আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একসময় ছাগু তাড়াতো বলেই কি আইজুদ্দিন সব অপরাধ থেকে বেঁচে যাবে?

আমার এই ব্লগের কোনো লেখা বা লেখার কোনো অংশ আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া যে কোনো প্রকার মিডিয়াতেই প্রকাশ করা যাবেনা। যদি তা করা হয়, তাহলে আমি আইনগত এবং অবস্থাভেদে ব্লগের আইন/প্রসিজিওর অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে বাধ্য হব এই পোস্টটা বেশী দীর্ঘ করব না আমি। কিছু সহজ কথা সহজেই জানতে চাইব বা বুঝতে চাইব। আইজুদ্দিনের সত্যকারের পরিচয় ফাঁস হয়ে গিয়েছে। পরিচয় ফাঁসের পর দেখা যাচ্ছে যে এই লোকের নাম মূলত শরীফ আজাদ।

এই কথা শুনে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এই বলে যে আসলেই এই লোকই ডাক্তার আইজুদ্দিন কি না। আমি এক কথায় বলব, হ্যাঁ এই লোকই ডাক্তার আইজুদ্দিন জিনি মূলত আমার ব্লগে এই ছদ্ম নামেই লিখতেন। এখন প্রশ্ন দাঁড়ায়, ছদ্ম নামে লেখাটি কি আসলে অপরাধ? নাম প্রকাশ না করে, মূল পরিচয় না দিয়ে? আমি এই কথার উত্তরে বলব, অবশ্যই নাম প্রকাশ না করে লেখাটা অপরাধ না। কিন্তু এটিও মাথায় রাখতে হবে যে নাম প্রকাশ কিংবা অপ্রকাশ যেটাই করেন না কেন, যতক্ষন পর্যন্ত আপনি সাইবার ক্রাইমের সাথে না জড়াবেন, অন্যের ক্ষতি না করবেন, তথ্য প্রকাশে সঠিক নিয়ম নীতি কিংবা সাইবার আইনের নিয়ম কানুন মেনে চলবেন তথা কোনো ব্যাক্তির জীবনের উপর, পরিবারের উপর এমন কোনো তথ্য দিয়ে বা কথা বলে আঘাত হানবেন না যেটা সেই ব্যাক্তির উপর অযাচিত এবং অহেতুক একটি আঘাত, যেই আঘাতে ব্যাক্তির জীবন বিপন্ন হতে পারে। ততক্ষন পর্যন্ত আসলে আপনি নাম প্রকাশ করলেন কি করলেন না, এটা একেবারেই গৌণ।

কিন্তু আপনার যদি শুরুতেই ইন্টেশন থাকে যে আপনি মানুষের ক্ষতি করবার জন্য নাম প্রকাশ করছেন না, আপনি মিথ্যে প্রোপাগান্ডা চালাবেন সে কারনেই নিজেকে গুটিয়ে রাখছেন, তবে সেটি গুরুতর সাইবার অপরাধ। আসুন আমরা বরং জেনে নেই ডাক্তার আইজুদ্দিন তার নাম প্রকাশ না করে লেখাটাকে কিভাবে জাস্টিফাই করে- যার মানে দাঁড়াচ্ছে আইজুদ্দিন তার নাম প্রকাশ না করেই গত ৬ বছর লিখেছে কারন নাম প্রকাশে তার ভয় লাগে এবং সে ফ্রি কথা বলতে চায়। তাহলে কেমন ফ্রি কথা বলতে চায় আমাদের আইজুদ্দিন? আসুন একটু দেখে নেই- উপরের এই কথাগুলোকে আমি ঠিক ফ্রি কথা বলা বলব নাকি পাবলিক প্লেসে ইন্ডিসেন্ট কাজ কর্মের কারনে অপরাধ বলব সেটা আসলে নির্ধারণ করতেও আমাকে বেগ পেতে হচ্ছে। একজন মানুষ তার সত্যকারের নামটি যদি লুকিয়ে রাখেন উপরে চিত্রায়ত এইসব ফ্রি কথা বলবার জন্য, তখন আসলে চিন্তা করতেই হয় যে এই মানুষটির রুচী কেমন। আর সবচাইতে বড় ব্যাপার হচ্ছে পরিচয়হীনতার যে মন্দ দিক, যেমন আপনি ইচ্ছেমত কারো বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়া বিষেদাগার করলেন, প্রোপাগান্ডা ছড়ালেন, তাকে হ্যারাস করলেন, বুলি করলেন, সেটার পরিপূর্ণ সুযোগ কিন্তু আইজুদ্দিন নিয়েছে।

