আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শয়তানের ধোকা থেকে বেঁচে থাকুন (এটা একবার পড়ে দেখুন p/z)

بسم الله الرحمن الرحيم -الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على خاتم الأنبياء والمرسلين، وعلى آله وصحبه أجمعين، وعلى من تبعهم بإحسان إلى يوم الدين

মানুষের পেছনে লেগে এ দায়িত্বই পালন করে শয়তান। মানুষকে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের সহজ-সরল-সঠিক পথ থেকে বিভ্রান্ত ও বিচ্যুত করে তার প্রকৃত মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের আসন থেকে তাকে নিচে নামিয়ে দেয়াই শয়তানের প্রানান্তকর প্রচেষ্টা। এর জন্যে সে মরিয়া হয়ে কাজ করে। এটাই তার জীবনের একমাত্র প্রতিজ্ঞা, একমাত্র অঙ্গিকার। কিন্তু মানুষ তার এই স্বঘোষিত সুস্পষ্ট শত্রুর বিষয়ে অচেতন, অসতর্ক ও গাফিল।

যুগে যুগে আল্লাহ তায়ালা নবী রসূলগণের মাধ্যমে মানুষকে শয়তান সম্পর্কে সতর্ক করে আসছেন।

ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَ
‘তারপর আমি তাকে নামিয়ে দিই নিচুদের চাইতেও নিচে। ’ (সূরা আত তীন : ৫)

শয়তানের পদাংক অনুসরণ না করতে, তার আনুগত্য ও দাসত্ব না করতে :
يَا بَنِي آدَمَ لاَ يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُم مِّنَ الْجَنَّةِ يَنزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْآتِهِمَا ۗ إِنَّهُ يَرَاكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ ۗ إِنَّا جَعَلْنَا الشَّيَاطِينَ أَوْلِيَاءَ لِلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ অর্থ : হে আদম সন্তানেরা (সতর্ক হও)! শয়তান যেনো ধোকা প্রতারণার (ফবপবরাব) মাধ্যমে তোমাদের দায়িত্ব কর্তব্য পালন থেকে বিচ্যুত করে) ভুল পথে পরিচালিত করতে না পারে, যেভাবে সে (ধোকা প্রতারণার মাধ্যমে) তোমাদের (আদি) পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছিল। তাদের পরস্পরকে তাদের গোপন অংগ দেখানোর জন্যে সে তাদের বিবস্ত্র করে দিয়েছিল। সে এবং তার দলবল এমনভাবে (বা এমন স্থান থেকে) তোমাদের দেখতে পায় যেখান থেকে তোমরা তাদের দেখতে পাওনা।

আমি শয়তানগুলোকে সেই সব লোকদের অলি (অভিভাবক) বানিয়ে দিয়েছি, যারা ঈমান আনেনা, ঈমানের পথে চলেনা। (সূরা ৭ আল আ’রাফ : আয়াত ২৭)

وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ ۚ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
অর্থ : তোমরা শয়তানের পদাংক অনুসরণ করোনা, নিশ্চয়ই সে তোমাদের ডাহা দুশমন। (সূরা ২ আল বাকারা : আয়াত ১৬৮)

وَلَا يَصُدَّنَّكُمُ الشَّيْطَانُ ۖ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
অর্থ : (হে মানুষ!) শয়তান যেনো (সত্য-সঠিক-সরল পথে চলতে) তোমাদের প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে না পারে। জেনে রাখো, সে তোমাদের সুস্পষ্ট শত্রু। (সূরা ৪৩ যুখরুফ : আয়াত ৬২)

يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ ۖ فَلَا تَغُرَّنَّكُمُ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا ۖ وَلَا يَغُرَّنَّكُم بِاللَّهِ الْغَرُورُ إِنَّ الشَّيْطَانَ لَكُمْ
عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوهُ عَدُوًّا ۚ إِنَّمَا يَدْعُو حِزْبَهُ لِيَكُونُوا مِنْ أَصْحَابِ السَّعِيرِ
অর্থ : হে মানুষ! নিশ্চয়ই আল্লাহর ওয়াদা হক (সত্য); সুতরাং এই পৃথিবীর জীবন যেনো কিছুতেই তোমাদের প্রলুব্ধ ও প্রতারিত না করে এবং সেই মহা প্রতারক (শয়তান)ও যেনো আল্লাহ সম্পর্কে তোমাদের ধোকায় না ফেলে।

