‘আনজু ওয়াইলেই’ ডাইনোসরের নাম। ইংরেজিতে the chicken from hell, বাংলাতে ‘নরক থেকে আসা মুরগি’! সুমেরীয় পৌরানিক কাহিনীর এক রাক্ষসের নামে এই ডাইনোসরের নাম রাখা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, উত্তর আমেরিকা থেকে উদ্ধার করা কিছু জীবাশ্ম পাখির মতো দেখতে এই ডাইনোসর।
ডাইনোসরটির পরিচয় নিয়ে অনেক গবেষণার পর বুধবার নিশ্চিত হয়েছেন গবেষকরা। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা ও সাউথ ডাকোটা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ‘আনজু ওয়াইলেই' নামের ডাইনোসরের জীবাশ্ম।
জীবাশ্মটির মাথার আকৃতি অনেকটা পাখির মতো। এর দন্তবিহীন ঠোঁট রয়েছে। খুলিতে রয়েছে একটি অদ্ভুত ঝুঁটি৷ হাতে বড় ধারালো থাবা, দীর্ঘ পা এবং সেগুলো ছোট পালকে ঢাকা। বিজ্ঞানীরা জানালেন, উত্তর আমেরিকায় প্রায় ১০০ বছর আগে এ ধরনের ডাইনোসরের একটি হাড় পাওয়া গিয়েছিল, তখন থেকেই ঐ অঞ্চলে তাদের অনুসন্ধান চলছে। অন্তত ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে পৃথিবীতে এদের অস্তিত্ব ছিল বলে ধারণা তাদের।
গবেষক এমা শ্যাখনার বললেন, ‘আমি জানি না এরা কি গর্জন করত, হাসত, না দৌড়াত৷ কারণ এটা অদ্ভুত ধরনের একটি মুরগি যা একদম দৈত্যের মতো দেখতে। ’
আনজু ওয়াইলেই ১১ ফুট লম্বা, এর উচ্চতা ৫ ফুট আর ওজন ২০০ থেকে ৩০০ কেজি হতে পারে। একজন গবেষক ডাইনোসরটির বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘আপনাকে যদি টাইম মেশিনে করে ডাইনোসর যুগের শেষ সময়ে নর্থ আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন এই পাখিটিকে দেখে আপনার প্রথম প্রতিক্রিয়া হবে – কী অদ্ভুতুড়ে দেখতে একটা পাখি! সাধারণত ডাইনোসর বলতে যে চিত্রটি মানুষের চোখে ভেসে ওঠে, এটা তা থেকে একেবারেই ভিন্ন। ''বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ছোট ছোট পালক বিশিষ্ট এই ডাইনোসর থেকেই পূর্ণাঙ্গ পাখিদের রূপ বিকশিত হয়েছিল। যদিও প্রাচীন পাখির অস্তিত্ব অন্তত ১৫ কোটি বছর আগে পাওয়া যায়।
তবে এই ডাইনোসরদের মেরুদণ্ডে বাতাস চলাচলের জায়গা রয়েছে এবং পায়ের হাড়ে আছে গর্ত। পালক সমৃদ্ধ ফসিল একেবারেই বিরল এবং আনজু ওয়াইলেই-র মতো মস্তিষ্কের এমন গঠন আজ পর্যন্ত কোনো ডাইনোসরের ফসিলে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।