আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমিরাতের বাঙালি বাজার: সমস্যা ও সম্ভাবনা

সম্পাদনা করি আমিরাত-বাংলা মাসিক মুকুল। ভালবাসি মা, মাটি ও মানুষকে..

আমিরাতের বাঙালি বাজার: সমস্যা ও সম্ভাবনা
লুৎফুর রহমান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৭টি স্টেট। স্টেটগুলো হলো- আবুধাবী, দুবাই, আল আ্ইন, শারজাহ, আজমান, রাস আল খাইমাহ, ফুজিরাহ, উম্ম আল কুয়াইন। আবুধাবী এ দেশের রাজধানী হলেও দুবাই পর্যটন নগরী হবার সুবাধে বাইরে থাকা অনেকের ধারণা দুবাই একটি দেশের নাম। এখানকার সবক'টি স্টেট এ বাঙালিদের পদচারণা ঘিরে গড়ে ওঠেছে 'বাংলাবাজার'।


বাংলাবাজার এ রয়েছে স্থায়ী দোকান-পাট। বাঙালিরা দেশের মতো স্বাচ্ছন্দে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এসব দোকান দিয়ে। কিন্তু এক শ্রেণীর নিম্ন আয়ের শ্রমিকরা দেশের মতো হাট-বাজার নিয়ে বসেন কিছু খোলা জায়গায়। একে বলা হয় 'বাঙালি বাজার'।
এসব বাজার বসে প্রতিদিন স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত।

শাক সব্জি, মাছ-মাংশ, ফলমুল সহ সকল আয়োজন থাকে এখানে। সেই সাথে থাকে নানা দেশী খাবারের আয়োজন। ঝাল-মুড়ি, দেশী দই, চানাচুর, আমলেট সহ সকল ধরণের আয়োজনে ভরপুর থাকে এসব বাজার। এদেশের আইন অনুযায়ি এসব বাজার সম্পূর্ণ বেআইনি তাই সিআইডি ও পুলিশের তাড়াতে নিত্য ভোগান্তি পোহাতে হয় বাঙালি দোকানীদের। সিআইডি এলে সকল মাল লুট করার আদেশ দেয় দোকানীরা ভয়ে দোকান রেখে পালিয়ে যান আবার লুট করে নেন এক শ্রেণীর ওত পাতা বাঙালি ও পাকিস্তানী লোকেরা।

এদেশে ব্যবসা করতে হলে ব্যবসায়ী লাইসেন্স লাগে সেই সাথে যে কোনো দোকান কোঠার লাগে চুক্তিনামা। কিন্তু বিনা লাইসেন্স ও চুক্তিনামার খোলা জায়গায় এসব ব্যবসা হামেশা করে যাচ্ছেন কিছু শ্রেণীর লোক। প্রথমত এসব বাজারে শুধুমাত্র বাঙালি ক্রেতা-বিক্রেতা থাকলেও এখন পাকিস্তানী কিছু লোকও নানা পশরা সাজিয়ে সমান তালে বসে থাকে। সেই সাথে সকল দেশের ত্রেতার আনাগোনা থাকে এ বাজারে। মূলত লেবার ক্যাম্পকে ঘিরে এসব বাজার জমে ওঠে।

দুবাইয়ের সোনাপুর, শারজাহ এর ন্যাশনাল পেইন্ট, আল আইনের আলামিন হোটেলের পাশে সহ সকল স্টেটের এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চলছে এমন বাজার।
এসব বাজার অবৈধ হলেও যেন এক টুকরো বাংলাদেশকে খোঁজে পাওয়া যায়। তেমনি পরদেশে দেশের অনেক খাবারের স্বাধও গ্রহণ করা যায় কমমূল্যে। সেইসাথে উৎসবপ্রিয় বাঙালিদের আড্ডা জমে ওঠে এসব বাজারকে ঘিরে। কিন্তু এসব বাজারে দেশের মেলার মতো নানা অবৈধ কাজ আমাদের বাঙালি সমাজের সুনাম নষ্ট করতেছে।

দেশের মেলায় যেমন পুলিশের তাড়া খেয়েও জুয়ার আসর আবার বসে। ঠিক তেমনি চিত্র এই আরব আমিরাতেও। এখানের জুয়ার আসর পরিচালনা করে একেকটি সিন্ডিকেট। এদের রয়েছে অনেক পুলাপাইন। জুয়া পরিচালনাকারী ছেলেদের মাসোহারা বেতনে রাখা হয়েছে।

এদের জানা আছে কেমনে একবার জুয়াড়ীর কাছে টাকা গেলে অন্যবার জুয়া পরিচালনার কাছে থাকে। এদেরকে অনেকবার পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। কেউ ছাড়া পায় কেউ আবার নি:স্ব হয়ে সোজা দেশে চলে যায়।
বাংলাদেশীদের জন্যে আমিরাতে ভিসা বন্ধ হয় ২০১২ সালের আগস্ট মাসে। কিন্তু এর আগ থেকেও ব্যালেন্স বেচা, পর্ণো সিডি বেচা ও এসব জুয়ার কারণে আরব আমিরাতের বাঙালিদের প্রতি এদেশের সিআইডি ও পুলিশের রয়েছে কড়া নজরদারী।

এসব নজরদারীর তোয়াক্কা না করে একদল অসাধু নিজের ফায়দা হাসিলে পুরো জাতির কপালে পরিয়ে দিচ্ছে কলংকের টিপ। এ নিয়ে স্তানয়ি বাঙালি কমিউনিটি ও এম্বসী সচেতনাতা মূলক প্রচারণা চালালেও অসাধুর কাছে সাধুর বচন যেন মেঘের খনা বচন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, অবৈধ প্রবাসীদের দিয়ে চালানো হচ্ছে এসব জুয়ার দান। কিন্তু যারা নেপথ্যের হোতা তারা অনেক টাকার মালিক। কিন্তু এরা থেকে যাচ্ছে সকল ধরাছোঁয়ার বাইরে।

এসব জুযার আসর বন্ধ না হলে আরব আমিরাতে ভিসা খুললেও বাংলাদেশীদের ইমেজ দিন দিন যে নীচে যাবে তা নি:সন্দেহে বলা যায়। এসব বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো রাস্তা নাই বলে মনে করেন কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা।
সম্পাদক: মাসিক মুকুল, দুবাই।
ইমেইল:

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.