আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খাগড়াছড়ি ভ্রমণ - প্রথম পর্ব

এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের ত ই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝিঁ পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ। http://zizipooka.com/

২৫ তারিখ রাতে “খাগড়াছড়ির পথে” রওনা হয়ে ২৭ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়িতে। শ্যামলীর বাস এসে তার শেষ গন্তব্য খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বরের সামনে আমাদের নামিয়ে দেয়।

বাস থেকে নেমেই দেখি অস্ত্রধারী কয়েকজন আইন-সিংখ্রলা বাহিনীর সদস্য দাঁড়িয়ে আছেন। আমি ওদের দিকে হেঁটে গেলাম, বাকিরা তখনো বাস থেকে লাগেজ নামাতে ব্যস্ত।

অনেকেই এদের সাথে কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেন, আমি করি না, বরং আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি এরা পথ আর হোটেল সম্পর্কে সবচেয়ে নির্ভর যোগ্য তথ্য দিতে পারেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। ওরা জানালো আসে পাশে কোন খুব ভালো মানের হোটেল নাই। মোটামুটি মানের হোটেল আছে। ভালো মানের হোটেল পেতে হলে যেতে হবে শহর থেকে সামান্য দূরে।

ওদের ধন্যবাদ জানিয়ে দলের কাছে ফিরে এলাম। যেহেতু সাথে ফ্যামিলি আছে তাই শহরের বাইরে হোটেলে ওটার প্রশ্নই আসেনা। ঠিক করলাম, সামনের রেস্টুরেন্টে সবাইকে বসিয়ে আমি আর ইস্রাফীল বেরবো কাছের হোটেলগুলির পরিস্থিতি দেখতে।

আমাদের সামনেই দেখলাম “মনটানা হোটেল” (রেস্টুরেন্ট), এখানেই সবাইকে বসে আপাতত সকালের নাস্তা করার কথা বলে আমরা দুজন বেরিয়ে এলাম।

আসে পাশে দুটি মোটামুটি মানের হোটেলের নাম পাওয়া গেলো একটির নাম মনে নাই।

অন্যটি নতুন হয়েছে “হোটেল নিলয়”। নাম মনে নাই হোটেলে গিয়ে দেখি চার তালা পর্যন্ত সমস্ত রুমে তাদের গেস্ট আছে। আমাদের লাগবে ৩টি কাপোল বেড ও একটি সিঙ্গেল। কাপোল বেডের ভাড়া দিতে হবে ৬০০/= টাকা আর সিঙ্গেল ৪০০/= টাকা। রুমগুলি মোটামুটি বড়ই বলা চলে।

আমাদের চলে যাবে, তবে সমস্যা হচ্ছে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে পাঁচ তালাতে উঠাটা পছন্দ হচ্ছে না। এখান থেকে বেরিয়ে ফিরে আসলাম রেস্টুরেন্টে। ৫ তালার কথা শুনে সবাই এক বাক্যে নিষেধ করে দিল।

আসে পাশে তেমন কোন হোটেল দেখলাম না। তাই নাস্তা করে গেলাম “হোটেল নিলয়”-এ।

শাপলা চত্বরের পাশেই। এখানেও নিচে কোন রুম নেই ৩ তালাতে একটি আর ৪ তালাতে বাকি গুলি দিতে পারবে। মাঝারি সাইজের রুম। কাপোল রুম ৫০০/= টাকা আর সিঙ্গেল রুম ৪০০/= টাকা করে। যেহেতু আমরা সকালের প্রথম গেস্ট আর অনেকগুলি রুম নিচ্ছি তাই আমাদের কাছে প্রতি রুমে ১০০ করে কম নিবে।



আমরা চিন্তা করলাম একটা রাতেরই ব্যাপার কোন রকমে কাটিয়ে দেই। আগামী কাল রাঙ্গামাটিতে ভালো কোন হোটেলে উঠবো। ইস্রাফীল গেলো বাকিদের নিয়ে আসতে আর আমি বেসে গেলাম হোটেলের ফর্ম পূরণ করতে। ৭টা ফর্ম পূরণ করতে করতে সকলেই চলে আসলো। আমি নিলাম ৩ তালার রুমটা বাকিরা উপরে।

তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে ওখানকার সিঁড়িটা কেমন করে যেন তৈরি করা মনে হল দোতালায় উঠেছি। এটা শুধু আমার কথা না, বাকিরাও একই কথা বলেছে।