শয়তান তো তোমাদের ডাহা শত্রু। সুতরাং তাকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ করো। সে তো তার অনুসারীদের (এমন সব কাজের) আহবান জানায়, যাতে তারা জাহান্নামের জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসী হয়ে যায়। (সূরা ৩৫ ফাতির : আয়াত ৫-৬)
মহান আল্লাহ এসব অকাট্য ও বিবেক জাগ্রতকারী সতর্কবাণী দ্বারা কি মানুষ শয়তানের ধোকা, প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সতর্ক হবেনা?

২.শয়তান আল্লাহর অবাধ্য, মানুষের চরম দুশমন এবং মহাপ্রতারক

শয়তান সম্পর্কে মানুষের সুস্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি। কারণ যে ব্যক্তি শত্রুর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেনা, সে সহজেই শত্রুর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়।

দেখুন শয়তান সম্পর্কে মহান আল্লাহ কী বলেন :

১. শয়তান আল্লাহর চরম অবাধ্য : إِنَّ الشَّيْطَانَ كَانَ لِلرَّحْمَـٰنِ عَصِيًّا ‘শয়তান দয়াময় রহমানের চরম অবাধ্য-নাফরমান। ’ (সূরা মরিয়ম : আ. ৪৪)

২.শয়তান আল্লাহর প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ : وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا ‘শয়তান তার প্রভুর প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। ’ (সূরা ১৭ ইসরা : আয়াত ২৭)

৩.শয়তান মানুষের স্বঘোষিত সুস্পষ্ট দুশমন : ِاِنَّ الشَّيْطَانَ لِلْإِنسَانِ عَدُوٌّ مُّبِينٌ ‘নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের সুস্পষ্ট শত্রু। ’ (সূরা ১২ ইউসুফ : আয়াত ৫)

৪.শয়তান মানুষের জন্যে মহাপ্রবঞ্চক : وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنسَانِ خَذُولًا ‘অবশ্যি শয়তান মানুষের জন্যে মহাপ্রবঞ্চক, মহা ধোকাবাজ। ’ (সূরা ২৫: ২৯)

৫.শয়তান মুমিনদেরকে তার বন্ধুদের ভয় দেখায় : إِنَّمَا ذَ‌ٰلِكُمُ الشَّيْطَانُ يُخَوِّفُ أَوْلِيَاءَهُ

‘এ হলো শয়তান।

সে তোমাদেরকে তার বন্ধুদের ভয় দেখায়। ’ (সূরা ৩ : ১৭৫)

৬.শয়তানের সংকল্প মানুষকে চরম বিপথগামী করা : وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُضِلَّهُمْ ضَلَالًا بَعِيدًا : ‘শয়তান তাদেরকে সঠিক পথ থেকে বিভ্রান্ত করে বহুদূর নিয়ে যেতে চায়। ’ (সূরা ৪ আন নিসা : আয়াত ৬০)

৭.মানুষের সামনে শয়তানের সব প্রতিশ্রুতিই প্রতারণা : وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيْطَانُ إِلَّا غُرُورًا : ‘শয়তানের সমস্ত ওয়াদাই প্রতারণা আর ধোকাবাজি। ’ (সূরা ১৭ ইসরা : আয়াত ৬৪)

৮.শয়তান মহাপ্রতারক : وَلاَ يَغُرَّنَّكُمْ بِاللهِ الْغُرُوْرَ ‘মহাপ্রতারক যেনো আল্লাহর ব্যাপারে তোমাদেরকে ধোকায় না ফেলে। (সূরা লোকমান : ৩৩ ; সূরা ফাতির : ৫)

৩. শয়তানের পরিচয়

আরবি ভাষায় শয়তান (شَيْطَانٌ) মানে- সীমালংঘনকারী, দাম্ভিক, স্বৈরাচারি।

১ এই বৈশিষ্ট্যের জিন এবং মানুষ উভয়ের জন্যেই শয়তান পরিভাষা ব্যবহার করা হয়। কুরআন মজিদে উভয়ের জন্যে শয়তান পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন, সূরা আল বাকারার ১৪ নম্বর আয়াতে ইসলামের বিরুদ্ধাচারী নেতাদের শয়তান বলা হয়েছে। شَيْطَانٌ-এর বহুবচন شَيَاطِيْنٌ। শয়তান শব্দটি একটি পরিভাষা হিসেবে প্রাচীন কাল থেকেই সকল ধর্মের লোকদের কাছে একটি সুপরিচিত শব্দ।

