আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ট্রাইবুনাল ষড়যন্ত্র-১

আমার এই ব্লগের কোনো লেখা বা লেখার কোনো অংশ আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া যে কোনো প্রকার মিডিয়াতেই প্রকাশ করা যাবেনা। যদি তা করা হয়, তাহলে আমি আইনগত এবং অবস্থাভেদে ব্লগের আইন/প্রসিজিওর অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে বাধ্য হব মাহমুদুর রহমানের "আমার দেশ" পত্রিকা আজকে ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান ও বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এবং বিশ্বের অন্যতম খ্যাতিমান আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ জনাব ডক্টর আহমেদ জিয়াউদ্দিনের একটি ব্যাক্তিগত স্কাইপির আলাপ ট্রান্সক্রিপ্ট আকারে তাদের পত্রিকায় ছেপেছে এবং এদেরই সাঙ্গ-পাঙ্গ রা সেসব ইউটিউবে ছড়িয়ে দিয়েছে। একই সাথে তারা আরেকজন আইন বিশেষজ্ঞ জনাব রায়হান রশীদেরও নাম উল্লেখ করেছে তাদের রিপোর্টে। জামাত ঠিক কতটুকু নোংরা ও ইতর হতে পারে এটি কেবল তারই একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বেশ কিছুদিন আমি কাজ করেছি "আই স্পাই" নামে একটি প্রতিষ্ঠানের একজন সেলস এসিস্টেন্ট হিসেবে।

এরা তাদের স্টোরে ডিটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট সহ বিভিন্ন ধরনের হ্যাকিং, বাগিং, ইত্যাদি ডিভাইস বিক্রি করে। যেখান থেকে আমার একটা ধারনা আছে যে এই স্কাইপি কনভারসেশন হ্যাক করা কিংবা এই জাতীয় ঘটনা ঘটাবার জন্য কি কি ইকুইপমেন্ট ব্যাবহার করা যেতে পারে এবং এসব করবার জন্য কি পরিমাণ স্কিলড লোকজন প্রয়োজন। ইউটিউব কনভারসেশন শুনে আমি যেটা ক্লিয়ারলি বুঝলাম যে মাননীয় বিচারপতির বাসায় জামাত ও তাদের ভাড়া করা গোয়েন্দারা ডিভাইস বসিয়েছে। এবং আমার ধারনা মতে, শুধু এক জায়গায় না, উনার বাসার প্রতি রুমেই তারা এই ডিভাইস বসিয়েছে এবং এই ডিভাইস বসিয়েই তারা আসলে উনার বলা সকল কথা রেকর্ড করে তা আবার প্রকাশ করে নোংরামির চূড়ান্ত করেছে। এদিকে একটা কথাও বলে রাখা ভালো যে, শুধু যে উনার স্কাইপি কনভারসেশন হ্যাক করেছে তা না, সূত্র মতে উনার ইমেইল আইডিও হ্যাক করা হয়েছে।

একজন সিটিং বিচারপতি এবং এত সফিস্টিকেটেড একটা ট্রাইবুনালের বিচারপতির বাসায় এই অত্যাধুনিক বাগস, ডিভাইস, ইকুইমেন্ট বসালো জামাতীরা এবং তারা আজকে গর্ব সহকারে তা বাজারে ছেড়েছে। আমরা কি একটা মগের মুল্লুকে বসবাস করি? আমরা কি একটি ফেইল্ড স্টেইটস এর বাসিন্দা? এই হ্যাকিং এর মাধ্যমে কি হয়েছে? ১) বিচারপতির ব্যাক্তিগত প্রাইভেসীকে ক্ষুন্ন করা হোলো। ২) বিচারপতির ইমেইল, কম্পিউটারে থাকা সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করা হোলো। ৩) সাক্ষীদের নানাবিধ ডিটেইলস নিশ্চয়ই বিচারপতির কাছে ছিলো, সেগুলোও চুরি হয়ে গিয়ে সেসব সাক্ষীদের জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে দাঁড়িয়ে গেলো। ৪) পুরো ট্রাইবুনালের সকল তথ্যকে পাচারের মাধ্যমে পুরো বিচার ব্যাবস্থাকেই এখন এক ধরনের হুমকির মুখে ছেড়ে দিলো।

৫) এটা পরিষ্কার হোলো যে, এরা অনেক আগে থেকেই এইসব তথ্য চুরি করার মাধ্যমে সাক্ষীর নাম জেনে নিত এবং তখন তাদের উঠিয়ে নিয়ে লুকিয়ে রাখা হোতো। সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি ও সাক্ষী গণেশ এই ক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট উদাহরণ। (সাক্ষী বালিকে ফ্রেব্রুয়ারী থেকেই পাওয়া যাচ্ছিলো না, অথচ ৯ মাস পরে প্রসিকিউশনের এই সাক্ষীকে জামাতের উকিলের গাড়িতে দেখা যায়। ) ৬) এই হ্যাকিং এর মাধ্যমে ডক্টর আহমেদ জিয়াউদ্দিন ও রায়হান রশীদের ব্যাক্তিগত জীবনে তারা হস্তক্ষেপ করেছে। উনাদের ব্যাক্তিগত জীবন এবং জীবনের নিরাপত্তাকে তারা হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

