আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খরচের অর্ধকোটি টাকা দেন দুই হুন্ডি ব্যবসা

ত্রিশালের তিন জঙ্গি ছিনতাই মিশন সফল করতে বাজেট ছিল অর্ধকোটি টাকা। আর সেই অর্থের পুরোটাই জোগান দেন হুন্ডি ও জাল টাকার দুই ব্যবসায়ী আজমির ওরফে অমিত ও গোলাম সরোয়ার রাহাত। গার্মেন্ট ব্যবসার আড়ালে এরা জাল টাকা ও হুন্ডি ব্যবসা করে আসছিল। অল্প সময়ে বিপুল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া এই দুই ব্যবসায়ী জঙ্গি সংগঠন জামা'আতুল মোজাহেদীন বাংলাদেশকে (জেএমবি) অর্থ দিয়ে সহায়তা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের জোগান দেওয়া অর্থ ও পরিকল্পনায় ত্রিশাল থেকে তিন জঙ্গিকে ছিনতাই করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে টানা অভিযান চালিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এই দুই অর্থ জোগানদাতাকে গ্রেফতার করে। আরও গ্রেফতার করা হয় জঙ্গি সদস্য আল আমিন, রুহুল আমীন ওরফে রাজু ও জিতুকে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে ও তাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে সাড়ে চার কেজি পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য, সাতটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচটি শক্তিশালী ডিভাইস বোমা (আইইডি) এবং ১৬টি ককটেল, ৬১ রাউন্ড গুলিসহ নাশকতায় ব্যবহৃত বিপুল সরঞ্জাম। তবে ছিনিয়ে নেওয়া পলাতক জঙ্গিরা এখনো অধরা। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দিয়ে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান জানান, এই পাঁচজনসহ ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হলো মোট ১১ জঙ্গিকে। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত জাকারিয়া এবং আঞ্চলিক প্রধান ফারুক জেএমবির সংগঠকের ভূমিকা পালন করছিল। তারা জেএমবির একটি অংশ নিয়ে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছিল। পলাতক দুর্ধর্ষ তিন জঙ্গির মধ্যে রাকিব হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ গ্রেফতারের পর পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়। এখনো অপর দুই জঙ্গি সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি এবং জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমা মিজানকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত মোট ১১ জনের মধ্যে চারজন সরাসরি জঙ্গি ছিনতাইয়ে সম্পৃক্ত। এ ছাড়া ছিনতাই মিশনের অর্থদাতা দুজন আজমির ও রাহাত জেএমবিকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করে আসছিল। মূলত তারা জাল টাকা ও হুন্ডি ব্যবসা করত। এভাবে অল্প সময়ে তারা বিপুল অর্থের মালিক হয়। পাশাপাশি জেএমবির সাংগঠনিক কাজে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করেছে। তারা দুজনে একটি গার্মেন্ট কিনে সেখানে জেএমবি সদস্যদের যোগ্যতা অনুসারে চাকরি দিয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের মুনাফা জেএমবির সাংগঠনিক কাজে ব্যবহার করার পরিকল্পনা ছিল। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেন, সম্প্রতি আজমির ও রাহাত বাড্ডার সাতারকুল এলাকায় ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকায় জমি ও ভবনসহ একটি গার্মেন্ট কারখানা কিনেছে। আজমির ও রাহাত জেএমবির সংগঠন ও জেলে থাকা সদস্যদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ময়মনসিংহের আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে জেএমবির মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি নেতা সালাহউদ্দিন সালেহীন, রাকিব হাসান ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া বোমা মিজানকে ছিনিয়ে নেয় তাদের সহযোগীরা। জঙ্গিদের হামলায় পুলিশের এক সদস্য নিহত এবং আরও দুজন গুরুতর আহত হন। অবশ্য এর কয়েক ঘণ্টা পর হাফেজ মাহমুদ রাকিবকে টাঙ্গাইল পুলিশ আটক করে। পরদিন ভোরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিনি নিহত হন। এ ছাড়া ঘটনার দিনই সখীপুর থানার সামনে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্র ও মাইক্রোবাসসহ ধরা পড়েন জেএমবির সংগঠক জাকারিয়া ও সদস্য রাসেল। এরপর ডিবি পুলিশ জাকারিয়ার স্ত্রী স্বপ্না ও ভাই ইউসুফকে গ্রেফতার করে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.