এ শয়তান জিনদের অন্তরভুক্ত২। শয়তান কথাটি সর্বপ্রথম সেই জিনটির জন্যে ব্যবহার করা হয়েছে, যে আল্লাহ্র নির্দেশ অমান্য করে প্রথম মানুষ আদম আলাইহিস্ সালামকে সাজদা করতে অস্বীকৃতি জানায়। কুরআন মজিদে শয়তান শব্দটি একবচন ও বহুবচনে ৮৮ বার ব্যবহৃত হয়েছে।
শয়তানকে কুরআন মজিদে ইবলিসও বলা হয়েছে। ৩ بَلَسٌ ও اِبْلاَسٌ শব্দমূল থেকে اِبْلِيْسٌ শব্দটি এসেছে।

এর অর্থ হলো, বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাওয়া, ভয়ে ও আতংকে নিথর হয়ে যাওয়া, দু:খে ও শোকে মনমরা হয়ে যাওয়া, সবদিক থেকে নিরাশ হয়ে সাহস হারিয়ে ফেলা এবং হতাশা ও ব্যর্থতার ফলে মরিয়া (desperate) হয়ে উঠা।


আদম সন্তানদের আল্লাহর পথ থেকে বিভ্রান্ত করার অংগিকার

শয়তানকে চিরতরে ধিকৃত ও অভিশপ্ত ঘোষণা করার পর সে চিরতরে নিরাশ হয়ে গেলো। কিন্তু সে নিজের অপরাধের জন্যে নত না হয়ে আরো ঔদ্ধত্যে মেতে উঠলো। সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা না করে আদম এবং আদম সন্তানদের বিপথগামী করার জন্যে কিয়ামত পর্যন্ত অবকাশ (সুযোগ) প্রার্থনা করলো :
قَالَ أَنظِرْنِي إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ قَالَ إِنَّكَ مِنَ الْمُنظَرِينَ
অর্থ : সে বললো : ‘পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দাও। ’ তিনি (আল্লাহ) বললেন : যা তুই অবকাশ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত।

(আল কুরআন, সূরা ৭ আ’রাফ : আয়াত ১৪-১৫; সূরা ১৫ হিজর : আয়াত ৩৬-৩৭; সূরা ৩৮ সোয়াদ : আয়াত ৭৯-৮০)

মহান আল্লাহ তাঁর নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার সে প্রার্থনা মঞ্জুর করলেন। আল্লাহ তার অবকাশ মঞ্জুর করার সাথে সাথে সে অংগিকার এবং চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করে বললো :
فَبِمَا أَغْوَيْتَنِي لَأَقْعُدَنَّ لَهُمْ صِرَاطَكَ الْمُسْتَقِيمَ ثُمَّ لَآتِيَنَّهُم مِّن بَيْنِ أَيْدِيهِمْ وَمِنْ خَلْفِهِمْ وَعَنْ أَيْمَانِهِمْ وَعَن شَمَائِلِهِمْ ۖ وَلَا تَجِدُ أَكْثَرَهُمْ شَاكِرِينَ

অর্থ : তুমি যেমন আমাকে বিপথগামী করেছো, তেমনি আমিও এখন থেকে তাদের (আদম ও তার সন্তানদের বিপথগামী করার জন্যে) তোমার সিরাতুল মুস্তাকিমে ওঁৎ পেতে বসে থাকবো। সামনে পেছনে, ডানে বাঁয়ে সবদিক থেকে তাদের ঘেরাও করে নেবো। ফলে তাদের অধিকাংশকেই তুমি কৃতজ্ঞ (তোমার অনুগত) পাবেনা। (সূরা ৭ আ’রাফ : আয়াত ১৬-১৭)

قَالَ فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ ক্স إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ

অর্থ : সে (ইবলিস) বললো : আপনার ক্ষমতার শপথ (By your might) আমি তাদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করে ছাড়বো, আপনার একান্ত অনুগত দাসদের ছাড়া।

