আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অণুগল্পঃ বৃষ্টিতে মেহেদী নয়, কেমিকেল রাঙা হাত ধরার গল্প

ল্যাবে ঢোকার আগে থেকেই আকাশ থমথমে, ল্যাব শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে থেকেই বৃষ্টি। ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাস না থাকলে আমি বৃষ্টির আগেই ক্যামপাস থেকে বেরিয়ে যেতাম, কিন্তু ক্লাসটা না করে উপায় ছিল না। ক্লাস শেষে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরও যখন বৃষ্টি থামলো না, বরং মুষলধারে পড়তেই রইলো, তখন নিহিনই বললো ভিজেই যাবে। এখন ভিজে ভিজেই হাঁটছি বাসার দিকে, কোন রিক্সাও পাচ্ছি না। আমি অবশ্য মোটেও রোমান্টিক মানুষ না।

ভেতরে রোমান্টিসিজম যতটা আছে, তার কিছুই বাইরে প্রকাশ করতে পারি না। পারলে এতদিনে নিহিন বুঝে যেত, কতটা পছন্দ করি ওকে, ওর জন্য কত বেশি অনুভূতি তৈরী হয়েছে এতটা দিন ধরে বুকের ভেতর। ঠিকই বলে দিতে পারতাম, বৃষ্টিস্নাত মেয়েটায় আমি মুগ্ধ। ওর হাত ধরেই বৃষ্টিতে ভিজতাম এখন। ল্যাবে কাজ করার পর কেমিকেল হাতে লেগে লাল হয়ে আছে।

দুষ্ট বুদ্ধি মাথায় খেলে গেলো, বললাম, ''হাতে মেহেদী দিলি কবে? দারুণ লাগছে!'' নিহিনের সবসময়ের মতই অনুভূতিশুন্য উত্তর, ''কেমিকেল লেগে হাত লাল, মেহেদী না হাদারাম!'' জানতামই এই উত্তর দেবে, তবু একটা আশা ছিল, যদি বলে, 'ধরে দেখ, কেমিকেল!' তাহলে আ্যাট লেস্ট হাতটা একবার ছোঁয়া যেত। আমি আর কিছু বললাম না। বাসায় ঢোকার আগে নিহিন হঠাত দাড়িয়ে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, ''ভালোবাসার মানুষের কাছে যে কোন কিছু তুই চাইতেই পারিস, তোর অধিকার আছেই, কি প্রয়োজন ফন্দি-ফিকির ভণিতা করার, মিথ্যে কারণ বানানোর, বল!'' আমি চুপচাপ দাড়িয়ে ছিলাম, ও মিনিটখানেক দাড়িয়ে তাকিয়ে থাকলো ওর কেমিকেল মাখা হাতের দিকে, তারপর চলে গেল। আমি ভাবতেই থাকলাম, কি বললো নিহিন। এত সহজে কি করে বুঝি আমি, ওর হাত ধরার অধিকার আমাকে দিয়ে গেল, আফটার অল, হাদারামরা এত সহজে বোঝে না।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।