আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লুলে লুলায়িত প্রেমের গল্প । বুঝলে মজা গ্যারেন্টেড, বিফলে মূল্য ফেরত

আমি একজন কল্পবিলাসী মানুষ । জীবনের বন্ধুর পথে হেটে চলেছি লক্ষ্যে পৌঁছাবো বলে । এ পথচলায় আমার স্বপ্নগুলোই আমার প্রেরণা । পথের সঙ্গী হিসেবে আছে আমার গিটার । স্বপ্নগুলোকে গিটারের ছয়টি তারে বাঁধার চেষ্টার জীবন কেটে যাচ্ছে............ প্রেম কি শুধু কিশোর , যুবক আর তরুণদের জন্য ? আজ আপনাদের এক পিচ্চির প্রেমকাহিনী শোনাবো ।

শুভ্র , ক্লাস প্লে এর ছাত্র । দুষ্টুমির রাজা , মনে মনে নায়ক । যৌথ পরিবারের একমাত্র শিশু সদস্য হওয়ায় অল্প বয়সেই পেকে গেছে । শাহরুখ , হৃতিক এর সকল ডায়ালগ তার মুখস্থ । ইঁচড়ে পাকার সাইড এফেক্ট হিসাবে তার মাথায় ঢুকল বন্ধুদের সামনে হিরো হতে হলে তাকে প্রেম করতে হবে , গার্লফ্রেন্ড বানাতে হবে ।

কি করা যায়…... টার্গেট করা হল ক্লাসের সবচেয়ে সুইট মেয়ে টুনিকে । এবার মিশনে নামার পালা । ভেবে চিন্তে নামতে হবে , নইলে টিচারের হাতে ধরা খাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা । টিফিনের সময় পাশে কেউ থাকে না , এটাই বেস্ট সময় । প্রথমে প্ল্যান ছিল তার কয়েকজন বন্ধু টুনিকে এটাক করবে , সে যেয়ে হিরোর মতো এন্ট্রি মারবে ।

কিন্তু কেউ টিচারের মারের ভয়ে রাজি হল না । কি আর করা, একশন হিরো না হয়ে বাধ্য হয়ে রোম্যান্টিক হিরোর পার্ট নিতে হল । ফিল্মের অনেক গুলি ডায়ালগ থেকে খুব পছন্দের একটি ডায়ালগ সিলেক্ট করা হল , ফুল থেকে চকোলেট দিলে খুশি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি । তাই জমানো টাকা থেকে একটা কিটকেট কেনা হল । শেষ মুহূর্তে কি মনে করে জানি চকোলেটের সাথে একটা ফুল যোগার করে শুভ্র গেল প্রপোজ করতে ।

সবাই তখন টিফিন খাচ্ছিল বা খেলাধুলায় মগ্ন । বিভিন্ন পজিশনে তার বন্ধুরা পাহারায় আছে , কোনও টিচার দেখলেই সংকেত দিবে । অনেক সাহস নিয়ে মামার কৌটোথেকে চুরি করা জেল মাখা চুল আর বোতাম খোলা ইউনিফর্ম নিয়ে শুভ্র গেল টুনির সামনে । টুনি তখন তার বান্ধবীর সাথে টিফিন খাচ্ছিল । বাম হাতে চকোলেট , ডান হাতে ফুল , টুনির সামনে ফিল্মি স্টাইলে হাঁটু গেড়ে বসলো শুভ্র , ফুলটা বাড়িয়ে ধরে মিষ্টি গলায় গান ধরলো........... . -তুদে দেকা তো ইয়ে দানা তানাম -পেয়াল হোতা হে দিবানা তানাম -আব ইহা তে কাহা দাউ হাম -তেলে বাহু মে মাল জাউ হাম......।

চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে টুনি বলল- -এই তুবরও , কি বল ? বুজি না তো । টাস্কি খেয়ে গেল শুভ্র । টুনি যে হিন্দি নাও বুঝতে পারে সেটা তো আর চিন্তা করে দেখেনি সে । এখন উপায় ? বন্ধুদের সামনে তার ইজ্জতের ফালুদা হওয়ার দশা । হটাত মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল ।

বাংলায় প্রপোজ করলেই তো হয় । যেই ভাবা সেই কাজ । আবার শুরু করল শুভ্র ----- -তোমায় দেকলে মনে অয় -হাদার বতর তোমাল তাতে তিলো পলিতয় -ও ও ও , তিলো পলিতয়......... । চোখ আরও গোল গোল করে টুনি জিজ্ঞেস করলো— -মানে ? কি বলতো এতব ? -মানে আমি তুমাকে বালোবাতি । আই লাব ইউ ।

-চি , তুমি এতো পতা । -পতা হবো কেন ? আমি তোমাল বয়পেন , তুমি আমাল গালপেন । -মোতেও না । আমি এতো পতা না । এইগুলা বাদে দিনিত ।

আমি তিতারকে নালিত কলব । -কিনতু আমি দে তুমাকে বালোবাতি । আমি তুমাকে ছালা বাতবো না । এই বলে শুভ্র টুনির হাত ধরতে গেলে টুনি দিল ভ্যাঃ ... করে কেঁদে । শুভ্র ভয় পেয়ে দিলো দৌড় ।

আর এদিকে টুনি কাঁদতে কাঁদতে যেয়ে টিচারকে দিলো নালিস । -মেদাম , তুবরও না আমাকে পতা কতা বলেতে । টিচাররা তখন স্টাফ রুমে বসেছিলেন , সব ঘটনা শুনলেন তারা । সব শুনে টিচাররা মিলে টুনিকে বুঝিয়ে শান্ত করে পাঠিয়ে দিলেন ক্লাসে । টুনি চোখ মুছতে মুছতে ক্লাসে গেল ।

এদিকে টিচারদের হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ । অবশেষে কি আর করা , শুভ্রকে খুঁজে বের করে নরম গরম স্বরে বুঝিয়ে দেয়া হল এরকম যেন আর কখনো না করে । শুভ্র বেচারা জীবনের প্রথম প্রেমের মিশনে ফেল করে ভীষণ মন খারাপ করলো । তাছাড়া বন্ধুদের সামনে তার ইজ্জতের ফালুদা হয়ে গেছে । কি আর করা , বেঞ্চে মুখ ভার করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে বলল- - আগাল কিতি তিদকো তুম তাত্তি দিলতে তাহো , তো তারি কায়েনাত তুমে উতে মিলানে কি তাদিত মে লাগ জাতি হে ...... তুম তিরফ মেলে হো , তিরফ মেলে ।

একদিন তুমি আমাল বালোবাতা বুদতে পালবে । তেদিন তিক আমাল কাতে ফিলে আতবে । আই লাব ইউ........................তুনি.........আই লাব ইউ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।