আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাষা আন্দোলন : হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দী-মুজিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

মহাত্মা গান্ধী ও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে বঙ্গবন্ধু (ডানে দন্ডায়মান)

প্রিয় নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে রাজশাহীতে।


১৯৪৯ সালে হুসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে শেখ মুজিব

“বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্ত যখন পাকিস্তান আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন সে বিশ্বাস করে যে, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যাপারে হিন্দুই তাকে দাবিয়ে রেখেছে। পাকিস্তান অর্জিত হলেই তার আত্মবিকাশের সব দরজা খুলে যাবে। ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে যখন ঢাকা পৌঁছাইৃ কদিন পরেই দেখি দেয়ালে আঁটা পোস্টারÑ ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’।

ৃ পূর্ব-বাংলার মানুষ দেখলো তার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের পথ প্রসারিত হওয়ার পরিবর্তে সঙ্কুচিতই হচ্ছে”। মন্তব্যটি প্রখ্যাত ‘সংবাদ’-সম্পাদক জহুর হোসেন চৌধুরীর। প্রকৃতপক্ষে ভাষা-আন্দোলনই স্বায়ত্তশাসনের দাবির পথ ধরে বাঙালিকে নিয়ে গিয়েছিল একাত্তরের জীবন-বাজি মুক্তিযুদ্ধে। অনস্বীকার্য যে, বাঙালির রাজনৈতিক চেতনার ভিত্তিটি রচিত হয়েছেÑ চির স্মরণীয় ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে।
আজ, ফেব্রুয়ারি-২০১৪’র বিদায়ের প্রাক্কালে স্মরণ করছি, ভাষা-সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে বাঙালির চারজন প্রধান নেতার অবস্থান-দৃষ্টিভঙ্গি-তৎপরতার কথা।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের আগে বাঙালি-জীবনের প্রধানতম ঘটনা-বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল বহু নিবেদিত-প্রাণ মানুষের প্রচেষ্টায়। তার ভেতর থেকে আজ ফিরে তাকাবÑ আমাদের রাজনীতির চার প্রধান – হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দী-মুজিবের দিকে। পূর্বাপর সুদীর্ঘ ভাষা-সংগ্রামের কথা একটি নাতিদীর্ঘ নিবন্ধে উল্লেখের প্রচেষ্টাটি বড়জোর বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন মাত্রÑ ততোধিক কিছুই নয়।
দুই. উল্লেখ্য যে, মুসলিম লীগের দিল্লি কনভেনশনে (১৯৪৬) জিন্নার অভিপ্রায়ে ঐতিহাসিক ‘লাহোর প্রস্তাব’ (১৯৪০) পাল্টানো হয়েছিল। ‘লাহোর প্রস্তাব’-এ ছিল ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলো নিয়ে একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা, আর দিল্লি কনভেনশনের ঘোষণায় বলা হয়েছিল একক রাষ্ট্রের কথা।

দুরভিসন্ধিটা সচেতন তরুণ সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নজর এড়ায়নি। তখনই গণআজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক যুবলীগ ও তমদ্দুন মজলিস বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার লক্ষ্যে গণসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। ১৯৪৭-এর শেষ দিকে তমদ্দুন মজলিসের উদ্যোগে গঠিত হয় প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।
মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা (৪-০১-৪৮) করে শেখ মুজিবুর রহমান সক্রিয়ভাবে ভাষা আন্দোলনে যোগ দেন। ২৮-০২-৪৮, তমদ্দুন মজলিস ও মুসলিম ছাত্রলীগের সভায় ভাষার দাবিতে ১১মার্চ সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে সাধারণ ধর্মঘট আনুষ্ঠানের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছিলেন শেখ মুজিব, নইমুদ্দিন আহম্মদ, আব্দুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।