(আল কুরআন, সূরা ৩৮ সোয়াদ : আয়াত ৮২-৮৩)


ইবলিসের চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ তাকে জানিয়ে দিলেন : তুই যাকে যাকে পারিস পদস্খলনের দিকে ডাক, অশ্বারোহী পদাতিক বাহিনীর আক্রমণ চালা, ধন সম্পদ সন্তান সন্তুতিতে তাদের সাথে শরিক হয়ে যা এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতির জালে আটকে ফেল- তোর সব প্রতিশ্রুতিই তো ধোকাবাজি আর প্রতারণা। জেনে রাখ :



إِنَّ عِبَادِي لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ ۚ وَكَفَىٰ بِرَبِّكَ وَكِيلاً



অর্থ : আমার প্রকৃত দাসদের উপর তোর কোনো কর্তৃত্ব অর্জিত হবেনা। (হে মুহাম্মদ!) ভরসা করার জন্যে তোমার প্রভুই যথেষ্ট। (সূরা ১৭ ইসরা : আয়াত ৬৫)
আল্লাহ শয়তানকে আরো বলে দিলেন :
لَمَن تَبِعَكَ مِنْهُمْ لَأَمْلَأَنَّ جَهَنَّمَ مِنكُمْ أَجْمَعِينَ

অর্থ : আদম সন্তানদের মধ্যে যারাই তোর অনুসরণ করবে, তোর সাথে তাদেরকে দিয়ে আমি জাহান্নাম ভর্তি করবো। (সূরা ৭ আ’রাফ : আয়াত ১৮)

মানুষকে বিপথগামী করার জন্যে শয়তানের কৌশল :


১.শয়তান মানুষের মনে কুপ্ররোচনা সৃষ্টি করে :


يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ অর্থ : সে (খান্নাস হয়ে) কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে।

(সূরা ১১৪ নাস : আয়াত ৫)

২.সে খান্নাসি কৌশল অবলম্বন করে :
مِنْ شَرِّ الْوَسْوَسِ الْخَنَّاسِ অর্থ : ‘আমি আশ্রয় চাই খান্নাসের কুমন্ত্রণার ক্ষতি থেকে। ’ অর্থাৎ সে এতোটা বদ যে, বারবার সামনে এসে কুমন্ত্রণা দেয় এবং পিছিয়ে যায়, বারবার প্রকাশ হয়ে কুমন্ত্রণা দেয় এবং গোপন হয়ে যায়। (সূরা ১১৪ আন্ নাস : আয়াত ৪)

৩.শয়তান মানুষকে প্রতিশ্র“তি দেয় এবং মানুষের মনে মিথ্যা আশা-বাসনা সৃষ্টি করে :

يَعِدُهُمْ وَيُمَنِّيهِمْ ۖ وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيْطَانُ إِلَّا غُرُورًا অর্থ : সে প্রতিশ্র“তি দেয় এবং মানুষের মনে মিথ্যা বাসনার সৃষ্টি করে। আসলে শয়তান তাদের যে ওয়াদা দেয় তা প্রতারণা মাত্র। (সূরা ৪ আন নিসা : আয়াত ১২০)

৪.শয়তান মানুষের মন্দ কাজকে তাদের কাছে শোভনীয় ও মনোহরী (fair seeming) করে তোলে :


وَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَانُ أَعْمَالَهُمْ فَصَدَّهُمْ عَنِ السَّبِيلِ অর্থ : শয়তান তাদের মন্দ কাজসমূহকে তাদের দৃষ্টিতে চমৎকার ও মনোহরী করে তোলে এবং এভাবে তাদের সরল সঠিক পথ অবলম্বনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।

(সূরা ২৯ আনকাবুত : আয়াত ৩৮)



৫.শয়তান মানুষের মধ্যে পারস্পারিক শত্র“তা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে :
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ

অর্থ: শয়তান মাদক ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মাঝে পারস্পরিক শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে চায় এবং আল্লাহর স্মরণ ও সালাত আদায়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়। তবু কি তোমরা (এসব শয়তানি কর্ম থেকে) নিবৃত হবেনা। (সূরা ৫ আল মায়িদা : আয়াত ৯১)


৬.শয়তান মানুষকে আল্লাহ ও তার রাসুল সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত করে :

