আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলাম কী বন্দীনী নারী বা দাসীর সাথে সেক্স করার অনুমতি দেয়?

সহীহ বোখারী ও মুসলিম শরীফের সকল হাদিস শায়খুল হাদিস মাওলানা মুহাম্মদ আজিজুল হকের অনুবাদকৃত হাদিস থেকে নেয়া হয়েছে।

এ সম্পর্কে সহীহ মুসলিম শরীফে বলা হয়েছে (৩৪৭৫) ওবায়েদুল্লাহ ইবনে ওমর ইবনে মাইসারা কাওয়ারীরী (রঃ) রেওয়ায়েত করেছেন, আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেছেন, যে রাসূলে পাক (সাঃ) হুনাইনের যুদ্ধের সময় একটি দলকে আওতাসের দিকে প্রেরণ করেন। তাঁরা শত্রু দলের সামনা-সামনি যুদ্ধ করে জয় লাভ করেন। তাঁরা অনেক শত্রুকে বন্দীও করেন। এঁদের মধ্যকার দাসীদের সাথে মিলিত হওয়া, কতিপয় সাহাবী না জায়েয মনে করলেন।

কেননা তাঁদের স্বামী বর্তমান ছিল। তখন এই আয়াত নাযিল হল, “এবং নারীদের মধ্যে তাঁদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাঁদের মালিক হয়ে যায়”। -যখন তাঁরা তাঁদের ইদ্দত পূর্ণ করবে।
এক্ষেত্রে বলা হয়েছে ‘ইসতিবরার’ কথা। মানে তা হল নারীদের এক হায়েয অতিক্রম হওয়া পর্যন্ত সময়।

তারপর মিলিত হলে কোনো সমস্যা নেই।
পবিত্র কোরআনে সূরা নিসায় উপরোক্ত হাদিসে বর্ণিত আয়াতে বলা হয়েছে (২৪) এবং নারীদের মধ্যে তাঁদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাঁদের মালিক হয়ে যায়। এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এঁদের ছাড়া তোমাদের জন্য সব নারী হালাল করা হয়েছে। শর্ত এই যে তোমরা তাঁদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য, ব্যাভিচারের জন্য নয়।

অনন্তর তাঁদের মধ্যে যাঁকে তোমরা ভোগ করবে, তাঁকে তাঁর নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোনো গোনাহ হবে না, যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরষ্পরে সম্মত হও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ।
স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা যায়, যে পবিত্র কোরআন এবং সহীহ হাদিসের মতে ইসলামে বা মুসলমান সমাজের মধ্যে যুদ্ধ বন্দীনী বা দাসীর সাথে মিলিত হওয়া বৈধ ছিল। তবে, এ সম্পর্কিত আরো কিছু হাদিসের বর্ণনা মতে, সেটা শুধু ইসলামের প্রাথমিক যুগেই বৈধ ছিল।

পরবর্তীতে তা অবৈধ হয়ে যায়।
এর সমর্থনে সহীহ মুসলিম শরীফে বলা হয়েছে (৩২৮৬) আবু বকর ইবনে আবী শায়বাহ (রঃ) রেওয়ায়েত করেছেন, আইয়্যাশ ইবনে সালামাহ তাঁর পিতার সূত্রে বলেছেন, রাসূলে পাক (সাঃ) আওতাস যুদ্ধের বছর তিনদিনের মোতআ বিবাহের অনুমতি দান করেছিলেন। তারপর তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
একই কাজ করতে ওমর (রাঃ)-ও নিষেধ করেছেন [দ্রঃ সহীহ মুসলিম-৩২৮৫]।
ওপরের রেফারেন্সগুলোতে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, যে সহীহ মুসলিমের ৩৪৭৫ নম্বর হাদিস অনুযায়ী পবিত্র কোরআনে সূরা নিসার ২৪ নম্বর আয়াতটি নাযিল হয়েছিল, আওতাস যুদ্ধের সময়।

তারপর সহীহ মুসলিমের ৩২৮৫ এবং ৩২৮৬ নম্বর হাদিস অনুযায়ী, তা চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
এবার আসি মোতআ বিবাহের বিষয়ে। মোতআ হল এক ধরণের সাময়িক বা অস্থায়ী বিবাহ। যা একটি সময়ের জন্য মহরের বিনিময়ে কোনো স্ত্রী লোকের সাথে অনুষ্টিত হয়। নির্দিষ্ট সময় সীমা অতিক্রম হওয়ার সাথে সাথে আপনা হতে এ বিবাহ ভঙ্গ হয়ে যায়।

এর জন্য তালাকের দরকার হয় না। এ বিবাহ প্রথাটি আরবে ইসলামপূর্ব যুগে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। ইসলামের প্রাথমিক যুগেও এর অনুমতি ছিল। পরে রাসূল পাক (সাঃ) কিয়ামত পর্যন্ত এর নিষিদ্ধতা ঘোষণা করেন।
সহীহ মুসলিম শরীফে এটাও বলা হয়েছে (৩২৮৭) রাসূল পাক (সাঃ) বলেন, কারো নিকট মোতআ বিবাহের সূত্রে কোনো স্ত্রী থাকলে, সে যেন তাঁকে পরিত্যাগ করে।


সহীহ মুসলিম শরীফের অন্য এক হাদিসে বলা হয়েছে (৩৪২৯) মুহাম্মদ ইবনে মুছান্না এবং মুহাম্মদ ইবনে বাশশার (রঃ) রেওয়ায়েত করেছেন, আবু দারদা (রাঃ) বলেন, যে একদা আসন্ন প্রসবা এক গর্ভবতী দাসীকে কেউ তাঁবুর দরজার নিকটে নিয়ে এলে রাসূল (সাঃ) বললেন, মনে হয় লোকটি উহার সাথে মিলন প্রত্যাশী। লোকগণ বলল, হ্যা। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, ইচ্ছা হয় আমি তাঁকে এমন অভিশাপ দেই, যে সে অভিশাপ সহকারে কবরে প্রবেশ করে। কি করে সে তাঁর দাসীর গর্ভস্থ সন্তানকে ওয়ারিছ ও খাদেম বানাতে চায়? অথচ তা তাঁর জন্য বৈধ নয়।





এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.