আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ত্বকে ফুলের কোমল ছোঁয়া !!

আমাকে খুঁজবে প্রভাতের সূর্য কিরণে... যদি না পাও,খুঁজবে সন্ধ্যায় - যখন সূর্য ডুবি ডুবি করেও ডুবছে না। সাবধান!! মধ্যাহ্নে কখনো অনুসরণ করবে না! :)

ফুল কে না ভালোবাসে! ফুল তার রূপ, গন্ধ দিয়ে আমাদের মাতিয়ে রাখে সারাক্ষণ। আর যদি এই রঙ বেরঙের ফুল দিয়ে ত্বকের যত্ন নেয়া যায় তবে সে যেন হবে বাড়তি পাওনা। ফুল দিয়ে তৈরি ফেস প্যাক ত্বকের জন্য খুবই ভালো। কিছু কিছু ফুল আছে যেগুলোতে মূল্যবান তেল, নিউট্রিয়েণ্ট আছে আর এই তেল আমাদের ত্বকের নরিশমেণ্টের জন্য জাদুর মত কাজ করে।

ফুলে থাকা নিউট্রিয়েণ্ট এজিং এর প্রক্রিয়াকে অনেক ধীর করে দেয়। তবে এটি বলে রাখাও ভালো ফুলে যাদের এলারজি আছে তারা এই প্যাকগুলো ব্যবহার করবেন না। কেনা ফুলের চেয়ে আপনার বাগানের ফুল পেলে সবচেয়ে ভালো হয়। শীত তো প্রায় চলে এলো-এই সিজেনের জন্য ফ্লাওয়ার ফেস প্যাক খুবই উপযোগী। শীতে আমাদের অনেকের ত্বকে কালচে ভাব চলে আসে কিন্তু এই প্যাক গুলো মুখে লাগিয়ে আপনি থাকবেন দ্বীপ্তিময় ও উজ্জ্বল।



গোলাপ ফুলঃ

গোলাপকে বলা হয় ফুলের রাণী। ফুলটিকে দেখে যেমন মন জুড়িয়ে যায় তেমনি গুন দিয়েও আমাদের করে তোলে লাবণ্যময়ী ও রূপসী। শুষ্ক ত্বকের যেকোনো বয়সী গোলাপের এই প্যাক লাগাতে পারেন। গোলাপের পাপড়ির সুগার আর তেল শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা জুগিয়ে ত্বককে কুসুম কোমল করে তোলে। গোলাপে থাকা অ্যান্টি–ইরিট্যাণ্ট বৈশিষ্ট্য ত্বকের জ্বালা পোড়া কমিয়ে দেয়, অ্যান্টি–অক্সিডেণ্ট প্রপারটি ত্বকের কোষের রিজেনারেশনে সাহায্য করে।

কয়েকটি গোলাপ ফুলের পাপড়ি নিন এর সাথে ২ / ৩ চা চামচ ওটস আর দুধ মিশিয়ে ভালো করে ব্লেণ্ড করে নিন। হয়ে গেল আপনার প্যাক।

এবার লাগানোর পালা। কটন বলে গোলাপ জল লাগিয়ে পুরো মুখ মুছে নিন তারপর অপেক্ষা করুন ঐটি শুকানো পর্যন্ত। এখন লাগান গোলাপের ফেস প্যাক।

১০-১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে আপনি পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত উজ্জ্বল গ্লোয়িং স্কিন।

গাঁদা ফুলঃ

আজকাল গাঁদা ফুল সারা বছরই আমাদের দেশে পাওয়া যায়। এই ফুল ত্বকের রঙ হালকা করে সেই সঙ্গে ক্লিন করে। সপ্তাহে একবার বা দুইবার এই প্যাক ব্যবহারের ফলে ত্বকের পোরও টাইট হয়।

