আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মালদ্বীপে দেখা গেছে বিমানটি!

এবার নিখোঁজ বিমানটি দেখার দাবি করলেন মালদ্বীপের বাসিন্দারা। মালদ্বীপের অন্তর্গত দূরবর্তী কুদা হুবাধু দ্বীপের কিছু লোক ৮ মার্চ স্থানীয় সময় ভোর সোয়া ৬টার দিকে একটি বিমান খুব নিচু দিয়ে উড়ে যেতে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন। তাদের ধারণা, সেটাই সম্ভবত নিখোঁজ মালয়েশীয় বিমান। মালদ্বীপের সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট হাভিরু অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গতকাল টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী মঙ্গলবার জানিয়েছে, ঘটনার দিন তাদের রাডারে একটি বিমানের অস্তিত্ব ধরা পড়েছিল।

তবে তা কোন বিমান জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটি মালয়েশীয় এয়ারলাইনস-৩৭০ হতে পারে। তবে তারা বিষয়টিতে এত দিন খুব একটা মনোযোগ না দেওয়ায় তথ্যটি প্রকাশ করেনি বলে জানিয়েছে। আর মালদ্বীপের হাভিরু অনলাইনের ওই ওয়েবসাইটের খবরে বলা হয়- মালদ্বীপের দূরবর্তী কুদা হুবাধু দ্বীপের কিছু লোক দাবি করেছেন, ৮ মার্চ স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ১৫ মিনেটে ভূ-পৃষ্ঠের কাছাকাছি থেকে বড় আকারের একটি উড়োজাহাজ উড়ে যেতে দেখেছেন তারা। উড়োজাহাজটির রং ছিল সাদা।

আর গায়ে লাল ডোরা, যা দেখতে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের বিমানের মতো। ঘটনার বিষয়ে একজন প্রত্যক্ষদর্শীর উদ্ধৃতি দিয়েছে ওয়েবসাইটটি। ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, 'এর আগে আমি কখনো আমাদের দ্বীপের ওপর দিয়ে এত নিচু হয়ে কোনো বিমান উড়ে যেতে দেখিনি। আমরা অনেক সিপ্লেন দেখেছি। কিন্তু আমি নিশ্চিত যে, এটা সিপ্লেন ছিল না।

আমি বিমানটির দরজা পর্যন্ত স্পষ্টভাবে দেখেছি। ' ওই প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি- দ্বীপটির অনেক অধিবাসীই বিমনাটিকে ভূ-পৃষ্ঠের কাছ থেকে উড়ে যেতে দেখেছেন।

মালদ্বীপের সাংবাদিক ফারাহ আহমদ বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, আরও অনেক প্রত্যক্ষদর্শী একই ধরনের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, 'এ মানুষগুলো প্রথমে অস্বাভাবিক নিচু থেকে উড়ে যাওয়া একটি উড়োজাহাজের বিকট শব্দ শোনেন। এরপর তারা তা দেখতে বাইরে বেরিয়ে আসেন।

' এদিকে এবিসি নিউজের প্রতিনিধি, উপস্থাপক বব উডরাফ তার টুইটারে এক জেলের দুটি ছবি প্রকাশ করেছেন। টুইটারে ছবির বিবরণে লেখা হয়েছে- এই জেলের দাবি, মাত্র পাঁচ হাজার ফুট ওপর দিয়ে একটি বিমান উড়ে যেতে দেখেছেন তিনি। মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটটি ২৩৯ জন আরোহী নিয়ে ৭ মার্চ রাতে নিখোঁজ হয়। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে চীনের বেইজিংয়ের উদ্দেশে যাত্রার ১ ঘণ্টা পর এটি যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিমানটি খুঁজে বের করতে চিরুনি অভিযান চলছে।

এতে ২৬টি দেশ অংশ নিয়েছে বলে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ বলেছে। স্থল, নৌ ও আকাশ পথে চালানো হচ্ছে এ অভিযান।

