আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাস্তিকের পৃথিবী

- Pew Research Center ধার্মিকদের সংখ্যা নিয়ে গবেষণা করছে। এথিষ্ট সেন্সাস এখন ফেসবুকে নাস্তিকদের লেখালেখির প্রধান একটি বিষয়। স্বতস্ফূর্তভাবে নাস্তিকরা এথিষ্ট সেন্সাসে রেজিস্ট্রেশন করছে, নাস্তিকদের সংখ্যার উর্ধগতি দেখে আনন্দিত হচ্ছে সন্দেহ নেই। আনন্দিত হবারই কথা। যেখানে পৃথিবীর বড় একটা ধর্মে ধর্ম ত্যাগের শাস্তি মৃত্যুদন্ড, সেখানে সে ধর্ম থেকেও অনেক কে বেরিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশের এথিষ্টদের রেজিষ্ট্রেশনের সংখ্যা দেখে দেশের শিক্ষিত সচেতন তরুণদের ধর্মান্ধতা থেকে বেরিয়ে আসার ভয় কাটবে, কোন সন্দেহ নাই। আজ পৃথিবীর প্রতি ৬ জনে একজন নাস্তিক। আমি ব্যক্তিগতভাবে এথিস্টদের পরিসংখ্যান দেখে খুব একটা অবাক হইনি। প্রায় ১০ বছর হলো ইউরোপে থাকি। পেশাগত কারনে অসংখ্যবার ইউরোপিয়ান তরুণদের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে।

কাজের ফাঁকে কখনো কখনো ধর্ম নিয়ে তরুণদের সাথে আমার কথা হয়। বাক স্বাধীনতা এবং ধর্মীয় নিরপেক্ষতা থাকায় ইউরোপের মানুষ তাদের ধর্মীয় চিন্তা-ভাবনার কথা অকপটে প্রকাশ করে। গত ১০ বছরে শত শত তরুণদের মধ্যে আমি ১ জন তরুণকেও পাইনি যে ধর্মে বিশ্বাস করে। তরুণদের অনেকেই পারিবারিক ও সামাজিক কারনে ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহন করে, কিন্তু ধর্মে অবিশ্বাস এরা কখনও গোপন করেনা। তবে বয়স্করা এখনও ধর্ম বিশ্বাস করে এবং নিয়মিত চার্চে যেতে দেখা যায়।

ইউরোপের এই তরুণদের ধর্মের প্রতি অবিশ্বাস দেখে আমি অনেক আগেই বুঝতে পেরেছি এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসও করি সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন পৃথিবীর সব মানুষ ধর্মের জাল থেকে বেরিয়ে আসবে। প্রাচীন ও মধ্যযুগে অশিক্ষিত ও বর্বর মানুষকে সামাজিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মানুষ ঈশ্বর ভাবনা ও ধর্মের আবিস্কার করেছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন ধর্মই ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে না পারায় সব সমাজেই নাস্তিকদের উপস্থিতি সব সময়ই ছিলো। বর্তমান যুগের কথা সবারই জানা। মানুষ শিক্ষিত হয়েছে।

জ্ঞানে বিজ্ঞানে বিশ্ব এগিয়েছে বহু দূর। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে যুগে যুগে মানুষ ধর্মে বিশ্বাস হারিয়েছে। একদিন পৃথিবীর সব মানুষ ধর্মে বিশ্বাস হারাবে। হয়তো আমরা তা দেখেই যেতে পারবো। যদি তখনও আমদের বৃদ্ধ বাবা-মা বা দাদা-দাদীরা বেঁচে থাকেন, তারা হবেন আমাদের বিনোদন।

কারন তারা তখনও প্রশ্ন করবেন- ''এই আকাশ-বাতাস, সাগর-নদী বৃক্ষ-পাহাড় কি তুই বানাইসোস? '' -লুক্স ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।