যদি কারও মুখে পিম্পল থেকে থাকে গাঁদা ফুল তার অ্যান্টি-সেপ্টিক, অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল প্রপারটির মাধ্যমে তাও সারিয়ে তোলে। কয়েকটি ফুলের পাপড়ির সাথে গুঁড়ো দুধ, টক দই, মধু ও গাজর একসাথে পেস্ট করে নিন। এই প্যাক ত্বকের ডালনেস দূর করে। ব্রণে জর্জরিত পাঠকেরা সপ্তাহে ২ দিন করে এই প্যাক ব্যবহার করুন।

বেলি ফুলঃ

এর মাতাল করা গন্ধে ছোট বড় আমরা সবাই বিমোহিত হয়ে থাকি।

যাদের শুষ্ক ত্বক তারা এই প্যাকটি মুখে লাগাবেন সপ্তাহে ২ বার করে। দেখবেন ড্রাইনেস অনেকটাই কেটে গেছে। ফুলের বোঁটা থেকে পাপড়ি গুলো আলাদা করুন, তারপর ফুটন্ত পানিতে ছেড়ে ৩-৫ মিনিট রাখুন। পানি ছেঁকে নিয়ে দুধের মালাই এর সাথে পেস্ট করে নিন। মসৃণ ত্বক পাওয়ার জন্য প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন।

যাদের সেনসিটিভ ত্বক তারা টক দই এর সাথে ব্লেণ্ড করে মুখে লাগান। সপ্তাহে ১ বার করাই যথেষ্ট।

শাপলা ফুলঃ

যদিও এই ফুলটি আমাদের কাছে সহজলভ্য নয় তবুও একেবারে যে পাওয়াই যাবে না এমনটিও তো নয়। অনেক গুলো মিনেরালের সাথে শাপলাতে আছে লিনোলিক এসিড, যা ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতে বিশেষ ভাবে উপযোগী। প্যাকটি বানানোও খুব সহজ।

ফুলের পাপড়ি গুলো খুব ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর পানিতে ৪ মিনিট সেদ্ধ করে নিয়ে পেস্ট করে নিন। সঙ্গে দিতে পারেন টক দই আর মধু। চাইলে কিছু না মিশিয়েও শুধু ফুলের পেস্ট লাগিয়েও উপকার পাবেন। সেনসিটিভ ত্বক ছাড়া আর সবাই নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন।



জবা ফুলঃ

শীতকালে মোটামুটি সবাই ব্রণের সমস্যায় অতিষ্ঠ থাকি। কেননা ঘন ঘন ক্রিম ব্যবহারের ফলে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায় আর ধূলাবালির উপদ্রপ তো আছেই। কিছু জবা ফুলের পাপড়ির পেস্ট নিন এর সাথে চালের গুঁড়া, এসেন্সিয়াল অয়েল যেমন ভিটামিন ই আর অল্প পানি দিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে নিন। প্যাকটি মুখে লাগান সব ধরনের টক্সিন, তেল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য।

গোলাপ বেলির সংমিশ্রণঃ

অনেক সময় নরমাল বা মিশ্র ত্বক হঠাৎ করে শুষ্ক হয়ে ওঠে এই প্যাকটি তাদের জন্য বিশেষ ভাবে উপযোগী।

এর একটি কারণ হল এসিডিটি। আপনার গ্রহণকৃত খাবার বা আবহাওয়াগত কারণে ত্বক এসিডিক হয়ে যায়। এই সময় ত্বক শুষ্ক এবং ডাল দেখায়। গোলাপ বেলির মিশ্রণ ত্বকের এসিডিক নেচার অনেকখানি কমিয়ে দেয়। এক মুঠো গোলাপের পাপড়ি আর এক মুঠো বেলি ফুল নিন, এর সাথে ফ্রেশ কাঁচা দুধ মিশিয়ে হাত দিয়ে কচলে নিন।

এইবার প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। প্যাকটি দেয়ার পর হাতের তালুতে একটু গোলাপ জল নিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। এইভাবে সপ্তাহে ৩ দিন করে ১ মাস করুন।

এই ফুলগুলোর ভেতর যেসব প্রাকৃতিক উপাদান আছে তা আমাদের রূপচর্চার জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। তাই আর দেরি না করে উপভোগ করুন ফুলের কুসুম কুসুম স্পর্শ।



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।