দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা, কারো দানে পাওয়া না! আমার ব্যর্থতা যে কালাই রুটি নামের ঐতিহ্যবাহী জিনিসটার সাথে পরিচয় হইছে রাজশাহীতে আসারও দেড় বছর পর। মানে দেড় বছর কাল মিস করছি এই জিনিসটা। ইহা একপ্রকার বিশেষ রুটি যা বানাতে দরকার হয় ঘুম। পাওয়া যায় রাত ১০ টা থেকে আড়াইটা-তিনটা পর্যন্ত। প্রাপ্তিস্থান মেইনরোডের পাশের ঝুপড়ি গুলো।
খালারা প্রতিদিন ১০ টায় এসে, সরঞ্জামাদি সাজিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন । বসে বসে ঘুমান তারা। আপনি গিয়ে বলবেন খালা একটা কড়া করে। উনি চোখ খুলে বলবেন কয়টা? আপনাকে আবার রিপিট করতে হবে। এরপর খালা মিনিট খানেকের জন্যে সজাগ হয়ে রুটি চুলায় দেবেন।
তারপর আবার ঘুমাবেন। রুটির দিকে খেয়াল রাখতে হবে আপনার। কালো কালো ভাব হলেই খালাকে আওয়াজ দিতে হবে। খালা হইছে নাকি? খালার হাটুতে রাখা মাথাটা হঠাত একটা ঝাকি দিয়ে উঠে যাবে । নিপুন দক্ষতায় এরপরের দুই মিনিটের সজাগকালে আপনার হাতে পরিবেশিত হবে কড়কড়া কালাই রুটি, বেগুন ভর্তা, ঝাল ভর্তা, ধনে পাতার চাটনি এবং এক গ্লাস পানি।
এই অমৃত খাওয়ার পর সবার মনটা জেনারাস হয়ে যায়,তাই বিল না দিয়ে কেউ ভাগে না, ঘুমন্ত খালাকে আরেকবার ডেকে কালাই রুটি বাবদ দশটাকা এবং ভর্তাবাবদ পাঁচ টাকা ধরিয়ে দিয়ে ঘরে ফেরে
অনেকেই এই অমৃত খেয়েছেন। অনেকেরই খাওয়া হয় নি। যারা খেয়েছেন তারা স্মৃতি রোমন্থন করেন। মুখে চলে আসা জল সামলান, আর যারা খান নাই তাদের জন্য কিছু ছবি দিয়ে দিলাম।
এই হলো কালাই
আর এই হলো বেগুন ভর্তা
ধনে পাতার চাটনী
তৈরীর মেইন অনুষঙ্গ কিন্তু মাটির চুলা
সেদিন টিউশনিতে গিয়ে তো থ ! আন্টি এসে বললেন- আপনি কি আমাদের কালাই রুটি খান? জানালাম আপনি খুব প্রিয় খাবারের নামটা বলে ফেলেছেন।
উনি এনে দিলেন গরম গরম কালাই রুটি, ঝাল ভর্তা, বেগুন ভর্তা সাথে সুজির তৈরী একটা আইটেম।
কালাই আখ্যান ফুরোলো। পোষ্টটি উৎসর্গ করছি চেয়ারম্যান০০৭ ভাইকে। চেরমেন সাব নাকি কালাই কখন খান নাই,দেখেনও নাই।
আর ছবির জন্য বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ শরীফ নাজমুল ভাইয়ের কাছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।