আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিতুর এপ্রিল


আজ ঘুম থেকে উঠেই একটা অদ্ভুত কাজ করলাম। তখনো ভোর। সূর্যের আলো বেডরূমে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে কেবল। আমার কি জানি একটা হল। হুট করে ফোন করে একজনকে বলে ফেললাম ভালোবাসি।

কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থেকে সেও সম্মতি জানালো। তার কন্ঠে আনন্দের ঝিলিকটা খুব বোঝা যাচ্ছিল। এর ঠিক দুই ঘন্টা পরে আমরা পাগলের মত দুজন দুজনাকে ফোন করতে থাকলাম, যেহেতু দুজনা একই সময়ে চেষ্টা করছিলাম তাই দুজনারই ফোনই বিজি ছিল। আমি ভীষণ অস্থির হয়ে উঠলাম। কিন্তু ও ঠিক উল্টো কাজটা করল, ও ফোন করা বন্ধ করে আমার ফোনের অপেক্ষা করতে লাগলো।

আর হয়ত তাই ঠিক দু-বারের চেষ্টাতেই ওকে পাওয়া গেল। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।
বললাম: ভালো আছো?
ও বলল: হ্যা।
আমি বললাম: কি কর?
ও বলল: এই তো ক্যাম্পাসে যাবো, ব্যাগ গোছাচ্ছি।
ব্রেকফাস্ট হয়েছে? দুজনা একসাথেই একই কথা জিজ্ঞেস করতে যেয়ে হেসে উঠলাম।


এরপর আরো কিছুক্ষণ হাসাহাসি চলল, আমরা কীভাবে ফোন বিজি পাচ্ছিলাম সেটা নিয়ে।
এক পর্যায়ে,
আমি বললাম: আসলে খুব জরুরী একটা কথা বলতে ফোন দিয়েছি।
আমার কন্ঠে সিরিয়াস কিছু একটা ছিল, আমি নিজেকেই ঠিক চিনতে পারছিলাম না।
ও বলল: হ্যা, জানি।
আমি ভীষণ বিষ্মিত।


অবাক হয়ে বললাম: তুমি জানো?
ও বলল: হ্যা।
আমি বললাম: বলত কি?
ও বলল: সত্যি শুনতে চাও?
আমি বললাম: হ্যা।
ও বলল: তুমি আমাকে ভালোবাসো না, শ্রেফ মজা করার জন্য সকালে ঐ কথা বলেছো এই তো?
আমি বললাম:....
আমি আসলে কিছু বলতে পারলাম না, আমতা আমতা করতে থাকলাম। একদিকে রিলিফের একটা শান্ত অনূভূতি, আবার ওর বুদ্ধিমত্তা-আন্ডারস্ট্যান্ডিং নিয়ে মুগ্ধতা, অন্যদিকে কোথাও একটা পরাজয়ের স্বাদ...তারমানে ও সকাল থেকে একই মজাটা করছিল।
প্রথমে ভীষণ রাগ হল, ধুত্তর ১লা এপ্রিল।

দিনটাই আসলে খারাপ। পরে মনে হল বাহ খারাপ কি, ভালৈ তো, চিন্তা আর অনুভূতি কিছুটা সামলে নিতে না নিতেই,
ও বলল: এই কথাটা বলার জন্য আমিও তোমাকে বারবার ফোন...
আমি এবার একটু হড়বড় করেই বললাম: সেটা তো মানে, আমি আগে থেকেই জানি। হে হে হে।
ফোনের ভেতর থেকেই আমার হে হে টা কেমন যেন বিকৃত শোনালো।
ও মিষ্টি করে একটু হেসে বলল: তাহলে রাখি?
আমি বললাম: না, নিতু প্লিজ, না।


..............................................................................................

অনেকক্ষণ ধরে অফিসে বসে আছি। বস একটা জরুরী মিটিং এ দেশের বাইরে। এরমধ্যে অন্তত সাত বার ফোন দিয়েছেন। প্রতিবারই ওয়েটিং। আমি অফিস সহকারীকে দিয়ে মোবাইলে দু হাজার টাকা ঢুকিয়েছি।

আর চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ করছি। ওপাশ থেকে নিতুর নিঃশ্বাসের শব্দকে সমুদ্রের ঢেউ এর মত মনে হচ্ছে। এই ঢেউ এর শব্দ উপেক্ষা করার ক্ষমতা আমাকে দেয়া হয়নি।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।