থাইল্যান্ডের রাডারে অপরিচিত বিমান : থাই বিমানবাহিনীর মুখপাত্র এয়ার ভাইস মার্শাল মনটল সুকর্ন জানান, তাদের রাডারে ৮ মার্চ যে বিমানটির অস্তিত্ব ধরা পড়েছিল তা ছিল মালাক্কা প্রণালিতে। তবে তা মালয়েশিয়ার ওই বিমানটি কি না সে সম্পর্কে নিশ্চিত নন। এর আগে একই জায়গায় ফ্লাইট ৩৭০কে শেষ দেখা গেছে বলে মালয়েশিয়াও জানিয়েছিল।

কিন্তু কেন এ তথ্য এত দিন জানানো হলো না এমন প্রশ্নের জবাবে মনটল বলেন, 'আমাদের বিমানবাহিনী কেবল দেশের জন্য হুমকি হতে পারে এমন বিষয়ের ওপরই খেয়াল রাখে। আর যে বিমানের সংকেত আমরা পেয়েছিলাম তা থাইল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি। তাই আমরা এটির দিকে মনোযোগ দিইনি। ' মার্শাল মনটল জানান, মালয়েশিয়ার বিমানটি হারানোর নয় দিন পর অর্থাৎ গত সোমবার থাই রাডারের লগ পরীক্ষা করে দেখা হয়। মালয়েশিয়ার সরকারের অনুরোধে রাডার লগ পরীক্ষা করে দেখা হয় বলে জানান।

তিনি দাবি করেন, অপরিচিত একটি বিমানের গতিবিধি স্থানীয় সময় ১২টা ২৮ মিনিটে (মালয়েশীয় সময় রাত ১টা ২৮ মিনিট) থাই রাডারে ধরা পড়ে। এমএইচ৩৭০ বিমানটি দক্ষিণ চীন সাগরে হারিয়ে যাওয়ার ঠিক ৬ মিনিট পরে এ বিমানটি দেখা যায়। এদিকে গতকাল বিমানটি কোথায় যেতে পারে তা নিয়ে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। তা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো :

বিমানটি আন্দামানে অবতরণ করতে পারে : বিএ ৭৭৭ বিমানের সাবেক পাইলট স্টিভ বুজদিগানের মতে, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের উপকূলের কাছাকাছি হওয়ায় বিমানটি ভারতের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে অবতরণ করতে পারে।

কাজাখস্তানে উড়ে যেতে পারে : বিমানটি কাজাখস্তানের জনবিচ্ছিন্ন মরুভূমিতে অবতরণ করতে পারে বলে মত দিয়েছেন সিলভিয়া রিগলি নামের একজন পাইলট।

তার মতে, এমন হতে পারে যে বিমানের ট্রাফিক কন্ট্রোল পদ্ধতি অনেক পুরনো হওয়ায় ছিনতাইকারীরা সহজেই রাডার থেকে বের হয়ে যেতে পেরেছেন।

 

তাকলামান মরুভূমিতে যেতে পারে : বিমানটির ২৩৯ যাত্রীর মধ্যে ১৫৩ জনই চীনের। এ কারণে ধারণা করা যেতে পারে, চীনের বিচ্ছিন্নতাবাদী উইঘুর সম্প্রদায়ের লোকেরা বিমানটি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। আর তা ছিনতাই করে চীনের তাকলামান মরুভূমিতে নিয়ে যেতে পারেন। তাকলামান মরুভূমিতে সাধারণ মানুষের যাওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

 

লঙ্কাউই দ্বীপে যেতে পারে : অ্যাভিয়েশন ব্লগার ক্রিস গুডফেলো যে তত্ত্ব দিয়েছেন তা হলো- বিমানটিতে আগুন লেগে যেতে পারে। এ কারণে যাত্রীদের বাঁচাতে পাইলট বেইজিংয়ের পথ থেকে সরে আন্দামান সাগরের লঙ্কাউই দ্বীপে বিমানটি নিয়ে জরুরি নেমে যেতে পারেন। তবে এই ব্লগারের তত্ত্বটি বেশ বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

পাকিস্তানে ছিনতাই হতে পারে : মিডিয়া মোগল খ্যাত রুপার্ট মারডক এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়নি। এটি পাকিস্তানের উত্তরে জনবসতিহীন কোনো এলাকায় কেউ ছিনতাই করে নিয়ে গেছে।

তবে পাকিস্তান এ আশঙ্কা নাকচ করেছে।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.