৭) একজন মানুষের যে প্রাইভেসীর অধিকার রয়েছে তা চরম আকারে খর্ব করা হোলো। ৮) এই কনভারসেশন তো আর একদিন হ্যাক করা হয়নি এবং একটি রুমে বসানো হয়নি। অনেক রুমে ডিফাইস বসানো হয়েছে এবং প্রতিটি ব্যাক্তর বাসাতেই বসানো হয়েছে বলে আমি ধারনা করি। এটা আমার মত সকলেই বুঝবেন। এই পুরো ব্যাপারটি দিনের পর দিন করা হয়েছে।

সেক্ষেত্রে ওই প্রতিটি ব্যাক্তির পরিবারের সদস্যরাও তাহলে এই নোংরামির স্বীকার হয়েছে এবং উক্ত ব্যাক্তিদের পরিবারের সকল সদস্যরা কোথায় কার সাথে কি কথা বলেছে সেগুলোও তাদের কাছে আছে। সুতরাং তাদের সকলের প্রাইভেসী নষ্ট হয়েছে এবং অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে। ৯) এই পুরো প্রক্রিয়াতে তারা এটাই প্রমাণ করলো যে, শুরু থেকেই তারা এই বিচারকে বন্ধ করতে বদ্ধ পরিকর ছিলো। এরা মুখে মুখে ফেয়ার ট্রায়ালের যেই কথা বলে, সেটা কতটা মিথ্যা আজকে তা হাতে নাতে প্রমাণিত হলো। ১০) এর আগে সাঈদীর বিপক্ষে একন সাক্ষীর ছেলেকে রাস্তায় মার-ধর করার যে রিপোর্ট আমরা দেখেছি, ধরে নেয়া যায় যে এই হ্যাকিং এর মাধ্যমেই তারা সেই সাক্ষীর বাসার ঠিকানা ও পরিবারের ঠিকানা পেয়েছে।

১১) ডিফেন্স টিম সাক্ষীর নাম ঠিকানা পাবার জন্য এর আগে একটা স্ক্যান্ডাল করেছিলো এবং আদালতের গোপন নথি নীল ক্ষেত ফোটোকপির দোকানে ফটোস্ট্যাট করবার সময় ধরা খেয়েছিলো। সেই প্রক্রিয়ারই একটি অংশ তাদের এই হ্যাকিং এর ঘটনা। সাক্ষীদের নাম-পরিচয়, ঠিকানা এগুলো তাদের কেন দরকার? সাক্ষীকে খুন করবার জন্য? গুম করবার জন্য? ভয় দেখাবার জন্য? আমার দেশে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কোনোভাবেই প্রমাণিত হয়না যে বিচারপতি নাসিম কোনো পক্ষপাত মূলক আচরণ করেছেন বরং এই কনভারসেশনে দেখা যাচ্ছে উনি বার বার একটা স্ট্যান্ডার্ডের কথা বলছেন, সঠিক ও ন্যায় বিচারের কথা বলছেন। এর আগেও তিনি তার প্রদত্ত স্টেটম্যান্টে বলেছেন যে, এই বিচার ব্যাবস্থা ও বিচারের ধারনা সম্পুর্ণ নতুন ধরনের হবার কারনে তিনি অনেকের সাথেই এই বিষয়ে পরামর্শ করেছেন, জানতে চেয়েছেন আইনের বিভিন্ন দিকের কথা। ইনফ্যাক্ট এই বিচারের ক্ষেত্রে সাহায্য করবার জন্য যে কোনো মতামত, তথ্য প্রধান সকল কিছুই যে বিচারকের পক্ষ থেকে স্বাগত করা হবে, সেটিও পাবলিক ডোমেইনে অনেকবার এসেছে।

এই বিচার, এই ট্রাইবুনাল আমি আজকে দিনের পর দিন দেখছি। এই বিচারের বিভিন্ন বিষয় আমি অত্যন্ত সুক্ষ্ণ ভাবে বুঝবার চেষ্টা করছি বিভিন্ন ভাবেই। আপনারা সকলেই জেনে থাকবেন এই বিচারকে বন্ধ করবার জন্য আজ তিনটা বছর এই জামাত, ডিফেন্স কাউন্সিল এরা কি পরিমাণ চেষ্টা করে গিয়েছে। সেই চেষ্টার অংশই হচ্ছে আজকের এই হ্যাকিং এর নোংরামি। আমি শীঘ্রই একটা বিশদ লেখা লিখব এই ট্রাইবুনালের পেছনের সকল ষড়যন্ত্র নিয়ে।

একটা একটা করে মুখোশ খুলব। অনেক কথাই বলিনি এতদিন। অনেক কথাই গোপন রেখেছি। কিন্তু আজকে আর চুপ করে থাকার সময় নেই। আজকে দেখাবার সময় এসেছে যে, কি করে জামাতীরা প্রতিটি দিনি, প্রতিটি সপ্তাহে এই বিচারকে বাঁধা দেবার জন্য অর্থ ব্যয় করেছে, কাজ করেছে।

আওয়ামীলীগের কত কাছের লোকও এই পুরো ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত, দেশের কত নাম করা আইনজীবি, তাদের সাঙ্গ পাঙ্গ কিংবা তাদের মেয়ের জামাইদেরও এরা লেলিয়ে দিয়েছে এই বিচারের বিরুদ্ধে। মিলিয়ন মিলিয়ণ ডলারের এই ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন আমাদেরই করতে হবে। সমগ্র জাতি এদের চিনে রাখুক। জেনে রাখুক কতটা নোংরা হতে পারে এরা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.