আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ব ভাষা রাজ্যের রাজধাণী বাংলা ভাষা

সকল পরিবর্তনের সাথে আমি ছিলাম। আবারও এসেছি সেই পরম সত্য নিয়ে। তোমাদের মনের মাঝেই লুকিয়ে আছে সেই মহাকালের শক্তি। আজ তাকে জাগাবার দিন এসেছে।

বেশ কিছু বছর যাবত বাংলাভাষার সংস্কার নিয়ে অহরহ কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন অনেক টাইপের বাংলা ভাষা বোদ্ধাবৃন্দ্র।

কাজের কাজ হচ্ছে বলে এই মুহূর্তে মনে হচ্ছে না। এই সংস্কারের জন্য অনেকের মাথার চুল দিন দিন কমে যাচ্ছে এর ভিতরে আর এক জ্বালা নিয়ে হাজির হলেন এফ.এম. রেডিও সাথেব নামের পোলাপান। হায়রে কপাল? একে তো ভাষা সংস্কার করা যাচ্ছে না তার উপর আবার পোলাপানে টিটকারি কাটা। মন বলে আমাদের যুগই ভালো ছিলোরে ভাই সেই পন্ডিত স্যার কত কি জানতেন! এই বোধ নিয়েই বেশীরভাগ কলাম তৈরি হয় –আমাদের মতো সাধারণ কম জানা পাঠকরা তা ভুল করে হলেও পড়ে ফেলি। পড়ার পড়ে বুঝি যে ভাষা ভদ্রমহোদয়ের পন্ডিত স্যার তাকে শিখিয়েছে তা আমি বুঝলাম কি করে?

এ যেনো কাকের বাসায় কোকিলের ডিম পেরে পালিয়ে যাবার মতো।

কাকের দল কা কা করে সেই কোকিল কে খুঁজে বেড়াচ্ছে আর কোকিল কোথা থেকে যেনো কুহু কুহু করে ডাকছে। আর এই ডাকই যে বাঁধ সেধেছে। এমনিতেই খুঁজে পাচ্ছি না তার উপর আবার কুহু কুহু টিটকারী। আসলে ব্যাপারটা যদি কাকের কাছে বলি কালো কাকও লজ্জায লাল হয়ে গিয়ে জিহ্বায় কামড় দিয়ে লজ্জার ভাব প্রকাশ করবে। কাক চালাক পাখি।

সে বোঝে যে তার বাসায় কোকিল ডিম পাড়ল তাকে না খুঁজে বরং ডিমের ভিতরের কুশম দিয়ে কিছু একটা করা যেতে পারে। আমরা বুঝি না। তাই তো যে দল কোকিল খুঁজছে আর যারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে উভয় সম্প্রদায়ই কাকের নকল করা মানুষ দলই।

তাই তো একদল ভাষা নষ্ট বিনষ্ট হয়ে চুরমার হয়ে যাচ্ছে বলে বিশাল লম্ফ যম্ফ দিচ্ছেন আর বলছেন পোলাপানরা কি বাংলা ভাষার গুরুত্ব কি বুঝবে? যা বোঝার তাতো আমরাই বুঝি। চুল নাই তাতে কি মাথা তো আছে।

কিন্তু বোঝে না যে বেচারার টাক মাথার শুভ বুদ্ধি ঘরের বালবের আলোতে চান্দি গড়ম হয়ে বুদ্ধির আগে শুভ এসে গেছে।
আর পোলাপানে ভাষা বলে এফ.এম এর ভাষা যারা দিব্যি সুখে বাজিয়ে চলছেন। তারাও ভিতু হয়ে পোলাপানদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন, “থ্যাক ইউ স্মার্ট বালক আপনি যোশ করে শিট বলুন, হ্যায়, ডিরেক্ট তুমি আমার হামসফর” এসব বলে কয়ে এমন একখানা গান বজালেন তা আবার বাংলাই না আস্ত একখানা ইংরেজী গান। বাচ্চা ছেলেও ঐ গান শুনছে কিন্তু বোঝতে পারছে না। তাতে কি এ গান তো আর সবাই শুনতে পারে না।