যাইহোক, হোটেলে উঠে ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে পরবো ঘুরতে। এই প্রস্তাবে বসির রাজি হল না। আমাদের অস্থির ড্রাইভারের কারণে সারা রাত ঘুমাতে পারে নি, তাই এখন ঘুম দিবে।

আমি বললাম ঠিক আছে ১১টার মধ্যে সবাই বেরিয়ে পরব। আপাতত বিদায়, ওর রুমে ঢুকতে ঢুকতে বসির বলল - “১২টার আগে ঘুমই ভাংবো না”।





দিনের বেলা আমার ঘুম হয় না, একটু গড়াগড়ি করে উঠে পরলাম। বসির তার কথা রেখেছে ১২টার পরে ঘুম থেকে উঠেছে।

[খাগড়াছড়ির হোটেল "নিলয়" এর চার তালার বারান্দা থেকে নিচের ব্যস্ত রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি।

ঝকঝকে রোদ উঠেছে। বেরানোর জন্য অতি চমৎকার আবহাওয়া। সবাই রেডি, বসির এখনো ঘুমায়। ]


[সাইয়ারা, সব সময় সবার আগে রেডি]


সবাই যখন রেডি হয়ে বেরিয়েছি তখন দুপুরের খাবার সময় হয়ে গেছে। কোন দিকে না তাকিয়ে সেই “মনটানা” রেস্টুরেন্টেই গিয়ে বসলাম।



[বাম দিক থেকে স্বপন ও বসির]

খাবারের অর্ডার দেয়ার ফাঁকে আমি উঠে গিয়ে চাঁন্দের গাড়ী আর মাহেন্দার (একপ্রকার টেম্পো) এর ড্রাইভারদের সাথে আলাপ করে আসলাম। আমরা যাব, প্রথমে আলুটিলা গুহা, সেখান থেকে রিসং ঝর্ণা, শতবর্ষী বটগাছ আর ঝুলন্ত সেতু। চাঁন্দের গাড়ী চাইল ৪,৫০০/= টাকা, আর মাহেন্দার চাইলো ২,২০০/= টাকা। মোটামুটি একটা আইডিয়া নিয়ে আমি দুপুরের খাবারে ফিরে আসলাম।


[আমাদের ভাড়া করা গাড়ী আসছে, বিরক্তি নিয়ে অপেক্ষায় আছে সাইয়ারা আর বুসরা।

]
খাওয়া দাওয়া শেষে ঠিক করলাম একটি মাহেন্দার নিয়েই যাওয়া হবে। মাহেন্দার ড্রাইভার দের সাথে আলাপ করে শেষ পর্যন্ত ১,৮০০/= টাকায় রফা হল। শুরু হলে আমাদে যাত্রা......

[অনেকটা পথের সাওয়ারি আমরা, তাই বেশি করে তেল নিয়ে নিচ্ছে। ]


আমাদের প্রথম গন্তব্য শহর থেকে ৮কিঃ মিঃ পশ্চিমে আলুটিলা পাহাড় চূড়ায় আলুটিলা গুহা। চলতে শুরু করার কিছুক্ষণ পরেই শহরের মূল অংশ পার হতেই শুরু হলে পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা রাস্তা।



[পাহাড়ি পথ]


[এই রুক্ষতার মাঝেও ফুটেছে কিছু পাহাড়ি ফুল]



[ফুটেছে পাহাড়ি কাশফুল]



[এটা কিন্তু পাহাড়ি ফর না। ]



[পাহাড়ি ছড়ার উপরে এই ধরনের ব্রীজ অহরহই দেখা মিলে। ]
কোথাও উতরাই আবার কোথাও চড়াই। উতরাই গুলি সহসেই উত্রে যাচ্ছে, কিন্তু কিছু কিছু চড়াই এতটাই বেশি যে আমাদের মিনিমাম দু’জন নেমে যেতে হচ্ছে। এমনও দু-একটা চড়াই এসেছে যে খানে প্রায় সবাইকেই নামতে হয়েছে।




[আমাকে নামতে হয়েছে, নইলে এই চরাই চরতে পারবে না। ]


[শীতে পাতা ঝরছে সমস্ত গাছেদের]


[শীতের সময় পাহাড়ে বেরাবার সবচেয়ে খারাপ দিক এটা। পাহারগুলি থাকে মৃতপ্রায়। ]



[পাতা ঝরা রাবার বাগান]

ঁঁঁঁ এই পোস্টের সবগুলি ছবি তুলেছে বন্ধু “ইস্রাফীল “ঁঁঁঁ

প্রথম প্রকাশ :

এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।




অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.