وَمِنَ النَّاسِ مَن يُجَادِلُ فِي اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّبِعُ كُلَّ شَيْطَانٍ مَّرِيدٍ
অর্থ: কতক লোক এমন আছে যারা অজ্ঞতা নিয়ে আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হয় এবং অনুসরণ করে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের। (সূরা ২২ হজ্জ: আয়াত ৩)

৭.শয়তান মানুষকে অশ্লীল ও মন্দ কর্মে প্রলুব্ধ করে :

وَمَن يَتَّبِعْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ فَإِنَّهُ يَأْمُرُ بِالْفَحْشَاءِ وَالْمُنكَرِ
অর্থ: যে শয়তানের পদাংক অনুসরণ করে, সে জেনে রাখুক, শয়তান অশ্লীল ও মন্দ কর্মের আদেশ দেয় (প্রলুব্ধ করে)। (সূরা ২৪ আন নূর : আয়াত ২১)


৮.যারা হিদায়াতের পথ দেখতে পেয়েও তা পরিত্যাগ করে, শয়তান তাদের কাজকে শোভন করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা দেয় :


إِنَّ الَّذِينَ ارْتَدُّوا عَلَىٰ أَدْبَارِهِم مِّن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمُ الْهُدَى ۙ الشَّيْطَانُ سَوَّلَ لَهُمْ وَأَمْلَىٰ لَهُمْ

অর্থ: হিদায়াত সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত ও প্রমাণিত হবার পর যারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, শয়তান তাদেরকে তাদের এ আচরণ শোভন ও চমৎকার করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা আকাংখায় লিপ্ত করে রাখে।

(সূরা ৪৭ মুহাম্মদ : আয়াত ২৫)

৯.শয়তান মানুষকে কানকথায় লিপ্ত করে এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে সন্দেহ সৃষ্টি করে দেয় :
إِنَّمَا النَّجْوَىٰ مِنَ الشَّيْطَانِ لِيَحْزُنَ الَّذِينَ آمَنُوا



অর্থ: কানকানি ফিসফিসানি শয়তানের কাজ। সে এটা করায় মুমিনদের ব্যথিত করার জন্যে। (সূরা ৫৮ মুজাদালা : আয়াত ১০)

১০.শয়তান মানুষের মন-মস্তিষ্কের উপর প্রভাব বিস্তার করে আল্লাহর কথা ভুলিয়ে দেয় : اِسْتَحْوَذَ عَلَيْهِمُ الشَّيْطَانُ فَأَنسَاهُمْ ذِكْرَ اللَّهِ ۚ أُولَـٰئِكَ حِزْبُ الشَّيْطَانِ

অর্থ : শয়তান তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে নিয়েছে; এভাবে সে তাদের ভুলিয়ে দিয়েছে আল্লাহর কথা। মূলত এরাই শয়তানের দলের লোক। (সূরা ৫৮ মুজাদালা : আয়াত ১৯)



১১.শয়তান মানুষকে দিয়ে অপব্যয় এবং অপচয় করায় :

إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ ۖ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا

অর্থ: যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই।

আর শয়তান তার প্রভুর প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সূরা ১৭ ইসরা : আয়াত ২৭)


১২.শয়তান মন্দ কাজে প্রবলভাবে প্রলুব্ধ করে : أَلَمْ تَرَ أَنَّا أَرْسَلْنَا الشَّيَاطِينَ عَلَى الْكَافِرِينَ تَؤُزُّهُمْ أَزًّا অর্থ: তুমি কি লক্ষ্য করোনি, আমি কাফিরদের জন্যে শয়তানদের ছেড়ে রেখেছি তাদেরকে মন্দ কাজে প্রলুব্ধ করার জন্যে? (সূরা ১৯ মরিয়ম : আয়াত ৮৩)

আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন :فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ

অর্থ: যখনই তুমি আল কুরআন অধ্যয়নের সংকল্প করবে, তখন ধিকৃত অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় চেয়ে নিও। (সূরা আন নহল : আয়াত ৯৮)


এটা উৎসর্গ ঐ বেদআতি ভাইকে যে ঈদে মিল্লাদুন্নবী পালন ফরজ ও দুই ঈদের চাইতেও বেশী খুশি মনে করেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।