কতো স্মার্ট স্মর্ট টমক্রজরা যে এই সব গান আমিরিকা, সুইজারল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়ায় বসে শোনেন। এ গান পাওয়াও ভাগ্যের ব্যাপার বলে এফ.এম. রেডিও ছেড়ে ব্যালকোনিতে গিয়ে প্রেমিকার সাথে কথা বলে। কথা বলার সময় খেয়ালই থাকে না যে কোন ভাষায় বলছি। তাইতো বন্ধু প্রেমের আবেগের কাছে কোন ভাষায় কথা বলছি তা দৌরবিদ বোল্টের মতো করেই দৌড়ে পালায়।

বাংলা ভাষা শ্রেষ্ট শ্রেষ্ট করলেই হবে না।

আমরা তা ভালোকরেই জানি। আজ যদি বিশ্বের ভাষা গুলোকে এক মাঠে দাঁড়া করিয়ে সুন্দরী প্রতিযোগীতার সুন্দরীদের মতো করে দাঁরা করানো যেতো তাহলে দেখা যেতো বাংলা ভাষার রূপ কতটা মারাত্বক। উক্ত ফ্যাশন শোতে বাংলা ভাষা দেবীকে এতো লম্বা আর নুরে ভরা উজ্জল মনে হতো যে, দর্শকের ভাষার মাথা খোঁজার জন্য আকাশের দিকে তাকাতে হতো। আর আমাদের মগজে যে সব ভাষাকে না বুঝেই সম্মান দিতে শিখানো হয়েছে তাদের দেখানো ঠ্যাং বিহীন কোনো বুড়ি মায়ের মতো যিনি আমাদের বাংলা ভাষার পায়ে হাত দিয়ে খাড়া হতে চাচ্ছেন অন্তত যতক্ষন পর্যন্ত না শো শেষ হচ্ছে।

যে ভাষায় একজন রবীন্দ্রনাথ আর একজন নজরুল আসেন সে ভাষার অন্য কবি-সাহিত্যিকদের সব সময় টেল এন্ড ব্যাটসম্যানের মতোই মনে হয়।

তাইতো আমাদের কাজে এতো অবহেলা।

বন্ধু! আমরা বাংলা ভাষা দিয়ে যা পেতে পারি তা অন্যান্য জাতিদের কল্পনা পর্যন্ত করাও সম্ভব নয়। শক্তি, ধন-সম্পত্তি, শিক্ষার দেব দেবী আছে তাই তো ভাষার দেবীকে হয়তো নারায়ন নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন। আর তার সব যত্নের রতন এই বাংলাকেই দিয়েছেন। যেমন করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর হাতে প্রতিরক্ষা দপ্তর থাকে।

আর আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্র অন্য একজন বলেই হয়তো বাংলা ভাষার সাথে ওদের ভাষার পূর্নতার এতো অভাবের তুলনা দেয়া যাচ্ছে।

মাইকেল মধুসুধন ইংরেজী ভাষায় মধু দিতেই গিয়েছিলেন। কিন্তু বোকা লাল জাত আমাদের মধুকে দুর দুর করে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাই তো আমাদের মধুসুধন মনে মনে হয়তো বলেছিলেন, “শালার ব্যাটারা দ্যাখ! আমি মধু কি না করে দেখাতে পারি। “ তাইতো ওদের গর্বের মেহগনী গাছের মতো সহযে বলে না এমন প্রজাতির সনেট এনে বাংলার মাটিতে পুতে দিলেন।

হায় হায় এ সনেটও বাংলার মাটি পেয়ে তরতাজা হয়ে উঠেছে। মেঘনা বধ কাব্যের সনেন আর ওদের সনেটের স্টাইল হয়তোবা এক কিন্তু ভাবের যে তিব্রতা তা দিয়ে মধুসুধন রাবনকেও নায়ক বানিয়ে ছাড়লেন।