১১ মার্চ ১৯৪৮ পিকেটিং করার সময় পুলিশ মুজিবকে গ্রেপ্তার করে। “এই গ্রেপ্তারের ভেতর দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনের এবং পূর্ব বাংলার তরুণদের অন্যতম নেতায় পরিণত হন। ৃ ভাষা আন্দোলনের এই পর্বৃ যাদের দূরদৃষ্টি ছিল তারা বুঝতে পারে যে, পূর্ব বাংলার রাজনীতি একটি নতুন পথে যাচ্ছে। সে-পথ আর যা-ই হোক ধর্মীয় অন্ধকারের ভেতর থাকবে না”। ১১ মার্চ ছাত্র-নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করেও মুখ্যমন্ত্রী নাজিমুদ্দিনের অস্বস্তি কাটেনি।

কারণ, কদিন পরেই গভর্নর জেনারেল জিন্নাহ ঢাকায় আসবেন। নাজিমুদ্দিন তখন ছাত্রদের দাবি মেনে একটি চুক্তি করে ছাত্র-নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। চুক্তিপত্রটিতে কারাবন্দী মুজিবের অনুমোদন নিতে হয়েছিল।
ভাষা-আন্দোলনের গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম লিখেছেন : কারামুক্তির পর শেখ মুজিবকে “বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠেৃছাত্রসভায় প্রথম বক্তৃতা করতে শুনি। ৃ খাজা নাজিমুদ্দিন ছাত্রদের দাবি মেনে চুক্তিপত্রে সই দিয়েছেন, বন্দী ছাত্রনেতারা মুক্তি পেয়েছেন, তারপরেওৃ (মুজিব) সেই সভায় নাজিমুদ্দিনের চুক্তিভঙ্গের আশঙ্কা প্রকাশৃকরেছিলেন।

ৃ মুজিবৃ দ্বিতীয়বারের মতো গ্রেপ্তার হয়ে এটা যথার্থভাবেই প্রমাণ করেছিলেন যে, খাজা নাজিমুদ্দিন চুক্তিভঙ্গকারী”। ১৫ মার্চ ১৯৪৮ মুজিব আবার কারামুক্তি পেয়েছিলেন। ভাষা-আন্দোলন নতুন মাত্রা পেলো, যখন ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্সের জনসভায় জিন্নাহ ঘোষণা করেছিলেন, “খবঃ সব সধশব রঃ াবৎু পষবধৎৃঃযধঃ ঃযব ঝঃধঃব খধহমঁধমব ড়ভ চশরংঃধহ রং মড়রহম ঃড় নব টৎফঁ, ধহফ হড় ড়ঃযবৎ ষধহমঁধমব”। মাত্র তিনদিন পরেই কার্জন হলে প্রদত্ত সমাবর্তন বক্তৃতায় জিন্নাহ বলেছিলেন – “ঋড়ৎ ঃযব ংধশব ড়ভ ওংষধস ও যধাব ফবপরফবফ ঃযধঃ টৎফঁ ধষড়হব ংযধষষ নব ঃযব ংঃধঃব ষধহমঁধমব ড়ভ চধশরংঃধহ” ।
সেই সভায় ছাত্রনেতা শেখ মুজিব এবং ফজলুল করিম প্রতিবাদী-কণ্ঠে বলেছিলেন – “ঘড়, ঘড়, ইধহমষধ, বি ধিহঃ ইবহমধষর ংযধষষ নব ঃযব ংঃধঃব ষধহমঁধমব ড়ভ চধশরংঃধহ” ।

কম্যুনিস্ট-নেতা খোকা রায়ের পর্যবেক্ষণ : “ঐ প্রতিবাদৃ অল্প-সংখ্যক ছাত্রের কণ্ঠ হতে ধ্বনিত হলেও,ৃ বোঝা যাচ্ছিল যে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাঁদের মাতৃভাষার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসক-গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারী ও প্রতিক্রিয়াশীল নীতি মেনে নিতে রাজি ছিল না”। জিন্নাহর ঘোষণাটিই বাঙালির ভাষার দাবিকে রাষ্ট্রভাষার আন্দোলনে পরিণত করেছিল। রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করায় ১৯৪৯-এর ২৫ এপ্রিল শেখ মুজিবসহ ২৪ জনকে জননিরাপত্তা আইনে-গ্রেপ্তার করা হয়। “ব্যক্তিগত মুচলেকা প্রদানের মাধ্যমে অনেকেই নিজেদেরকে ছাড়িয়ে নেন, কিন্তু শেখ মুজিব ছিলেন আদর্শ ও নীতিতে অটল। তাই ভাষা আন্দোলনের চরম মুহূর্তেও (২১ ফেব্রুয়ারি ’৫২) তিনি জেলখানা থেকে ছাড়া পাননি”।


