আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোনারগাঁয়ে অপহৃত স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার, আরেকজন নিখোঁজ

মুক্তিপণের দাবিতে দুই স্কুলছাত্রকে অপহরণের একদিন পর একজনের জবাই করা লাশ উদ্ধার করা হলেও অপরজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গতকাল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরে এ ঘটনা ঘটে। দুই স্কুলছাত্রের পরিবার ও পুলিশ জানায়, উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের পুরান কাঁচপুর গ্রামের ব্যবসায়ী শামসুল আলমের ছেলে স্থানীয় কাঁচপুর ওমর আলী উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র শাকিন আলম (৮) ও তার (শামসুল আলমের) বাড়ির ভাড়াটে উপজেলার সনমান্দি ইউনিয়নের সনমান্দি গ্রামের ব্যবসায়ী রহমত আলীর ছেলে একই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র জাহিদুল ইসলাম (১৩) প্রতিদিনের মতো একসঙ্গে বাড়ি থেকে স্কুলে যাচ্ছিল। পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে এ দুই ছাত্রকে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ার পরও বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাদের স্কুলসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে।

কোথাও না পেয়ে মঙ্গলবার রাতে দুই ছাত্রের পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। পরে রাত ৮টায় ০১৭৯১৪৬১৭৮০ নম্বর থেকে মোবাইল ফোন শাকিন আলমের মা সুমি বেগমের কাছে একটি ফোন আসে। অপহরণকারীরা ফোনে জানায় দুই ছাত্র তাদের হেফাজতে রয়েছে। তাদের ফিরে পেতে হলে ২০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দিতে হবে। অপহরণকারীদের চাহিদা মতো টাকা জোগাড় করে ওই নম্বরে পরিবারের পক্ষ থেকে ফোন করা হলে অপহরণকারীরা জানায় এ ঘটনা পুলিশকে জানানোর কারণে দুই ছাত্রকে আর বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

এ কথা বলেই ফোনের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ফোনটি বন্ধ করে রাখা হয়। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় নিখোঁজ হওয়ার পর গতকাল সকালে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের ভারগাঁও এলাকার বেড়িবাঁধের পাশের খালে বস্তাবন্দী একটি লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী খবর দিলে পুলিশ সকালে বস্তা খুলে একটি জবাই করা লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে স্কুলছাত্র জাহিদুল ইসলামের বাবা রহমত আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঘাতকের একটি মোবাইল সেট, একটি প্যান্ট ও একটি ছোরা উদ্ধার করে।

পুলিশ জাহিদুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। অন্যদিকে অপহৃত অপর ছাত্র শাকিন আলমের মা সুমি বেগমের কাছে অপহরণকারীরা গতকাল সকাল ১০টায় আবারও ফোন করে জানায় 'তোমার ছেলের পরিণাম জাহিদুল ইসলামের মতোই হবে। পুলিশকে না জানিয়ে আমাদের ১০ লাখ টাকা পেঁৗছে দাও। ' এ কথা বলেই মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। গতকাল উপজেলার সনমান্দি গ্রামে নিহত জাহিদুল ইসলামের বাবার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ওই গ্রাম ও আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছেন।

বাড়িতে মাতম। মা শাহিদা বেগম ও বাবা রহমত আলী বিলাপ করে কান্নাকাটি করছেন। তাদের এ কান্নায় উপস্থিত মানুষ কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। কুড়িগ্রামে মুক্তিপণ নিয়েও কিশোরকে হত্যা : অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে কুড়িগ্রামের মেধাবী স্কুলছাত্র রায়হানকে (১৩)। অপহরণের চার দিন পর গতকাল সন্ধ্যায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট সীমান্তবর্তী ধরলা নদীর কুরিলের চর এলাকায় বালু দিয়ে ঢাকা অবস্থায় রায়হানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত স্কুলছাত্র কুড়িগ্রাম শহরের কৃষ্ণপুর হাসপাতালপাড়া এলাকার মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী এরশাদুল হকের পুত্র এবং সে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র। পুলিশ ও অপহৃতর পরিবার জানায়, ১৮ জানুয়ারি রায়হানকে অপহরণ করে তার বাবার কাছে ৫ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। অপহরণকারীদের কথা মতো ২০ জানুয়ারি লালমনিরহাট শহরের নয়ারহাট এলাকায় মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রকে দেয় রায়হানের পরিবার।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।