ভাই বাংলাভাষার বন্ধু! আপনি যে বয়সেরই হোন না কেনো, যত কিছুই বলুন না কেনো আপনাকে আজ মানতেই হবে আমরা যে কারা তা আমরা জানি না বলেই এতো এতো সমস্যা। এবার যখন জেনেই গেছি তখন একঠেলায় পৃথিবীর বুড়ী মা মার্কা ভাষাকেও আমাদের ভাষার গুরুজন গুরুদেব রবিন্দ্রথাথ, নজরুল, বুদ্ধদেব, সৈয়দ শামসুল হক, হুমায়ূন আহমেদ সহ যারা যারা আছেন এমনকি মহাকবি আলাউল ওস্তাকেও যদি নিয়ে আসতে হয়। তারপরও আমাদের বাংলাভাষার ঐ সব ডাক্তারদের দিয়ে বাংলার হাসপাতালের বেডে বুড়ি মাকে ঝাঝালো লাইটের আলোর অপারেশন থিয়েটারে প্রয়োজন বোধে ওপেন হার্টসার্জারী করাবো তার সাথে যদি বাংলার ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, আঞ্চলিক ভাষার মলম লাগিয়ে হলেও বুড়ির পা ঠিক করা লাগে করবো।

তারপর ওরা বুঝবে মধুসুধন থেকে আজ পর্যন্ত তোরা কতো কতো নিরিহ কিন্তু শুধু বাংলা নয় বিশ্ব ভাষা রাজ্যের দেবতা ঠাকুরদের অপমান করেছো। শরত বাবু থাকরে আজ হয়তো হেমন্তকে ডেকে এনে গান লিখে, সিনেমা বানিয়ে উত্তম সুচিত্রার লিপসিংয়ের মাধ্যমে ব্যাঙ্গাত্ত্বক ভাবে দেখাতে পারতেন। প্রমথ চৌধুরী, বলাইচাঁদ, মুজতবা, কালাম, হোসেন, হাসান, কাদির, আহসান, সুকান্ত, আনিসুল, মিলন, শরীফ, পেমেন্দ্র, বিষ্ণ, সুধীন্দ্রনাথ, বিমল, আশরাফ সহ এমন কি বন্দে আলী মিয়ার সাথে জতিন্দ্র মোহন বাগচীও দাত বের করে হাসতেন। সেই হাসিতে পর্দার আড়াল থেকে হাসতে হাসতে বেড় হয়ে আসতেন রোকেয়া, কামিনী, সুফিয়া, রাবেয়া, সেলিনা, তাছলিম সহ সব বাঙালী নারী, এসে ডাকতেন জীবনান্দ, কায়কোবাদ আর হাকিম কে হাসার জন্য অনুরোধ করতেন। তারা বলতেন আমরা তো গম্ভীর হাসবো কি করে? ততোক্ষনে যা হবার তা হয়ে গেছে।

পুরো বিশ্ব বুঝে গেছে আমরা কে। তাইতো আজকের ডক্টর জাফর ইকবাল বিশাল বড় গোঁফ রেখেছেন যেনো বাংলার জন্য অনেক কিছু না করে গোঁফই ছাটবেন না। তারমাঝেও আজাদ, মহাদেব, মাহমুদ, শামসুর রাহমান তো জাফরকে গোফ কামতে বললেও তিনি তা করবেন না। উনি তো সায়েন্স বোঝেন।
আবারও বলছি আজ থেকে আমরা সাবজেক্টের বড়াই ছেড়ে দিয়ে সবাই একসাথে সব কিছু করে দেখাবো।

