আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজকের দিনটা খুব সুন্দর। কিন্তু আমি তা দেখতে পাচ্ছি না

আমি নষ্ট করেছি সময়, এখন সময় নষ্ট করছে আমায়

একজন অন্ধ বালক। একটা রাস্তার ধারে একটা সুন্দর ভবনের বাইরের সিঁড়িতে রোদের মধ্যে বসে আছে। তার হাতে তার টুপি টা উল্টো করে ধরা। তার আরেক হাতে একটা শক্ত কাগজের টুকরায় লেখা, ‘আমি অন্ধ, আমাকে সাহায্য করুন, প্লিজ। ’ তার টুপিতে অল্প কয়টা পয়সা পড়েছে।

লোকজন আসছে, যাচ্ছে। বেশির ভাগই তাকে সাহায্য না করেই পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। একজন লোক কিন্তু ছেলেটার পাশে দাঁড়ালেন। তিনি পকেট থেকে খুচরা পয়সা বের করে ছেলেটার টুপিতে রাখলেন। দেখলেন, ছেলেটা খুব কম পয়সাই এ পর্যন্ত অর্জন করতে পেরেছে।

তিনি ছেলেটার হাতের কার্ডটার দিকে তাকালেন। দেখলেন লেখা, ‘আমি অন্ধ, আমাকে সাহায্য করুন, প্লিজ। ’ তিনি তখন ওই কাগজটা ছেলেটার হাত থেকে নিলেন। কাগজের উল্টো পিঠে তিনি নতুন দুটো বাক্য লিখলেন। তারপর ছেলেটার হাতে সেই কাগজটা ধরিয়ে দিয়ে তিনি চলে গেলেন।

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছেলেটা লক্ষ করল, এরপর দ্রুত তার টুপিতে টাকা-পয়সা পড়ছে। খুব শিগগির ছেলেটার টুপি ভরে গেল। বিকেলবেলা। অন্ধ ছেলেটা টের পেল, সেই লোকটার পায়ের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে, যে কিনা তার সাইনবোর্ডটার কথা বদলে দিয়েছিল। সেই ভদ্রলোকও তার ওই কীর্তির ফলটা কী দাঁড়াল, তা দেখতে এসেছেন।

এসে দেখলেন, হ্যাঁ, তার নতুন বাণীতে কাজ হয়েছে। ছেলেটার টুপি টাকায় গেছে ভরে। অন্ধ ছেলেটা বলল, ‘আপনি কি সেই ভদ্রলোক, যিনি আমার হাতের কার্ডের লেখা বদলে দিয়েছিলেন?’
‘হ্যাঁ। আমি সেই লোক। ’

‘আচ্ছা, আপনি কী করলেন যে আমার টুপি ভরে উঠল?’

‘আমি কিছুই করিনি।

শুধু সত্যটা প্রকাশ করেছি। ’

‘মানে কী?’

‘মানে কিছুই না। তোমার কার্ডে যা লেখা ছিল, সেটাই আমি একটু অন্যভাবে প্রকাশ করেছিলাম। আমি লিখেছিলাম, ‘আজকের দিনটা খুব সুন্দর। কিন্তু আমি তা দেখতে পাচ্ছি না।



‘তাতেই এত পয়সা এল?’ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ছেলেটা বিস্মিত!

‘হ্যাঁ। তোমার কথাটা ছিল, তুমি অন্ধ। আমিও তা-ই লিখেছি। কিন্তু অন্য রকম করে। আমি লিখেছি যে আজকের দিনটা সুন্দর, কিন্তু তুমি তা দেখতে পাচ্ছ না।

এতে নতুন কী যুক্ত হলো? এক. আমরা ব্যাপারটা শুরু করলাম ইতিবাচকভাবে। আজকের দিনটা সুন্দর, এই সুন্দর কথাটা অন্যের সঙ্গে শেয়ার করছি, যাঁরা জানছেন, তাঁদেরও মন ভালো হয়ে যাচ্ছে। তারপরের কথাটা তোমারই কথা যে তুমি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। তুমি এটা দেখতে পাচ্ছ না। তাতে যাঁরা এটা পড়ছেন, তাঁরা বুঝতে পারলেন, তাঁরা কত সৌভাগ্যবান।

আমাদের প্রত্যেকেরই নিশ্চয়ই এক শ কারণ আছে মন ভার করে থাকার। কিন্তু ভেবে দেখো, এক হাজারটা কারণ আমাদের প্রত্যেকের আছে, মনটা ভালো রাখার। আমরা প্রত্যেকেই কত সৌভাগ্যবান। শোনো, অতীতের দিকে তাকাবে, কোনো দুঃখবোধ ছাড়াই। বর্তমানকে গ্রহণ করবে সাহসিকতার সঙ্গে।

ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে। ’

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য হলো, কাউকে হাসতে দেখা। তার চেয়েও ভালো লাগবে, যদি আমি জানতে পারি, আমার কারণেই একজনের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।

আসলেই তো, অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে পারার চেয়ে সুখকর কাজ আর কী আছে! আমাদের চারপাশের বাস্তবতাকে আমরা নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে পারি, আবার ইতিবাচক দৃষ্টিতেও দেখতে পারি। জীবনটাকে প্রতি মুহূর্তে ইতিবাচক ভঙ্গিতে দেখার চেষ্টা করা উচিত।



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।