আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপজেলা নির্বাচনে সরকারকে ছাড় দেবে না বিএন

বিনা চ্যালেঞ্জে উপজেলা নির্বাচন ছাড়বে না বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। বিগত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতো এবারও স্থানীয়ভাবে বিএনপি জোটের নেতা-কর্মীরা অংশ নেবে। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে একটি অর্থবহ সংলাপের আগে এই নির্বাচনের বিরোধী বিএনপি জোট। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি চিঠিও দেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিলেও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে আন্দোলনও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। জানা গেছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তৃণমূলে ১৮ দলীয় জোটের একক প্রার্থী থাকবে। খুব শীঘ্রই বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে মেয়াদোত্তীর্ণ শতাধিক উপজেলায় একসঙ্গে নির্বাচন হবে। শীঘ্রই উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। ধাপে ধাপে আগামী মে মাস পর্যন্ত বাকি উপজেলায় নির্বাচন হবে। সারা দেশে উপজেলার সংখ্যা ৪৮৭। এ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এম ওসমান ফারুক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উপজেলা নির্বাচন, স্থানীয় সরকারের একটি নির্বাচন। ইতিপূর্বে আমরা স্থানীয়ভাবে বিএনপি নেতা-কর্মী সমর্থকরা অংশ নিয়েছি। এবারও হয়তো তাই হবে। তবে এ নিয়ে এখনো দলীয়ভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপের আগে নির্বাচন কমিশনের এ ধরনের সিদ্ধান্ত দুরভিসন্ধিমূলক। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ইসি সে পথে এগোচ্ছে। কিন্তু যত ষড়যন্ত্রই হোক না কেন বিএনপিও ক্ষমতাসীনদের ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেবে না। প্রয়োজনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি জোট সমর্থিত স্থানীয় প্রার্থীরা অংশ নেবে। আর এতে বিএনপি জোটের প্রার্থীরাই বেশি জয়ী হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা। বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা মনে করেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আর জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক নয়। তাই সংসদ নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নেবে দলটি। উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপির সাম্প্রতিক সময়ে আন্দোলনের গতি আরও বেড়ে যাবে। নেতা-কর্মীরা মাঠে নামতে বাধ্য হবেন। এতে আগামী জুনের মধ্যে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবির আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। বিএনপির একাধিক নেতা জানান, একতরফা নির্বাচনের পর বর্তমান আওয়ামী লীগের সমর্থন শূন্যের কোটায়। এ পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে প্রায় সব উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন। আর বিএনপি সমর্থিতরা নির্বাচনে অংশ না নিলে সব জায়গায় সংসদ নির্বাচনের মতো একতরফাভাবে নির্বাচিত হবেন। আবার অনেক জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও নির্বাচিত হয়ে যাবেন। এতে ওই এলাকায় বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীরা আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বেন। তাই আওয়ামী লীগকে খালি মাঠে গোল করতে না দেওয়ার ব্যাপারে একমত তারা। এর আগে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের পর ২২ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট সমর্থিত নেতারা নির্বাচনে অংশ নিলেও বেশিরভাগ উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সমর্থিতরাই বিপুলভাবে বিজয়ী হন। তবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের মধ্যে সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় বিএনপি জোটের প্রার্থীরা বেশি বিজয়ী হন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী দল। মাঠপর্যায়ের রাজনীতির ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে স্থানীয় নির্বাচনের কোনো তুলনা করলে ঠিক হবে না। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মনোভাব দেখেই বিএনপি যথাসময়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান তিনি। দলের যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান বলেন, ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই এই মুহূর্তে যথাশীঘ্র সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সংলাপ জরুরি। এ নিয়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলও সংলাপের তাগিদ দিচ্ছে। ঠিক এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন উপজেলা নির্বাচনের তফসিল নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে। জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে আসার পরই এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.