ইংরেজী ইউনিটি শব্দের ব্যবহার করেই বাংলায় তা করে দেখাবো। আর ইংরেজরা তখন একতাকে খুঁজতে গিয়ে পেয়ে বসবেন একাকিত্বকে তখন তাঁরাও সুখ খুঁজতে আমাদের পথেই সাত সমুদ্র তের নদী প্লেনে পাড়ি দিয়ে ছুটে এসে যাত্রাপালা দেখবেন। আমাদের আদী পুরুষদের সময় নাকি এক্সিবিশন নামের এক মেলা বসতো। সেখানে সব থাকতো। এখন মেলা বসে কিন্তু সব থাকে না।



আমরা ধর্ম, সায়েন্স, কবিতা, ফিকশন, ওয়েষ্টার্ন সহ কলা কৌশল সবই আছে কিন্তু কলাকে গছে রেখে কৌশল কে অনেক কাল যাবত শুধু ক্ষুধা পেটে দেখেই গেলাম।
আজ বুঝেছি বন্ধু! কলা আর কৌশল কে এক করে কলাকৌশল দেখাতে হবে। কর্ম আর বাপের শালা কে মামা বলেই দেখে অবাক নয়নে মিথ্যে “চালিয়ে চাও মামা” শুধু চায়ের দোকানে আর মুন্না ভাইয়ের মামু দেখেছি তাতে আমরা আজও পিছাতে পিছাতে হঠাত এমন করে এগিয়ে যাবো যে কর্ম আর শালাকে আলাদা না করে কর্মশালা বানিয়ে নিজেদের বিশ্বের মামা করেই আমাদের পিতাদের ত্যাগের ঋণ শোধ করবো।

ভাষা যাই হোক না কেনো মন তো বাঙালী। তাইতো আমাদের অগ্রগতিতে শুধু একটু অনুপ্রেরনার দরকার হয়।

যখন অনুপ্রেরনার জন্য ভাষা ব্যবহার করা হয় তখন সে ভাষায় ভুল থাকে না।

এজন্যই তো অনেক বক্তব্যে গোপারগঞ্জ ও আঞ্চলিকতার টান থাকলেও আমাদের বঙ্গবন্ধু ও বিশাল বড় মাপের রবীন্দ্রনাথ। রবিন্দ্রনাথা চালাতেন কলমের তরবারী আর রঙ্গবন্ধু তার জীবনকেই তরবারী বানিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালীর মর্জাদা পেয়ে গেছেন। দয়া করে এ বিষয়ে আর কোনো তর্কের অবকাশ নেই।

[আমিও বাংলাভাষার চলতি স্বাভাবিক রূপ রেখেই মার্জিত বাংলা ভাষা ব্যবহারের পক্ষে।

ভাষাতে গ্রহন করা যায় কিন্তু অসময়ে বিকৃত করার চেষ্টা অপরাধের পর্যায়ে পরে। ভাষা এমনি থেকেই আপন রূপ নিয়ে নেয়। সব অক্ষর ও যুক্তাক্ষর ঠিক রেখে কারের কিছু ব্যাপার পাল্টিয়ে খুব সহযেই সুন্দর লেখ্যরিতিকে ধরে রাখা যায়। সবাই আমরা এগিয়ে এলে আমাদের ভাষা আমির হোসেন আমুর মতো সংস্কার পন্থি থেকেও আবার মন্ত্রীত্ব পেতে পারে। ঝালকাঠীর সন্তান তো তাই আমির হোসেন আমুর নাম মুখ ফসকে বেড় হয়ে গেলো।

ভুল হলে মাফ করে দিবেন। আমি বয়সে হয়তো কম কিন্তু বেয়াদবি করতে পারি না, শিখিও নি। ভাষা বলার সময় যখন বয়সের প্রশ্ন আসে না তখন আজ বাবা-সন্তান এক হয়ে এই বাংলাদেশকে সুন্দর ও সত্যের পথে নিয়ে যেতে এতো আপত্তি কিসের?]

{বাংলা ভাষার উপর আমার অনেক কাজ আছে। অপেক্ষায় থাকবেন এ বাংলার খাদেম আপনাদের দিতেই এসেছে। সারাজীবন দিয়েও যে বাংলার গুণীদের ঋণ শোধ করা যায় না}



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.