আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রতিদিনের আমি

আমি যেমন গুছিয়ে কথা বলতে পারিনা, ঠিক তেমনি গুছিয়ে লিখতেও পারিনা। তাই ভুল-ত্রুটি নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন। বর্তমান কালে আমার প্রতিদিনের জীবনচক্র নিয়ে সামান্য লেখার চেষ্টা। অনেকে বলতে পারেন "কি হে বাপু, তোমার দিনাতিপাত পড়ে আমি কি করব?"। আসলেই চিন্তার বিষয়, তারপরও লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে তাই এই লেখা আমার প্রতি সপ্তাহের দিনগুলোকে মোটামুটি এভাবে ভাগ করা যায়ঃ ১) যেদিন কাজ থাকে ২) যেদিন ক্লাস থাকে ৩) যেদিন আমি ফ্রী ঘুমঃ প্রতি ৭২ ঘন্টায় (বা প্রতি ৩ দিনে) ১৮-২০ ঘন্টা।

কখনও ৩ দিন পরে একটানা ১৮ ঘন্টার ঘুম, কখনওবা ২ দিন পর ৬-৭ ঘন্টার ঘুম, কখনও আবার প্রতিদিন ৮-৯ ঘন্টার ঘুম । ঘুমের কোনো নির্দিষ্ট টাইম-টেবিল নেই। যেদিন যখন ঘুম আসে, সেদিন তখন ঘুমাই। কোনোদিন রাত ১০টায় ঘুমাই, আবার কোনোদিন ভোর ১০টায় ঘুমাতে যাই! প্রতি ৩০ দিনে (মাঝে মাঝে আরো কম সময়ে) পুরো একদিনের ঘুম গায়েব হয়ে যায় গোসলঃ এই একটা জিনিস যা কখনই মিস্‌ করি না। ছোটবেলা থেকেই পানির সাথে আমার প্রেম।

একঘন্টা শাওয়ারের নিচে না থাকলে সেটাকে গোসল বলে মনেই হয়না, তা গরমকাল হোক আর শীতকাল হোক! খাওয়াঃ ঝাল বাদে সবকিছুই খেতে পারি। দৈনিক একবেলা খাওয়াটাই সাধারণত অভ্যাস। মাঝে মাঝে দুইবেলা খাওয়া হয়ে যায়। তবে খুব কম সময়ই তিন বেলা খাই! তারপরও ওজন বাড়তেছে কম্পিউটারঃ এটাই আমার জীবন দৈনিক হিসেব করলে ১৪-১৮ ঘন্টা এটার পিছনে ব্যয় হয়। মাঝে মাঝে একটানা ৪৮-৭২ ঘন্টাও কম্পিউটারের সামনের চেয়ারটাতে বসে থাকি।

কখনই বিরক্তি লাগে না। আগে প্রচুর বই পড়তাম। এখন আর তেমন একটা পড়া হয়না। প্রতিদিন একটা মুভি (নতুন বা পুরান এবং অবশ্যই ইংরেজি) দেখাটা পুরোপুরি অভ্যাস হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে কম্পিউটারে গেইম খেলি, মাঝে মাঝে সারারাত জুরে তাস খেলা হয় বন্ধুদের সাথে।

ঘোরাঘুরি বাৎসরিক একবার এবং তা শীতের সময়। সামনে নেপাল যাওয়ার প্লান আছে। সময় না হলে, দেশের ভিতরই কোথাও যাব। প্রতিদিন ভোরে খবরের কাগজ পড়তে ভুল হয়না। কাজ/ক্লাস/এমনকি পরীক্ষায় দেরী হয়ে গেলেও এটা মিস্‌ হয় না প্রতিদিন এক থেকে দুবার আম্মার সাথে ফোনে কথা হয়।

আর কারো সাথে তেমন একটা কথা হয়না। যতটুকু সম্ভব ধর্মীয় নিয়ম-কানুনগুলো মেনে চলার চেষ্টা করি। এগুলো হল মোটামুটি নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় কাজ। এবার আসি শ্রেণীবিন্যাসে যেদিন কাজ থাকে যেদিন কাজ থাকে, সেদিন আর অন্য কিছু নেই। কাজের চাপ বেশি হলে ঘুমও ক্যানসেল ।

আমেরিকান লোকজনের সাথে কাজ করতে হয় বলে সারারাত ভর কাজ করতে হয়। বাংলাদেশে আমরা এখনও সেভাবে কাজ করা শুরু করিনি বলে এখনও বিদেশীদের উপরই নির্ভর করে থাকতে হয়। আমরা কয়েকজন বন্ধুরা মিলে একটা ওয়েব এজেন্সি খুলেছি ২০১০ এ। আমাদের প্রধান কাস্টমার আমেরিকান। আগামী বছর থেকে ইনশআল্লাহ্‌ বাংলাদেশেও পুরোপুরি কাজ শুরু করবো।

এখন আপাতত বাংলাদেশের মার্কেট নিয়ে পড়ালেখা করতেছি কাজের জন্য ক্লাস-পরীক্ষ প্রায়ই মিস্‌ হয়ে যায় স্যারদের সাথে ভাল সম্পর্ক থাকায় এখনও পর্যন্ত কোনো ঝামেলা হয়নি তবে শত কাজের চাপেও মুভি দেখা বাদ যায়না। একটা জিনিস বেশ ভাল লাগে "কারো উপর নির্ভর করে থাকতে হয় না"। যেদিন ক্লাস থাকে এবার আসি ক্লাসের দিনে সপ্তাহে ৪ দিন ক্লাস থাকে। প্রায় সপ্তাহেই ৫০% ক্লাস মিস্‌ হয়ে যায় কোনো কারন ছাড়াই দুপুর ১২টায় ক্লাস হলে আগের রাতে ঘুমাতে যাই সাধারণত ভোর ৬টার পর আর তাই বেশিরভাগ ক্লাস মিস্‌ হয়ে যায়। পরিক্ষার সময় বেপারটা হয় আরো জটিল।

যেমনঃ যদি সকাল ৯:৩০টায় পরীক্ষা থাকে তাহলে আগের রাত ৮-৯টা থেকে তাস্‌ খেলা শুরু হয়ে রাত ২-৩টা পর্যন্ত চলে (পরীক্ষার আগের রাতে তাস না খেল্লে আমাদের কারো পরীক্ষা ভাল হয়না ), এরপর পড়তে বসি। পড়তে পড়তে ৪টা-সাড়ে ৪টা বেজেগেলে ঘুমোতে যাই। ভোরে ৮টায় উঠে ইউনিভার্সিটির পথে রওনা দেই। হলে গিয়ে প্রশ্ন পাওয়ার পরে যখন লিখতে যাব তখন রাজ্যের সব ঘুম আমার চোখে এভাবেই চলে ক্লাস এবং পরীক্ষা চলাকালীন আমার (এবং আমার বন্ধুদের দিন) যেদিন আমি ফ্রী খুব কম সময়ই এমন দিন আসে যখন আসে, তখন সেটাকে লুফে নেয়ার চেষ্টা করি। আর সবচেয়ে কম ঘুমানো হয় এই ফ্রী দিন গুলোতেই বন্ধুদের সাথে আড্ডা, কম্পিউটারে গেম খেলা, স্টার সিনেপ্লেক্সে ভাল কোন মুভি থাকলে দেখতে যাওয়া, মাঝে মাঝে রাত ৯টার পরে হুট-হাট প্লান ছাড়াই কোথাও খেতে যাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদিই বেশি হয়।

আর এভাবেই কেটে যাচ্ছে আমার দিনগুলো। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।