আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যাটিংয়ে আবারও হতাশা

স্বপ্ন স্বপ্নই। ভালো ঘুম হলেই যে স্বপ্ন এসে ধরা দিবে তা তো নয়! স্বপ্ন কারো ধরা বাঁধা নিয়মেও চলে না। বাংলাদেশে ভালো ব্যাটিংটাও এখন স্বপ্নই হয়ে গেছে। কবে কখন কোথায় কিভাবে ভালো ব্যাটিং হবে তা আমাদের ব্যাটসম্যানরাও জানেন না। স্বপ্ন যেমন খেয়াল খুশিমতো সেচ্ছায় এসে ধরা দেয় টাইগারদের ভালো ব্যাটিংও তেমনই।

একদিন আগেই যে মাঠে পাকিস্তানের মতো বিশ্বসেরা বোলিং লাইন আপকে নাস্তানাবুদ করে তিন উইকেটে ৩২৬ রানের পাহাড় সমান এক স্কোর করল বাংলাদেশ, সেই মাঠেই কিনা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মাত্র নয় উইকেট হারিয়ে মাত্র ২০৪ রান। সত্যিই অবিশ্বাস্য!

ক্রিকেট এমনই অনিশ্চয়তার খেলা। কখন কি ঘটে যায় বলা কঠিন। কখনো কখনো এমন হয় যে, দুই এক ওভারেই পুরো চিত্র পাল্টে যায়। ক্রিকেটের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে রহস্য।

কিন্তু বাংলাদেশের দুর্বোধ্য ব্যাটিং যেন ক্রিকেটকে করে তুলছে আরও অধিকতর রহস্যময়! প্রথম ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে যে দলটি ২৭৯ রান করল, তারাই কিন্তু আফগানিস্তানের মতো ক্রিকেট শিশুর দেওয়া ২৫৫ রানের টার্গেটও টপকাতে পারল না। ওই ম্যাচে প্যাকেট হয়ে যায় মাত্র ২২২ রানেই। আবার পরে ম্যাচেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কী নান্দনিক ব্যাটিং। সাঈদ আজমল, শহীদ আফ্রিদি, ওমর গুলের মতো বোলাররা টাইগারদের ব্যাটিংয়ের কাছে পাত্তাই পেল না। অথচ কাল খর্ব শক্তির শ্রীলঙ্কা দলের বোলিংয়েই যেন ভেঙে পড়ল বাংলাদেশ।

লঙ্কান বোলিংয়ের মূল স্তম্ভ লাসিথ মালিঙ্গা না থাকায় বড় স্কোরের আশা করছিলেন ভক্তরা। কিন্তু সে আশায় গুঁড়েবালি। কাল শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় সারির বোলাররাও যেন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছিলেন। কাউকেই ভালোভাবে খেলতে পারেনি ব্যাটসম্যানরা। কাল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ধুকতে দেখে প্রেসবঙ্ েপাশে বসা এক ভারতীয় সাংবাদিক অবাক হয়ে বললেন, 'বিশ্বাস করতেই পারছি না।

এই দলটাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কী দারুণ ব্যাটিং করল। আর আজ সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বাংলাদেশ কি আজ তাদের 'বি' টিমের ব্যাটসম্যানদের নামিয়েছে নাকি?' বিস্ময় ছিল সবার মনেই। আগের ম্যাচে যেখানে রান হলো ৩২৬ সেখানে ওই ৫০ ওভার খেলে এ কিনা মাত্র ২০৪ রান!

সকালের টগবগে লাল সূর্যটা দেখে কি আর সব সময় ঝড়ে তছনছ হওয়া বিকালের পরিস্থিতি বোঝা যায়! কাল বাংলাদেশের শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতো। পাওয়ার প্লে-র প্রথম ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৯ রান।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও তাই ছিল। দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও শামসুর রহমান শুভ মিলে ৭৪ রানের পার্টনারশিপ। আগের ম্যাচে দারুণ খেলা ইমরুল কায়েস গ্রোইন ইনজুরির কারণে এ ম্যাচে খেলতে পারেননি। কিন্তু তার অভাবটা বুঝতেই দেননি শামসুর রহমান। বাংলাদেশের ইনিংসে সুখের সময় বলতে উদ্বোধনী জুটিটাই।

তারপর হঠাৎ ছন্দপতন। ৭৪ থেকে ১১৯, এই ৪৫ রানের মধ্যেই টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে টাইগারদের ইনিংস ধ্বংসস্তূপ! একে একে শামসুর, মমিনুল, মুশফিক, এনামুল, সাকিব আউট হয়ে মাথা নিচু করে ড্রেসিং রুমে ফিরছিলেন। ষষ্ঠ উইকেটে নাসিরের সঙ্গে মাহমুদুল্লাহর ৫৫ রানের জুটিটি ম্যাচে খানিকটা প্রাণ নিয়ে আসে। কিন্তু লোয়ার অর্ডারে আবারও সেই ব্যর্থতার মিছিল। কাল বাংলাদেশের ইনিংসে কোনো হাফ সেঞ্চুরি নেই।

সর্বোচ্চ ৪৯ রান এসেছে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান বিজয়ের ব্যাট থেকে। আর শামসুর রহমানের ৩৯ রান। পুরো ইনিংসে ছক্কা মাত্র একটি। বাউন্ডারিও তো তেমন হয়নি। মাত্র ১৫টি।

আর ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট ছিল সর্বোচ্চ ৮৫। শেষ দিকে তো ব্যাটসম্যানরা রানের চেয়ে ৫০ ওভার উইকেটে টিকে থাকাকেই শ্রেয় মনে করছিলেন। শেষ ওভারেও তারা ডিফেন্স করছিলেন অভিনব কায়দায়। ওয়ানডের ব্যাটিংয়ে যা রীতিমতো হাস্যকর।

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.