আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্ষমতাবানের গায়ে জরানো থাকে রাজ হংসের পালক, যেখানে পঙ্কিলতার দাগ লেগে থাকে না।

ভালবাসি মা-মাটি-দেশ। স্বপ্ন দেখি একটি সুন্দর সকাল। এক নতুন সূর্যোদয়ের।


কোন কথাটি ন্যায় আর কোনটি অন্যায় এটা কি কাউকে বলে বোঝাতে হয়? হয় না। কারণ ঐ বোধটুকু মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন তার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানব কুলের মগজে দিয়ে দিয়েছেন।



কিন্তু বিরোধটা বাধে তখনই যখন অলিখিত নিয়ম হয়ে যায় যে, সব সত্য বলতে নেই। সব অন্যায় দেখতে নেই। ক্ষমতাবানদের ক্ষমতার অপব্যবহার দেখেও না দেখার ভান করে থাকতে হয়। তাদের অন্যায় আচরণ ক্ষমতাহীনদের দেখতে নেই। তার প্রতিবাদ করতে নেই।

যদি কোন ক্ষমতাহীন এই বিধান লঙ্ঘন করে তার ঘাড়ের উপর খড়গ নেমে আসবে এটাই স্বাভাবিক।

নিয়ম হল আপনাকে প্রতিবাদী হয়ে উঠার পূর্বেই ক্ষমতাধর হয়ে উঠতে হবে। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটা হাস্যকর; কারণ আপনি যখন ক্ষমতাধর হয়ে উঠবেন তখন আর আপনি প্রতিবাদী থাকবেন না। প্রতিবাদ আর ক্ষমতা একই দেহ অবলম্বন করে থাকতে পারে না। ক্ষমতাধর তার ক্ষমতা ধরে রাখতেই হয়ে উঠেন আপোষ কামী।

ব্যতিক্রম যে একেবারেই নেই তা হয়ত নয়। তবে তা কালে ভদ্রে। অতি ভাগ্যবান কোন কোন জাতীর ক্ষেত্রে কালে ভদ্রে এমন প্রতিবাদী ক্ষমতাধর মহান পুরুষের আবির্ভাব হয়। তবে তাকেও আজন্ম লড়েই যেতে হয় শত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে।
যাই হোক, বলছিলাম ক্ষমতা আর সততার একত্রে বাস দুঢ়হ।

বলা যায় এটা পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কম শাসকের ক্ষেত্রেই লক্ষ করা গেছে। যে সব ক্ষমতাশালীরা সত্যিই সৎ ছিলেন তারা আজো পরম পূজনীয় হয়ে আছেন তাদের এই বিরল গুনটির জন্যে। একজন ক্ষমতাবান মানুষ সাধারণ মানুষের সমালোচনাকে কিংবা তার কোন ভুল ধরিয়ে দেয়াকে হাসি মুখে মেনে নিবেন। এটা তো অনেক বড় বিষয় যা তাকে মহামানবের কাতারে উন্নীত করে দিতে সক্ষম। দুর্ভাগ্য, ক্ষমতাধরদের পরম পূজনীয় হওয়ার সাধ খুব কমই হয়।

এটা সচারচর ঘটে না।

ক্ষমতা, সততা আর সহনশীলতা এই তিনের রসায়ন আদৌ হয়ে ওঠে না। আর তাই অনেক সৎ প্রভাবশালীকেও নৃশংস হয়ে উঠতে দেখা যায় কেবলমাত্র সহনশীলতার অভাবে। আর তাই বোধ হয় প্রভাবশালীদের মাঝ থেকে সৎ প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর খুব কমই শোনা যায়। ওটা বঞ্চিত শ্রেণীর মধ্য থেকেই উঠে আসে।


এই সব সাধারণ কণ্ঠস্বরকে আবার একটা সীমারেখা মানতেই হয়। এটাই নিয়ম। প্রতিবাদ করবেন করুন। আগে পেছনে চেয়ে দেখুন আপনার মাথা বাঁচাতে ভিন্ন স্বার্থে হলেও কোন ক্ষমতাধরের ছায়া আছে কিনা। সেই সাথে এটাও ভাবুন; কার অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।

যে প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে তা সামাল দিতে পারবেন তো?

আপনার হাতের খাবারটি কেড়ে নিয়ে কোন ক্ষুধার্ত নিজ মুখে পুড়ে দিলে আপনি তাকে মারুন, কাটুন কোন অসুবিধা নেই। আপনাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবেন রাস্তার শত শত মানুষ। তারাও মনের সুখে পেটাবে সেই হাভাতেকে। শেষ পর্যন্ত হয়ত সেই পিটুনিতে সে মারাই পড়বে। তাতেও সমস্যা নেই।



কেউ আপনার গালে দুটো চড় মাড়া তো দুরের কথা আপনাকে সামান্য ভৎসনাও করবে না। কিন্তু এই আপনিই যদি এলাকার শীর্ষ চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেন। আপনার পাশে এসে তো কেউ দাঁড়াবেই না উলটো অপদস্থ করবে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসন সকলের কাছ থেকেই পাবেন বৈরি আচরণ। কারণ ঐ একটাই আপনি এখানে ক্ষমতাধর নন।

প্রতিবাদ করার আগে এটা তো জেনে নিন, ক্ষমতাবানেরা অন্যায় করেন না। তাদের গায়ে জরানো থাকে রাজ হংসের পালক, যেখানে পঙ্কিলতার দাগ লেগে থাকে না।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।