আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাক ভালবাসা!! (রূপক গল্প,বাস্তবতার ছায়া অবলম্বনে)

বিশেষ তেমন কিছুই আমার নেই। সাধারন একটা মানুষ আমি।

প্রজাপতি,
এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েছে। সেটা ২০০৮ সালে। বন্ধু দের সাথে আড্ডা আর ঘোরাঘুরি করে তার দিন ভালই কেটে যেত।

প্রজাপতি এক্তু চাপা স্বভাবের। গায়ে পরে কার সাথে মিশত না। যাকে তার আপন মনে হয়, তার জন্য সে সব করতে পারে। একবার প্রজাপতির এক বন্ধু একটা আম গাছের চারা পায়। সে সেটা তার বন্ধুদের দেখায়।

চারাটা দেখে সবাই প্রশংসা করে। কিন্তু প্রজাপতির সেটা একটু বেশী ভাল লাগে। আমের চারাটারও প্রজাপতিকে বেশি ভাল লাগে। দুজন দুজনকে পছন্দ করে দেখে, শেষ পর্যন্ত প্রজাপতির বন্ধু চারাটা প্রজাপতিকে দিয়ে দেয়।
প্রজাপতিও চারা নিয়ে খুব খুশি।

কিছুদিন পরে তাদের মধ্যে খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়ে যায়। একে অন্যকে ছারা থাকতেই পারেনা। চারাটি একসময় প্রজাপতির কাছে বলে, দেখ আমাকে এভাবে বন্ধুর মত রাখলেই হবে না, আমার থেকে ফল পেতে হলে, আমাকে রোপণ করতে হবে। তোমার চাই ফল, আর আমার চাই মাটি ও পরিচর্যা।
প্রজাপতি তার বন্ধুদের সাথে কথা বলে নিতে চাইল, আম গাছকে বলল, তোমাকে কালকে জানাব।


বন্ধুদের সাথে আলোচনা করলে তারা বলে, গাছটা তো ভাল জাতের মনে হচ্ছে। তুই চাইলে লাগাবি। প্রজাপতি দেখল সবাই রোপণ করার পক্ষে। তাই সে পরে আম গাছটিকে বলল, আমি তোমাকে লাগাব।
মহাখুশি নিয়ে প্রজাপতি গাছ লাগায়।

আম গাছটি লাগিয়ে প্রজাপতি খুব আনন্দিত। এই আম গাছ কয়েক বছর পরে আম দিলে সে খাবে। আম গাছটাও সেটা ভেবে কি খুশি।
প্রজাপতি গাছের গোঁড়ায় প্রতিদিন পানি দিত। কোন আগাছা না জন্মায় সে খেয়াল নিত।

আম গাছটাও খুব উপভোগ করত। সে প্রানপনে চাইত প্রজাপতিকে দুনিয়ার সেরা আম দিবে। বহু দিন পরে যখন আম দেয়ার সময় হয়, তখন একটা ঝড় বয়ে যায়। সে ঝরে ঐ আম গাছটার থেকে আম হওয়ার সম্ভাবনা খুব কমে যায়। এটা প্রজাপতি জানত না।

সে যত্ন নিত, দেখ ভাল করত। কিন্তু এত দিনে তাদের মধ্যে যে ভালবাসা হয়েছে তাতে আম গাছটা নিরবে কেদে যেত। প্রজাপতি মাঝে মাঝে যখন আমের কথা বলত। তখন গাছের কাছে কোন সদুত্তর না থাকায় সে ক্ষেপে যেত।
গাছটা বলত না এই কারনে যে, যদি প্রজাপতি জানে তাহলে হয়ত আর পরিচর্যা করবেনা।

তাদের মধ্যে যে ভালবাসা হয়েছে, তা ভেঙ্গে যাবে।
কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলে। ২০১৩ সালের শেষে গাছটি বলে দেয়, দেখ প্রজাপতি তুমি আমাকে ভালোবাসো জানি, আমার থেকে ফল চাও তাও জানি। কিন্তু আমার ফল দেয়ার সম্ভাবনা খুব কম। তুমি পরিচর্যা করেই যাবে, শেষ পর্যন্ত হয়ত কোন দিন ফল পাবেনা।


প্রজাপতি শুনে কেদে ফেলে। কয়েক দিন কাদে। যাকে সে ভালবাসে তার ফল খেতে চায়, আজ সেই কিনা একথা বলে। গাছটি ও কাদে, কিন্তু প্রজাপতিকে বুঝতে দেয়না।
কয়েকদিন বাদে প্রজাপতি বুঝতে পারে এই গাছ থেকে কোন ফল পাওয়া যাবে না।

পেলেও সেটা কবে তা নিশ্চিত নয়। ফলে সে গাছটার পরিচর্যা বন্ধ করে দেয়। গাছটি তো একা থাকতে পারেনা। বারবার প্রজাপতিকে ডাকে। প্রজাপতি বার বারই উপেক্ষা করে যায়।


আম গাছটি বুঝতে পারে প্রজাপতিকে আর কখনও পাবে না। হয়ত সে অন্য গাছ খুজছে।
আম গাছটি বেহায়ার মত ডেকেই যায়।
একসময় গাছটি তার এক ভাইকে বিষয়টি বলে। তার ভাই বলে আচ্ছা প্রজাপতিকে ডেকে নিয়ে আস।

কথা বলি।
এবার গাছটির ডাক আবারও উপেক্ষা করে প্রজাপতি। সাথে বলেও দেয় আমি ব্যস্ত। ডিস্টার্ব করোনা।
ভিসন কষ্ট পায় গাছটি।

গাছের ভাইটা মাইন্ড করে একটু।
গাছটা হাল ছারে না। পরের দিন তার ভাইয়াকে বলে আবার ডাকার কথা বললে, গাছের ভাই বলে আচ্ছা ডাক এই শেষ বার। এবার না হলে আর বলবি না। গাছ মেনে নেয়।


গাছ এবার আবার ডাকে।
প্রজাপতি এবার সারা তো দেয়ই না, উল্টো ভুল বুঝে।

গাছটা বুঝতে পারে প্রজাপতি বিহীন সে কতটা একা।
এবার গাছটাও ঘুরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ভাবে নাহ আর ডাকাডাকি বা যোগাযোগ নয়।


সে আজ থেকেই প্রজাপতির সাথে না যোগাযোগ করে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।
কিন্তু প্রজাপতি জানলো না হয়ত পর্যাপ্ত পরিচর্যা, আর ভালবাসা পেলে আম গাছটি আবার ফল দিতে পারত।
কিন্তু এখন অনেক দেরী হয়ে গেছে। এবার গাছটাই যে নিজের সাথে প্রমিস করেছে, যতই কষ্ট হোক প্রজাপতিকে আর ডাকবে না।

পাঠক আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন আম গাছ কি ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে???
না হলে গল্পটা কীভাবে শেষ হলে ভাল হত???
বিঃ দ্রঃ প্রজাপতির আচরণ বদলানোর উপায় নেই।

আপনি গাছকে কি করতে হবে সেটা বলতে পারবেন।
আপনাদের মন্তব্য আশা করছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।