আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাকরি নিয়ে "টেনশিত" ভাই বোনদের জন্য কিছু আশার বানী!

তুমি হয়ত সবকিছুতে ভালো নও, কিন্তু তোমার উচিৎ সবকিছুতেই তোমার নিজের সেরাটা ঢেলে দেয়া!


বাতাসে একটা গুজব সবসময়ই থাকে যে, যোগাযোগ না থাকলে নাকি জব হয়না। কথাটা শুধুমাত্র আংশিক সত্যি, পুরো সত্যি না। আমি এখনও অনেক ফোন পাই, অজানা অচেনা কেউ আমাকে ফোন করে বলে ভাই একটু ব্যবস্থা করেন বা একটু দেখেন। আমি বিনয়ী মানুষ, তাই কারও মুখের উপর বলতে পারি না যে ভাই নিজের যোগ্যতা না থাকলে যোগাযোগ দিয়েও কিছু হয় না। আর যদি সত্যিই যোগ্যতা থাকে, তাহলে কারোরই কোন সাহায্য আপনার দরকার নাই এমনিতেই আপনি পারবেন।

আমি শুধুমাত্র তাকেই রেকমেন্ড করতে পারি যাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি এবং তার যোগ্যতা সম্পর্কে জানি। যারা জব নিয়ে চিন্তায় আছেন, তাঁদের জন্য ইম্পরট্যান্ট কয়েকটা পয়েন্ট বলছি-

১. সবার উপরে নিজের যোগ্যতা, রেজাল্ট ভালো হওয়া আবশ্যক! মনে আছে ইউনি লাইফে অনেকে বলেছে যে রেজাল্ট দিয়ে কি হয়? জিনিসটা জানলেই হল। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে জিনিসটা জানতে হলে আপনাকে পড়তেই হবে, আর পড়লে রেজাল্ট ভালো না হওয়ার কোন কারন নাই। সব কোম্পানির HR চাইবে একটা ভালো ছাত্র/ছাত্রী কে নিতে, কারন রেজাল্ট দিয়ে বোঝা যায় যে সেই ক্যান্ডিডেট ইউনি লাইফে পড়াশুনা নিয়ে কতটা সিরিয়াস ছিল, এবং এ থেকে বোঝা যায় যে সে জব এ কতটা Responsible হবে। এরকম যদি কেউ থাকে যার রেজাল্ট ভালো না কিন্তু সে “জ্ঞানী”, তাহলে তার ব্যাডলাক...সে তার “জ্ঞান” দেখানোর সুযোগই পাবে না, কারন সে রিটেন টেস্ট এর জন্যই ডাক পাবে না রেজাল্ট খারাপ হবার কারনে।



২. “লিংক” না থাকলেও জব হয়; কারন কোম্পানিগুলা কাজ চায়, আত্মীয় না। কাজ করার জন্য ভালো ছেলেমেয়ে দরকার, তাই আপনি যদি নিজেকে প্রমান করতে পারেন কেউ আপনাকে আটকাতে পারবে না। কিছু কিছু “আত্মীয়” ঢুকে যাবেই, কিন্তু সবসময়ই কাজ করতে পারবে এমন ছেলে মেয়েদের নেয় সবাই। যদি ৪ টা ভ্যাকেন্সি থাকে, আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন এর মধ্যে অন্তত ২ জনকে নেওয়া হবে তাঁদের পারফরম্যান্স এর কারনে। তাই আপনার সুযোগ থাকছেই।



৩. ছোটোখাটো (আমার মত) লেভেলের কাউকে ধরে খুব একটা লাভ নাই, ধরলে একেবারে রাঘব বোয়াল ধরেন। এই যেমন চেয়ারম্যান বা এমডি বা জিএম...নিদেনপক্ষে ম্যানেজার লেভেল, বহুত ফায়দা হবে তাহলে!

৪. রিটেন টেস্ট এর আগে মোটামুটি একটা পড়াশুনা তো করা উচিৎ। খুব বেশী ক্রিটিক্যাল কিছু রিটেন টেস্ট এ থাকে না সাধারণত, বেসিক জিনিস সব। আপনি যে সেক্টরেই কাজ করেন না কেন, একেবারে অপ্রস্তুত অবস্থায় কোথাও চাকরীর জন্য যাওয়া আর না যাওয়া একই কথা।

৫. ভাইবা এর সময় ছেলে হলে টাই পড়া ভালো, জব হয়ে যাবার পর আর নাই পড়লেন! মেয়েদের একটু ফরমাল লুকে আসা উচিৎ, নট লাইক ইউ আর গোয়িং টু এ ওয়েডিং।

কনফিডেন্ট থাকবেন, যা বলবেন জোর দিয়ে বলবেন, ভুল শুদ্ধ ব্যাপার না। মনে রাখবেন এখন ইনফরমেশন পাওয়া একেবারেই সহজ, একটা মাত্র ক্লিকের মামলা। কিন্তু স্মার্টনেস বা কনফিডেন্স ক্লিক করলে আসবে না, আর সবাই এটাই চায়।

৬. ইন্টারভিউ বোর্ড এ গিয়ে ওভারস্মার্ট হলেও সমস্যা, চেষ্টা করবেন “কুল” থাকতে (কুল আফটার শেভ আর বডি স্প্রে মারতে পারেন) । কারন মাঝে মাঝে বোর্ডের সদস্যরা খামাখাই আপনাকে একটা স্ট্রেস কন্ডিশন এ ফেলে দিবে আপনার টেম্পারমেন্ট দেখার জন্য, সো মাথা ঠাণ্ডা।

আর বেয়াদবি করা যাবে না, আপনি যদি তাঁদের সাথে কোন বিষয়ে একমত নাও হন, উত্তেজিত হয়ে কিছু বলার চেষ্টা না করাই ভালো... এমন হতে পারে যে তারাই ঠিক, কারন তাঁদের অভিজ্ঞতা অনেক। চেষ্টা করবেন হাসিখুশি থাকতে, তাই যাওয়ার আগে দাঁত ভালো করে ব্রাশ করাও আবশ্যক!

৭. আমার জবটা খুব বেশী দরকার এই ধরনের কিছু বলা উচিৎ না, আপনি ইন্টারভিউ দিতে আসছেন মানেই আপনার এটা দরকার, আলাদা করে না বললেও হয়। এমন একটা সিচুয়েশন তৈরি করতে হবে যে, ওদেরকে আপনার যতটুকু দরকার তাঁর চেয়ে আপনাকে তাঁদের বেশী দরকার।

৮. যে কোম্পানিতে গেছেন যাওয়ার আগে অবশ্যই সেই কোম্পানি সম্পর্কে একটা আইডিয়া নিয়ে যাবেন। তাঁদের প্রোডাক্ট বা ধরন/কাজ নিয়ে কিছু জেনে যাবেন।

এ গুলো নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে, এছাড়া ভাইভা এর শেষে একটা কমন প্রশ্ন থাকে যে “আপনার কি আমাদের সম্পর্কে কোন প্রশ্ন আছে”? এতে যদি আপনি একটা ভালো প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে আপনার সম্পর্কে তাঁদের ইম্প্রেশনই চেঞ্জ হয়ে যাবে।

সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি হচ্ছে জব না করে নিজের স্বাধীন কিছু করা। আমার সেটা করার মত সাহস নাই (এই মুহূর্তে) বলে চাকরী করতে হচ্ছে! হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরেন, কেউই জীবনে এক যায়গায় আটকে থাকে না। এই সবগুলো পয়েন্টই আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেওয়া, কাজে লাগবে আশা করি। বেষ্ট অফ লাক!
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.