২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২, পুলিশের গুলিবর্ষণে ছাত্র-জনতার হত্যার পরেই আইন-পরিষদের প্রগতিশীল সদস্যবর্গ অধিবেশন বয়কটের প্রস্তাব এনে হত্যাকা-ের বিচার দাবি করেছিলেন। “তখন বাঙালি-সন্তান মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন নির্লিপ্তভাবে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বললেন, “ওঃ রং ধ ভধহঃধংঃরপ ংঃড়ৎুৃ উচ্ছৃঙ্খলতা দমনের জন্য পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে। ৃকারো মৃত্যু হলে আমরা কি করতে পারি?ৃ এর পেছনে কম্যুনিস্ট এবং হিন্দুদের উস্কানি রয়েছে। আমরা এদের নির্মূল করবো ইনশাল্লাহৃ”।
তিন. ভাষা আন্দোলনের প্রস্তুতির সময় উদার রাজনৈতিক দল গড়ে তোলার মতো উদার দৃষ্টিভঙ্গিসম্পন্ন নেতার অভাব ছিলÑ সোহরাওয়ার্দী তখনো ভারতে, শেরে বাংলা নিশ্চুপ।

তখনই ভাসানীকে আসাম থেকে নিয়ে আসার জন্য শেখ মুজিব উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। ২৬ জানুয়ারি ১৯৫২, পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দিন “ঢাকা সফরে এসে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দিলে ভাষার আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে”। নাজিমুদ্দিনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাতে কারাবন্দী মুজিব রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদকে আহ্বান জানালে ৩১ জানুয়ারি মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল ‘সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’। ৭ ফেব্রুয়ারি মওলানা ভাসানীকে সভাপতি, কে. জি. মাহবুবকে আহ্বায়ক করে ছোট আকারে সর্বদলীয় কমিটি গঠন করে ২১ ফেব্রুয়ারি সাধারণ ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে ৭ ফেব্রুয়ারির পরেই ভাসানী গ্রামে চলে গিয়েছিলেন।

শেরে বাংলা ফজলুল হককে সর্বদলীয় কমিটির সদস্য করা হলে তিনি আপত্তি জানিয়েছিলেন। ১৫ মে, ১৯৫২ দেশময় বাংলা ভাষার পক্ষে স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করা হয়েছিল। কিছুদিন পরে ঢাকায় প্রকাশিত বাংলা ভাষা-সমর্থক বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের নাম-তালিকায় সোহরাওয়ার্দী এবং ফজলুল হকÑ উভয়ের নামই ছিল। কিন্তু হক সাহেব প্রকাশ্য ঘোষণায় বলেছিলেন, তাঁর শত্রুরাই মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিনের সঙ্গে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্যই তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। এ বিষয়ে পর্যবেক্ষকদের মন্তব্যÑ ফজলুল হক “উরফ হড়ঃ ধিহঃ ঃড় লবড়ঢ়ধৎফরুব যরং ষঁপৎধঃরাব ঢ়ড়ংরঃরড়হ ধং অফাড়পধঃব এবহবৎধষ”।

তবে তিনি দীর্ঘকাল সরকারি পদ কিংবা নুরুল আমিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারেননি। অতঃপর তিনি নতুন দল ‘কৃষক-প্রজা পার্টি’ গঠন করেছিলেন।
করাচির বাসিন্দা সোহরাওয়ার্দী পূর্ব-বাংলার ভাষা-আন্দোলনের ঘটনাবলী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। বায়ান্নর ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র-জনতার হত্যাকা-ের পরে তিনি পুলিশের বাড়াবাড়ির নিন্দা করেও বলেছিলেন, “টৎফঁ, রহ যরং ড়ঢ়রহরড়হ, ংযড়ঁষফ নব ঃযব ংঃধঃব ষধহমঁধমব”। তাঁর এ বক্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই বাঙালি জনমনে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছিল।

