আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা ক্লাস টেনে আর আসিফের বড় ভাই ক্লাস নাইনে...... ... ...

ক্লাস টেনের শেষের দিকে... মডেল টেস্ট শেষ। এই সময় দেখা যায় স্কুলের শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের বন্ধুর মতন হয়ে যায়...... হয়তো স্কুলের একেবারে সিনিয়র স্টুডেন্ট বলেই কিনা। আবার হতে পারে কয়েকমাস পরে চাইলেও এদের আর শাসনে রাখতে পারবে না হয়তো তাই তেঁদর পোলাপানের হাত থেকে বাঁচার জন্য এমন বন্ধুর মতন হয়ে যায় আবার হতে পারে পাশ করে বের হয়ে গেলে স্নেহ শাসনের এই ছাত্র-ছাত্রীদের আর পাবেন নাহ তাই।

যাক সে কথা। এমন গুরুগম্ভীর কিছু নিয়ে কিছু লিখতে মন চায় না।

এমনিই লিখতে ইচ্ছা হয় তার উপর এগুলা নিয়া লেখলে নিজেকে বিশিষ্ট লেখক বলতে হবে তার জন্য এসব বাদ। হালকা কিছুই লিখি সবসময় মনে হয় আমি।

যা বলছিলাম। ক্লাস টেনের শেষের দিকে। জীবনের এই সময়টাতে মনে হয় ভালো কিন্তু হালকা তেঁদর ছেলে মেয়েরাও শিক্ষকদের সাথে মজা নিতে ছাড়ে নাহ।



বিএএফ শাহীন কলেজ কুর্মিটোলা স্কুলের নাম। মুহাঃ এরশাদ উল্যাহ নামের আমাদের একজন ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক ছিলেন। তাঁর ফ্যাশফ্যাশে গলার জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। আর ছেলেদের ঘাড়ে হাত দিয়ে মাথা নিছু করিয়ে পিঠের ওপর বিশাল সাইজের থাবার কথা সবার জানা। পড়া না পারলে বা কেউ ক্লাসে দুষ্টামি করলে এটা ছেলেদের জন্য তাঁর পক্ষ থেকে তোফা ছিল।



কিন্তু মডেল টেস্ট হয়ে যাবার পরে তিনি আর আমাদের মারেন নাহ। ক্লাসে এশে কোন প্রশ্নের উত্তর কীভাবে লিখলে ভালো নাম্বার পাবো, কোথায় কোথায় আরবি কোটেশান দিতে হবে বা নিজে কোরআন শরীফ থেকে প্রাসংগিক কোটাশান বের করে দিতেন। মাঝে মাঝে যখন আমরা বলতাম স্যার পড়তে ইচ্ছা করতেছে নাহ তখন আমাদের সাথে ক্লাসে বসে বসে নানা বিষয়ে কথাবার্তা বলতেন।

আমাদের স্কুলটা কলোনির কাছাকাছি হবার কারণে দেখা যায় একই পরিবারের ভাই বোন সকলেই সেখানে পড়ত।

আমাদের সাথের এক বন্ধু আসিফ ইকবাল।

আমরা তাকে একবাল বলে খ্যাপাতাম বলে সে তার নাম চেঞ্জ করে আসিফ হোসেন নাম ধরেছে। তো ক্লাসের খাতায় আসিফ হোসেন লিখা।

একদিন এরশাদ উল্যাহ স্যার ক্লাসে কিছু লিখতে দিয়েছেন। সবাই যে যার মতন লিখে তা স্যারকে জমা দিয়েছে। স্যার ক্লাসেই তা দেখে নাম ডাকছেন আর তার কী কী ঠিক করতে হবে তা বলে দিচ্ছিলেন।

আসিফের খাতা আসতেই স্যার বলে উঠলেন

"এই আসিফ হোসেন কেরে?"
"স্যার আমি" আসিফ দাঁড়িয়ে বলল।
"তুই আবার আসিফ হোসেন হইলি কবেরে? তোর বাবার নাম ইকবাল ভাইয়ের নাম ইকবাল তুই আবার হোসেন হইলি কবে?"
"স্যার ওরে আমরা একবাল ই ডাকি, হোসেন ডাকি নাহ" পিছন থেকে কেউ একজন মাথা নিছু করে জানান দিলো কথাটা।

স্যার তখন বললেন "তোরা দুই ভাই যে কেমন শয়তানি করছ তাতো আমরা দেখছি, তোর থেকে তোর বড়টা ছিলো বেশি শয়তান"

"স্যার কী করছে ভাইয়া?" ----গল্পের গন্ধ পেয়ে কয়েকজন স্যারকে উসকে দেয়।

স্যার তখন বলা শুরু করে।
আসিফকে দেখিয়ে... "ও যখন স্কুলে ভর্তি হয় তখন ওর ভাই পড়ে ক্লাস নাইনে।

ছোট ভাইকে হাতে ধরে স্কুলে নিয়া আসছে। স্কুল ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছে। নিজের ক্লাসে নিয়া এশে পাশে বসাই রাখছে। "

(ছোটদের আগে ছুটি হয়ে গেলে দেখা যেত তাদের কয়েকজন বড় ভাই অথবা বোনের ক্লাসে টিফিনের পরে এসে বসে থাকত, ছুটির পরে এক সাথে বাসায় ফিরত। )

"টিফিনের পরে ছিলো আমার ক্লাস।

দুই জনের চেহারা প্রায় একরকম দেখে জিজ্ঞাস করলাম কিরে তোর ভাই নাকি?"
আসিফের ভাই: জ্বী স্যার আমার একমাত্র ছোট ভাই।
স্যার: তোর আর কোন ভাইবোন নাই?
আসিফের ভাই: না স্যার নাই। একটাই ভাই আমার।
স্যার: তো তোর ভাই তোর থেকে এত ছোট কেনরে?
আসিফের ভাই: স্যার আমার জন্মের পর আব্বা অনেকদিন বিদেশ ছিলো তো তাই।


স্যার এই কথা বলার পরে পুরা ক্লাসে তখন হাসির রোল পড়ে গেছে।

বেচারা আসিফ তো তখন লজ্জায় বেঞ্চের তলায় পারলে মুখ লুকায়......... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.