এ টিমে কোনো এক সময় সে রাজাকারদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলো (সেখানেও শুনেছি গালাগালি করে যুদ্ধ করেছে শরীফ, গালাগালি করাই তার যুদ্ধ) এর মানে এই নয় যে এই শরীফ আজাদ কারো জীবন বিপন্ন করবে। এর মানে এই নয় যে তিনি কোনো রকমের প্রমাণ ছাড়া একজন মানুষকে বলবেন চাঁদাবাজ, ফ্রিডম পার্টির দালাল। কথায় কথায় গতকাল থেকেই দেখছি কয়েকজন বলছেন, আইজু নাকি গণ জাগরণ মঞ্চ নিয়ে প্রশ্ন তুলবার কারনেই তার আজকের এই পরিণতি। সত্য কথা কেউ সহ্য করেন না, ইত্যাদি। এসব শুনে আমার আসলেই হাসি পেয়ে গেলো।

সাভারে বিল্ডিং ধ্বসের পরে ইউকে গণ জাগরণ মঞ্চ ইউকে (যেটি ঢাকার শাহবাগের গণ জাগরণ মঞ্চ থেকে নির্দেশ পেয়ে কাজ করেনা কিংবা ভাইস ভার্সা) এবং সুপরিচিত গায়ক প্রীতম মানবিক টানেই তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই দূর্গতদের জন্য অর্থ সাহায্য করবার জন্য জনতাকে ডাক দিয়েছেন। সরকার এই ডাক দিতে বলেন নি। কিন্তু সাধারণ মানুষ জানেন যে শেষ পর্যন্ত সরকার আসলে দূর্গতদের জন্য ঘোষনা দেয়া ছাড়া কিছুই করবেন না। এই ইতিহাস তো আজকের নয়, বহুত পুরোনো। এই মানবিক চিন্তাধারার বশবর্তী হয়ে সবার কাছে মানবিক সাহায্য চাওয়া আইজুর ভাষায় হয়ে গেছে “চান্দাবাজী”, আমাকে আইজুদ্দিন একজন চাঁদাবাজ বলে সবার সামনে হেয় করলেন, সমাজে আমার ভাবমূর্তি, আমার স্ট্যান্ড নষ্ট করবার চেষ্টা করলেন, আমাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করতে চেষ্টা করলেন, আমার পরিবারও এতে ক্ষতিগ্রস্থ হোলো আমার উপর এই আক্রমণে, সমাজে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেলাম, জীবন ধারনে আমার নিরাপত্তার ঝুঁকি বেড়ে গেলো, আমার গ্রহনযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ কতবার পাঁয়তারা করলো এই শরীফ আজাদ।

