আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাষা আন্দোলনের মাসে ভাষা আন্দোলন নিয়ে "আমার দেশ" পত্রিকার মিথ্যাচার !

হাঁজাঁরঁ বঁছঁরঁ ধঁরেঁ শুঁধুঁ দেঁখেঁইঁ আঁসঁলাঁমঁ, এঁখঁনঁ সঁমঁয়ঁ হঁয়েঁছেঁ বঁলাঁরঁ.... এই তো কিছুক্ষন আগে আমার দেশ পত্রিকার অনলাইন এডিশনে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিলাম দেলোয়ার হোসেন সাইদীর বিচার নিয়ে তাদের মূল্যায়ন কী? কিন্তু চোখ আটকে গেলো অন্য একটা সংবাদে। বড় বড় করে হেডলাইনঃ বায়ান্নর ফেব্রুয়ারিতে নিহত হয়েছিল ৫ জন : এই ফেব্রুয়ারিতে পুলিশের গুলিতে নিহত ৭৭ লিঙ্কঃ View this link স্ক্রিনশটঃ বুঝতে পারলাম না, এখানে আমার দেশ পত্রিকা বায়ান্নর ফেব্রুয়ারিতে নিহত হয়েছিল ৫ জন দ্বারা কি বুঝালো?? এটা মানে কি ১৯৫২ সালের পুরো ফেব্রুয়ারী মাসে ৫ জন মারা গিয়েছিলো, নাকি শুধুমাত্র ২১শে ফেব্রুয়ারীর দিনে ৫ জন মারা গিয়েছিল, নাকি ভাষা আন্দোলনের জন্য ৫ জন মারা গিয়েছিলো ??!!!! খুব মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করে দেখেন, তারা "নিহত" হয়েছে শব্দটা ব্যবহার করেছে, "শহীদ" শব্দটা না !! তার মানে তারা হয়তো ভাষা আন্দোলনটাকে দেশপ্রেমের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার হিসেবে মনে করে না !! এটার চেয়ে সবচেয়ে বড় যে ব্যাপারটা, তা হলো তারা উল্লেখ করেছে "৫ জন নিহত হয়েছে !!" --- এটা কেমন করে তারা বলতে পারলো?? ক্লাস ফাইভ কি সিক্সে পড়া একজন ছাত্রও জানে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে রফিক, শফিক, সালাম, জব্বার, বরকত সহ আরো নাম না জানা অনেকে শহীদ হয়েছিলেন । যাদের লাশ তদানিন্তন পুলিশ বাহিনী গুম করে ফেলেছিলো। এসব নিয়ে অনেক ডকুমেন্ট আছে । কিন্তু এই নাম না জানা ব্যক্তিদের কথা "আমার দেশঃ পত্রিকা গোনার মধ্যেই ধরে নাই।

সেটার চেয়ে বড় কথা ২২ শে ফেব্রুয়ারীর দিনে ৩০ হাজার লোকের জানাজা মিছিলের উপর পাকিস্তানী বাহিনী যে নারকীয় আক্রমণ চালায় তাতে আরও চার জন মারা যান। দেখুন উইকিপিডিয়ায় এ নিয়ে কি লেখাঃ ২১শে ফেব্রুয়ারী বেলা ২টার দিকে আইন পরিষদের সদস্যরা আইনসভায় যোগ দিতে এলে ছাত্ররা তাদের বাঁধা দেয়। কিন্তু পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে যখন কিছু ছাত্র সিদ্ধান্ত নেয় তারা আইনসভায় গিয়ে তাদের দাবি উত্থাপন করবে। ছাত্ররা ঐ উদ্দেশ্যে আইনসভার দিকে রওনা করলে বেলা ৩টার দিকে পুলিশ দৌঁড়ে এসে ছাত্রাবাসে গুলিবর্ষণ শুরু করে। পুলিশের গুলিবর্ষণে আব্দুল জব্বার এবং রফিক উদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

এছাড়া আব্দুস সালাম, আবুল বরকতসহ আরও অনেকে সেসময় নিহত হন। ঐদিন অহিউল্লাহ নামের একজন ৮/৯ বছরেরে কিশোরও নিহত হয়। ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখে সারা দেশ হয়ে উঠে মিছিল ও বিক্ষোভে উত্তাল। জনগণ ১৪৪ ধারা অমান্য করার পাশাপাশি শোক পালন করতে থাকে। বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করে ছাত্রদের মিছিলে যোগ দেয়।

সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শহরের নাগরিক সমাজ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রাবাস পরিদর্শন করেন। পরে তাদের অংশগ্রহণে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বিশাল মিছিলে অংশগ্রহণ করে। বেলা ১১টার দিকে ৩০ হাজার লোকের একটি মিছিল কার্জন হলের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। প্রথমে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে এবং একপর্যায়ে তাদের উপর গুলিবর্ষণ করে।

ঐ ঘটনায় সরকারি হিসেবে ৪ জনের মৃত্যু হয়। তাহলে হিসেব অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, ফেব্রুয়ারী মাসে মারা যাওয়া লোকের সংখ্যা কখনোই ৫ জন ছিলো না । প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা এখনই রুখে দাঁড়ান "আমার দেশ" পত্রিকার ইতিহাস বিকৃতির এই নিকৃষ্টতম নোংরামী থেকে। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.