আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রণয়ের পৃথিবীতে নারীবাদই প্রথম এবং শেষ কথা

যদি ঠাঁই দিলে তবে কেন আজ হৃদয়ে দিলে না প্রেমের নৈবদ্য নীলিমা, তুমিই তো আমায় প্রণয়ের প্রথম পাঠ দিয়েছিলে। আবদ্ধ করেছিলে এক বিমুগ্ধ কারাগার প্রকোষ্ঠে! এই নষ্ট ভ্রষ্ট সমাজ সভ্যতার পাটাতনেও কী করে ভালোবাসার ফুল ফোটে তুমিই তো আমায় তা দেখিয়ে দিয়েছিলে নির্দ্বিধায়- এই শোষণ নিপীড়নের ইতিহাসের কালো অধ্যায়েও কী করে রাতের নক্ষত্রের মত জ্বলজ্বল করে উঠে মানুষের ভালোবাসার উচ্ছ্বাস তুমিই তো আমাকে তার প্রথম পাঠ দিয়েছিলে! রক্তলাল পথের শেষ প্রান্তে এসে কী করে মানুষ খুঁজে নেয় সবুজের মানচিত্র তুমিই তো আমাকে তা দেখিয়েছিলে কী নিপুণ উল্লাসে! মনে পড়ে , নীলিমা ? কার্জনের সবুজ গালিচায় আমাদের নিরন্তর তর্কযুদ্ধের কথা? আমি তো তোমাকে বলতাম শুধু পৃথিবীর দ্বান্দ্বিকতার রক্তাক্ত ইতিহাসের কথা। তুমি আমাকে বলতে এই রক্তধারায় মিশে আছে কেবলি হৃদয় আবেগের উপাখ্যান! তুমি আমাকে বলতে, মানব, বুঝে নাও, আমাদের পথ লাল হতে পারে, তবু আমাদের গন্তব্য যে সবুজ! তুমি আমাকে বলতে, প্রেমিক, চর্মচক্ষু নয়, তোমার অন্তরাত্মা দিয়ে তাকাও যেভাবে তুমি হারিয়ে যাও আমার কাজল কালো চোখের গহীনে সেভাবে তাকাও হৃদয় আবেগের গভীরতা দিয়ে লাল নয়, লাল নয়, রক্তের ভেতরে তুমি কেবলি সবুজের রঙতরঙ্গ খুঁজে পাবে” নীলিমা, আমি তোমাকে বলতাম দ্বান্দ্বিকতাই পৃথিবীর প্রথম এবং শেষ কথা। তুমি তা নাকচ করে দিতে নিমিষেই... তুমি বলতে, “ সভ্যতার নির্যাস দ্বান্দ্বিকতায় নয়, সংঘাতে নয়- সভ্যতার নির্যাস ভালোবাসায়, সহযোগিতায়”! নীলিমা, আমাকে তোমার সম্মোহনী কারাগারের অতল প্রকোষ্ঠে নিরন্তর থাকতে দাও, উপভোগ করতে দাও তোমার প্রণয়-দীক্ষা, নীলিমা, আজ নীলসাগরের জলতরঙ্গের মত বিমুগ্ধ বেদনা ছড়িয়ে ফিরে যেও না! ফিরে যেও না অন্য এক অচিন বন্দরে- এই কার্জনের সবুজ গালিচার কসম; কসম এই হাকিমের ঝরঝরে আড্ডার প্রাণোচ্ছলতার! আমাকে এই একাকী প্রান্তরে রেখে ফিরে যেও না- ফিরে যেও না অন্য এক অচিন বন্দরে......... নীলিমা, তুমি ফিরে গেলে বলো কে আমাকে বোঝাবে আদি কণা কী করে প্রেমের টানে মিলিত হয়ে গড়ে তোলে এই মহাপৃথিবী? তুমি চলে গেলে বলো কে আমাকে বোঝাবে অণুতে পরমাণুতে শিলায় শিলায় পাতায় পাতায় সঞ্চালিত হয়ে ভালোবাসা তার অর্গল খুলে দেয় এই প্রেমময় পৃথিবীর দ্বারে- আর মানুষ তার অমৃত সুধা পান করে হয়ে উঠে প্রণয় পূজারী! নীলিমা, তুমি চলে গেলে বলো কে আমাকে বলবে, “চলো, হেমন্তের শিশির ঝরে পড়া ধানক্ষেতের পথ ধরে চলে যাই দিগন্ত দৃশ্যান্তরে” কে আমাকে বলবে, “চলো চন্দ্রিমা রাতের জোছনা মায়ায় অবগাহন করে নিজেকে শুধরে নেই- শুধরে নেই একটি মায়াবী প্রভাতের আলোকোজ্জ্বল সূর্যোদয়ের লাল বিস্ফোরণের জন্য!” অথচ আজ সেই তুমিই, নীলিমা, তোমার শেখানো সমস্ত পাঠকে অস্বীকার করে চলে গেলে নিমিষেই, চলে গেলে কোন এক অচিন বন্দরে চলে যেতে যেতে পৃথিবীর কানে কানে বলে গেলে, “ ভালোবাসা বরাবরই দ্বান্দ্বিকতার সরল সূত্র মেনে চলে”! ভালোবাসা বুঝি এমনই হয়- ভালোবেসে অবশেষে নীলিমারা চলে যাবে অন্য ঘরে আর বিমুগ্ধ ভালোবাসার বিষণ্ণ আবেশ নিয়ে প্রেমিক পড়ে রবে নিঃসঙ্গ পৃথিবীর এই নির্জন প্রান্তরে! কে বলে আজ পুরুষতন্ত্রের বিজয় আখ্যানের কথা? প্রণয়ের পৃথিবীতে নারীবাদই প্রথম এবং শেষ কথা!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।