এগুলোকি সাইবার অপরাধ নয়? একজন ব্যাক্তি যিনি রাজাকার কিংবা একাত্তরের ঘাতকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার, তিনি সেই ঢালের আড়ালে একজন মানুষকে এভাবে হেয় করবেন আর সেটা মেনে নিতে হবে কারন তিনি তথাকথিত স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ বলে পরিচিত, সে জন্য? আবার আমি নিজেও ব্যাক্তিগত ভাবে যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছি আমার অবস্থা থেকে, আমার সাধ্য অনুযায়ী। আমি নিরলশ ভাবে লিখবার চেষ্টা করে যাচ্ছি, বলে যাচ্ছি। আমার এই কর্মকান্ডকে আইজুদ্দিন সূচিত করছে খুবই নোংরা ভাবে। কখনো ফেসবুকে লিখছেন আমি ফ্রিডম পার্টির দালাল, কখনো ব্যাক্তিগত মেসেজে লিখছেন আমি ফ্রিডম পার্টির দালাল, কখনো বলছেন আমি পরিচিত হবার জন্য এই ক্যাম্পেইন করছি, ইত্যাদি। তো যিনি একজন স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ বলে নিজেকে জাহির করতে চাচ্ছেন, তিনি কি করে ঐ একই পথের একজন মানুষকে এভাবে সবার সামনে হেয় করবেন বা করছেন? এটা কি তার আসল ইনটেনশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে না? যেই এ-টিমের হয়ে তিনি এক সময় কাজ করতেন সেই এটিমের একজন অমি রহমান পিয়াল তার সম্পর্কে কি বলছেন আসুন একটু দেখি- লক্ষ্য করে দেখুন, এই লোকটির উপর ক্রমাগত সবাই আস্থা হারাচ্ছে তার কর্মকান্ডে।

নিজের সহযোদ্ধাদের পিঠে ছুরিমারা, শাহবাগের এই বিশাল গণ জাগরণের বিরুদ্ধে গত দুইমাস ধরে ক্রমাগত লিখে যাওয়া, গণজাগরণের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো, তার ছবি বিকৃতভাবে উপস্থাপনা করা, তাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করা, তার জীবনকে বিপন্ন করে দুর্বিষহ করে তোলা, তার সমাজ, ব্যাক্তি, পারিবারিক জীবন বিপন্ন করা সহ শত অভিযোগে কিন্তু আইজুদ্দিন ওরফে শরীফ আজাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া যায়। আর সবচাইতে বড় ব্যাপার হচ্ছে, আপনারাই লক্ষ্য করে দেখুন যে এই গণ জাগরনের বিরুদ্ধচারন আসলে সমাজের কোন গোষ্ঠীটি করে যাচ্ছে? কারা এই শাহবাগের গণ জাগরণের বিরুদ্ধে? কারা চায় আন্দোলন বানচাল হোক? বানচাল হলে কার সুবিধা? মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিদের হেয় প্রতিপন্ন করতে পারলে কার লাভ হয় শেষ পর্যন্ত? এসব সব প্রশ্ন নিয়ে ভাববার সুযোগ করে দিলাম আপনাদের। পাঠক আপনারাই ভেবে বলুন। ডাক্তার আইজুদ্দিন যে শুধু শাহবাগ গণ জাগরণের বিরুদ্ধেই কুৎসা রটিয়েছে তা কিন্তু নয়। যখন কাদের মোল্লার মামলার রায় হয় তখনো কিন্তু এই আইজুদ্দিন সেই যাবজ্জীবন রায়ের প্রতি তার আস্থা জানিয়ে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করেছে প্রসিকিউশনের আইনজীবিদের।

রায়ের মধ্যে স্পস্ট করে বলে দেয়া হয়েছে যে কাদের মোল্লার সব অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হয়েছে, তথাপিও আইজুদ্দিন এই রায়ের পক্ষ নিয়ে আইনজীবিদের বিপক্ষে কুৎসা রটিয়েছে। আইনজীবিদের অবশ্যই সমালোচনা হবে যদি তাদের ভ্রান্তি থাকে, ভুল থাকে। কিন্তু রায়ে যেখানে অপরাধ প্রমাণিত করতে পেরেছে প্রসিকিউশন দল, সেখানে এই স্পস্টতা থাকার পরেও আইনজীবিদের বিরুদ্ধে এসব কথা বলার কারন আসলে কি? জামাতীরাও কি একইভাবে প্রোপাগান্ডা চালায় না? পাঠক কি মনে করতে পারেন? এরপর ধরেন ব্লগে মেয়েদের কিভাবে হেয় করা হয় কিংবা মেয়েদের প্রতি আইজুদ্দিনের আচরণ কেমন তা তো আপনারা দেখতে পেয়েছেন উপরের স্ক্রীন শটেই। এছাড়া আই আইজুদ্দিন কত অসংখ্যবার তার লেখাতে সামু ব্লগের মডারেটর জানা গুলশান আরাকে গালাগাল করেছে তার শারিরীক বিবিন্ন স্থানের কথা উল্লেখ করে, কতবার সামুর ব্লগার আইরিনকে গালাগাল করেছে, কতবার কৌশিকের বাহ্যিক গেট আপ নিয়ে, তার চুল নিয়ে, তার চেহারা নিয়ে পোস্ট দিয়েছে সেটা আসলে এখন আর বলতে রুচিতে কুলায় না। নোংরা, কুৎসিত ভাষাতে একের পর এক সে পোস্ট দিয়েছিলো ব্লগার আইরিনকে হেয় করে, সমাজ জীবনকে বিপন্ন করে।

