৎসক শ্রীরাম নেনের সহধর্মিনী অভিনেত্রী মাধুরী। আশি এবং নব্বইয়ের দশকের সিনেমাপ্রেমীদের কাছে তিনি সবসময়ই ছিলেন সেরা এবং উজ্জ্বল নক্ষত্র। পাঁচ বছর বিরতির পর ২০০৭ সালে মুক্তি পেল মাধুরীর সিনেমা ‘আজা নাচলে’। তবে মুক্তির পরপরই ফ্লপের খাতায় নাম লেখাল মাধুরীর এই ‘কামব্যাক মুভি’। এরপর টিভিপর্দায় তার উপস্থিতি দেখা গেলেও সিনেমাপ্রেমীদের মনে তার অভাব পূরণ হয়নি এতদিন।

অবশেষে আরও সাত বছর বিরতির পর মাধুরী ফিরেছেন ‘দেড় ইশকিয়া’ নিয়ে। বলাই বাহুল্য, এবার আর হারিয়ে যাচ্ছেন না তিনি। ‘দেড় ইশকিয়া’তে মাধুরীর গ্ল্যামারাস রূপ তার বয়সকে যেমন হার মানিয়েছে, তেমনই মধ্যবয়সী একজন অভিনেত্রীর সৃজনশীলতা প্রকাশ করেছে।

মাধুরীর ভক্তদের জন্য সুখবর এই যে, চলতি বছরের ৭ মার্চ মুক্তি পাবে মাধুরীর আরেকটি সিনেমা ‘গুলাব গ্যাং’। তার সমসাময়িক অভিনেত্রী জুহি চাওলার সঙ্গে এই সিনেমায় প্রথমবারের মতো অভিনয় করবেন মাধুরী।

‘দেড় ইশকিয়া’ সমালোচকদের মন ভরে দিয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কেউ বলছেন ‘মুখরোচক এক কমেডি’ আবার কারও মতে ‘দেড় ইশকিয়া’ সিনেমাটি দেখা যে কোনো সিনেমাপ্রেমীর জন্য এক গুরুদায়িত্ব। মুক্তির দুদিন পার হতে না হতেই দর্শকরা মুগ্ধ হয়ে ফিরছেন সিনেমাহল থেকে।

তবে মোদ্দা কথা হল,গ্ল্যামার এবং হিউমারের এক চমৎকার মিশ্রণ দেখা যাবে ‘দেড় ইশকিয়া’তে। চকোলেট হিরো কিংবা যুবতী নায়িকা ছাড়াও একটি সিনেমা হতে পারে মজার এবং বিনোদনে ভরপুর, তারই উদাহরণ ‘দেড় ইশকিয়া’।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।