তখন শেখ মুজিব করাচি গিয়ে তাঁকে সবটুকু বিষয় বুঝিয়ে বলার পর সোহরাওয়ার্দী “ওংংঁবফ ধহড়ঃযবৎ ংঃধঃবসবহঃ বীঢ়ৎবংংরহম যরং ভঁষষ ংঁঢ়ঢ়ড়ৎঃ ভড়ৎ ইবহমধষর ধং ধ ংঃধঃব ষধহমঁধমব”। ২০ নভেম্বর ১৯৫২, ঢাকার বিশাল জনসভায় সোহরাওয়ার্দী বলেছিলেন, “বাংলা এবং উর্দু উভয় ভাষাই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে এ মত আমি বহু পূর্বে ঘোষণা করেছি। কিন্তু পূর্ব-পাকিস্তানে যখন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন করা হচ্ছিল, তখন আমার বক্তৃতা বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছিল। যে ‘রেডিও পাকিস্তান’ আমার কোনো কথা ইতোপূর্বে প্রচার করেনি, সেই রেডিও থেকে বিবৃতি বিকৃত করে ৩ দিন ধরে প্রচার করা হয়”।
চার. প্রসঙ্গতই অনস্বীকার্য যে, সোহরাওয়ার্দী-মুজিব কেউই পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতায় বিশ্বাসী ছিলেন না।

দুজনেই উভয় অংশের সুষম বিকাশে আস্থাশীল ছিলেন। সোহরাওয়ার্দী ২০ নভেম্বর ১৯৫২ ঢাকার জনসভায় ব্যাখ্যা করেই বলেছিলেন, “ভাবের আদান-প্রদানের জন্য পশ্চিম পাকিস্তানে বাংলা এবং পূর্ব পাকিস্তানে উর্দু শিক্ষা করা উচিত”। অপরদিকে, বঙ্গবন্ধু মুজিব ৭-০২-১৯৫৬ পাকিস্তানের ‘কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি’তে “বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম একটি রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মর্যাদা দানের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করে। যেহেতু বাংলা, দেশের ৫৬% লোকের ভাষা, তাই উর্দুর সঙ্গে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মর্যাদা প্রদান করতে হবে। ৃ বাংলা ও উর্দুকে সমভাবে সমৃদ্ধ করে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা প্রদান করাটা সমভাবে কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রাদেশিক সরকারের গুরুদায়িত্ব”।


উল্লেখ্য যে, সোহরাওয়ার্দী যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, তখন ‘কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি’তে উপস্থাপিত বঙ্গবন্ধু মুজিবের প্রস্তাব অনুসারেই পাকিস্তানের অন্তর্বর্তী সংবিধানে (১৯৫৬) বাংলাকে উর্দুর সঙ্গে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পূর্ব বাংলায় গভর্নরের শাসন, পাকিস্তানে আইয়ুবের সেনা-শাসন (১৯৫৮) ইত্যাদি কারণে রাষ্ট্রভাষা বাংলার বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল। স্মরণ করা যেতে পারে, ১৯৭০-এর নির্বাচনে বিপুল বিজয়ী বঙ্গবন্ধু ১৫-০২-১৯৭১ বাংলা একাডেমিতে বক্তৃতায় বলেছিলেন, “আমরা ক্ষমতা হাতে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষা চালু করে দেব”। অতঃপর রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রকৃত সুযোগ আসে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর। কিন্তু প্রশ্ন জাগবেই, এ যাবৎ বাংলা ভাষাকে কতোটুকু ব্যবহারিক মর্যাদা দিতে পেরেছি আমরা?
এস আর চৌধুরী : কলামিস্ট।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.