আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি ভালো নজির

দশম সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক থাকলেও এ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা সরকার দৃশ্যত নিজেদের বিতর্কের বাইরে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। এর প্রতিফলন ঘটেছে মন্ত্রিসভার বিভিন্ন বৈঠকে। এসব বৈঠকে এখন আর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের ডাকা হচ্ছে না। উপদেষ্টাদের মন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হলেও মন্ত্রীদের সঙ্গে তাদের সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। মন্ত্রীরা গোপনীয়তার শপথ নেন। উপদেষ্টাদের তা নিতে হয় না। ফলে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপদেষ্টাদের অংশগ্রহণ বাঞ্ছনীয় নয়। মহাজোট সরকারের বিগত পাঁচ বছরে এ ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘিত হয়েছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের পাশাপাশি উপদেষ্টাদের উপস্থিতি ছিল নিয়মিত ব্যাপার। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের উপস্থিতিও মন্ত্রিসভার বৈঠককে গুলজার করে রাখত। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে সমালোচনা উঠলেও সরকারের নীতিনির্ধারকরা ছিলেন নির্বিকার। দশম সংসদ নির্বাচনের পর সর্বক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার যে ইতিবাচক আগ্রহ সরকারের কাজকর্মে প্রতিফলিত হচ্ছে, মন্ত্রিসভার বৈঠকেও তার ছাপ পড়েছে। মহাজোট সরকারের প্রতিটি মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে হাট বসে যেত, এবার তা এড়িয়ে চলা হচ্ছে। স্মর্তব্য, দুনিয়ার সব গণতান্ত্রিক দেশে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাধারণত মন্ত্রীদেরই ডাকা হয়। ভারতে এ ধরনের বৈঠকে পূর্ণমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীরা অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। বাংলাদেশেও শুরু থেকেই এ ঐতিহ্য অনুসরণ করা হয়েছে। কিন্তু ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর নিয়ম ভঙ্গের প্রবণতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। দশম সংসদ নির্বাচনের পর দেশবাসীর কাছে সরকারের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের যে প্রয়াস চলছে, মন্ত্রিসভার বৈঠককেও সম্ভবত তার আওতায় আনা হয়েছে। বৈঠকে যাতে নিয়মনীতি মানা হয় সে চেষ্টা চলছে। স্মর্তব্য, বর্তমানে মন্ত্রী মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ উপদেষ্টা রয়েছেন। মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রীর সংখ্যা ১৭। এর মধ্যে পাঁচজন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রিসভার বৈঠকে শুধু পূর্ণমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীদের ডাকা হয়েছে। মন্ত্রিসভা বৈঠকে নিয়ম মেনে চলার এ প্রবণতা অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য। মন্ত্রিসভা সদস্যরা সরকারের নীতিনির্ধারকদের অন্তর্ভুক্ত। তারা নিয়ম না মানলে তা অন্যদেরও প্রভাবিত করবে এমনটিই স্বাভাবিক। আমরা আশা করব, নিয়ম মেনে চলার এ প্রবণতা সরকারের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.