যদি শরীফ আজাদের অভিযোগ থাকতই এইসব ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে তবে সেটি হতে পারত যুক্তি দিয়ে, প্রোপারলি তথ্য তুলে ধরে। সেটি না করে একন মানুষকে অকথ্য ভাষায় গালাগালির নামই কি ফ্রি কথা বলা আর নাম লুকিয়ে রাখা? আইজুর ভক্তরা যে মাতম তুলেছেন আইজুর পক্ষে, তারা যে কান্নাকাটি শুরু করেছেন তাদের এইসব কান্নাকাটি দেখলেও আমরা এখন আসলে বৃতিষ্ণা হয়। একটা মানুষ একেরপর এক তার সহযোদ্ধাদের পিঠে ছুরি চালিয়েছে, রক্তাক্ত করেছে সেদিকে কারো নজর নেই। একজন মানুষ নিজের সঠিক নামটি গোপন করে এই সুবিধার মিস ইউজ করে যাচ্ছিলো সেদিকে কারো ভ্রুক্ষেপ নেই কিন্তু তার পক্ষে কথা বলেই যাচ্ছে। একজন মানুষ যখন এতগুলো মানুষের জীবন বিপন্ন করে তোলে, এতগুলো মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করে তোলে অনলাইন জগতে তখন প্রয়োজন হয় সোচ্চার হবার।

জনতা তেমন সোচ্চারই আজ হয়েছে। তারা আইজুদ্দিনের আসল পরিচয় প্রকাশ করে তাকে সাধারণের কাতারে এনে বুঝিয়ে দিয়েছে যে তুমি এইবার ব্লগিং কর তোমার আসল পরিচয়ে। তুমি নকল পরিচয়ের ব্যাবহার আসলে জানো না। আসল পরিচয় প্রকাশ পাবার পর যেই লোক লেগ গুটিয়ে পালিয়ে যায় নানান হাবিজাবি যুক্তি দিয়ে, ইমোশোনাল কথা বলে সেই লোক আসলে যে নষ্ট চরিত্রের তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এর থেকেও মারাত্নক কথা হচ্ছে এই শরীফ আজাদ কিন্তু দুইবার জেল খাটা জেলের ঘুঘু।

কিসের জন্য জেল খেটেছে শরীফ আজাদ? জেল খেটেছে ফোনে হ্যারাস করবার জন্য। জেল খেটেছে মানুষকে যন্ত্রনা দেবার জন্য। এসব রিপোর্টতো এখন অনলাইনেই পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল একজন প্রকাশ করে দিলেন। আমি সেখান থেকেই রেফারেন্স দিচ্ছি।

যেই লোকটি অনলাইনে মানুষের জীবন বিপন্ন করে তোলে, যেই লোকটি অফলাইনে মানুষকে হ্যারাস করে জেলের ভাত খায় সেই লোকটির জন্য মরন কান্না? সত্যিই সেলুকাস মির্জা আব্বাস!!! কি বিচিত্র এই পৃথিবী... ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৬৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।