আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুদ্ধের ময়দানে প্রেম**

বাস্তব গল্প কখনো কখনো নাটকীয়তায় ছাড়িয়ে যায় কল্প-কাহিনীকেও। এমনই এক গল্পের নায়িকা ছিলেন অ্যাডিথ হ্যান বিয়ার। ভদ্রমহিলার জন্ম অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়। নাৎসি পার্টি (আডলফ হিটলারের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টি) যখন ক্ষমতায় আসে তখন তিনি আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছিলেন। নিপীড়নমূলক বিতাড়ন কর্মসূচি শুরু হলে বিয়ারকে তালিকাভুক্ত করা হয় বাধ্যতামূলক শ্রমের জন্য। এক বছর পর, তিনি ট্রেনে করে পালানোর সুযোগ পান। ট্রেনে উঠে ভাবেন, ট্রেনটি তাকে তার নিজ শহরে নিয়ে যাবে। কিন্তু সে আশা পূরণ হয় না, একজন পরিচিত খ্রিস্টানের সাহায্য নিয়ে অ্যাডিথ হ্যান বিয়ার নার্সের পরিচয় নিয়ে ১৯৪২ সালে জার্মানির বায়ার্ন রাজ্যের রাজধানী মিউনিখে যান। এখানে এক আর্ট গ্যালারিতে তার ভবিষ্যৎ স্বামী ওয়ার্নার ভিটার নামক এক এসএস অফিসারের সঙ্গে পরিচয় হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শু্যুৎস-স্টাফেল (নিরাপত্তা বাহিনী) বা এসএস ছিল হিটলারের অন্যতম কুখ্যাত বাহিনী। এরা মূলত বন্দী শিবিরগুলোতে প্রহরী এবং বন্দীদের হত্যার কাজে নিযুক্ত ছিল।

এক সপ্তাহের প্রেমের পর ভিটার তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। সে সময় বিয়ার চাচ্ছিল বিয়ের ব্যাপারটাকে এড়িয়ে যেতে। কিন্তু ভিটার বিয়ের ব্যাপারে অনড় থাকে। সে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে, যুদ্ধের এই বাতাবরণে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক সময় নয়। কিন্তু ভিটার তার কোনো যুক্তিই শোনে না। অবশেষে প্রেমিকের কাছে হার মানেন তিনি, স্বীকার করে নেন, তিনি ইহুদি। সৌভাগ্যবশত, ভিটার তার প্রেমিকার আসল পরিচয় প্রকাশ করে না। তার একটি সন্তান ছিল এবং বিবাহবিচ্ছেদের মাঝামাঝি ছিল। তারা বিয়ে করে দাম্পত্য জীবন শুরু করে এবং বিয়ার বাধ্য গৃহিণীর ভূমিকা পালন করতে থাকে। যুদ্ধ শেষে ভিটারকে শ্রমশিবিরে পাঠানো হয়। তার অবর্তমানে বিয়ার তার ইহুদি পরিচয় প্রকাশ করে আইন পড়া শেষ করেন এবং আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.