আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সম্পর্ক অটুট রাখার উপায় সমূহ -----> আত্মউন্নয়ন মূলক পোস্ট পড়ে দেখুন হয়ত কাজেও লেগে যেতে পারে ...

বন্ধুত্বের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। জীবনে সফল হতে ভালো বন্ধুর সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন- এ কথা সবাই জানেন। কিন্তু ভালো বন্ধু ক’জনই বা পাওয়া যায়। কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়- ‘বন্ধু আমি পেয়েছি, যার সাক্ষাৎ আমি নিজেই করতে পারবো না। এরা সবাই আমার হাসির বন্ধু, গানের বন্ধু, ফুলের সওদার খরিদ্দার এরা।

এরা অনেকেই আমার আত্মীয় হয়ে উঠেছে, প্রিয় হয়ে উঠেনি কেউ। ’ আবার ভালো বন্ধু কাউকে পেলেও প্রয়োজনীয় পরিচর্যার অভাবে তিনি হারিয়ে যেতে পারেন জীবন থেকে। বন্ধুত্ব তৈরি হতে সময় লাগে। দীর্ঘদিন ধরে পরস্পরের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসার সমন্বয়ে ধীরে ধীরে তৈরি হয় বন্ধুত্ব। তবে বন্ধুত্ব নষ্ট হতে খুব বেশি দিন লাগে না।

সামান্য বিষয় নিয়ে অবিশ্বাস কিংবা আস্থাহীনতার কারণে দীর্ঘদিনের অন্তরঙ্গ বন্ধুও হয়ে যেতে পারে প্রাণের শত্রু। যদিও কেউ কেউ বলতে পারেন- এমনটা হলে বুঝতে হবে, তাদের মাঝে সত্যিকারের বন্ধুত্বই ছিল না। সে বিতর্কে আমরা যাব না। আজ আমরা বন্ধুত্ব শক্তিশালী করা ও অটুট রাখার উপায় নিয়ে আলোচনা করব। তবে তার আগে জানবো ভালো বন্ধুত্বের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।

ভালো বন্ধুত্বের বৈশিষ্ট্য কী? ক. পরষ্পরের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখে খ. সর্বাবস্থায় পরস্পরকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত থাকে গ. আনন্দ কিংবা বেদনার বিষয়গুলো পরস্পর ভাগাভাগি করে নেয় ঘ. পারষ্পরিক পরামর্শের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে ঙ. নিজেদের মধ্যে কোনো বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি হলে তা নিরসনে প্রস্তুত থাকে চ. আজীবন বন্ধুত্ব বজায় রাখে, এমনকি নিজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানের উন্নতি হলেও সম্পর্ক শক্তিশালী ও অটুট রাখবেন কিভাবে? বন্ধুত্ব কিংবা সম্পর্ক শক্তিশালী ও অটুট রাখার অনেক পন্থা আছে। যা ব্যক্তিত্ব ও সামাজিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে। তবে এখানে আমরা সাধারণ কিছু পরামর্শ দেব। যা আপনার সম্পর্ককে চিরদিন অটুট রাখতে সহায়তা করবে। ক. আস্থা ও বিশ্বাস আস্থা ও বিশ্বাস মানুষের মহৎ গুণ।

এটি সম্পর্ক শক্তিশালী ও অটুট রাখার ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধু, স্বামী-স্ত্রী, প্রেমিক-প্রেমিকা সবার ক্ষেত্রেই এ কথা প্রযোজ্য। আপনার সাথে ভালো সম্পর্ক আছে, এমন কাউকে আপনি বিশ্বাস করলে, তিনিও একইভাবে আপনাকে বিশ্বাস করবেন। আর তখন সম্পর্ক শক্তিশালী হয়ে উঠবে। কিন্তু এই বিশ্বাস অবিশ্বাসে রূপ নেবে, যখন এতে সন্দেহ ও স্বার্থপরতা থাকবে।

আর তা বেশি দিন চলতে থাকলে, যে কোনো সম্পর্কই ভেঙে যাবে। আর দু’জন হবেন দু’মেরুর বাসিন্দা। নিশ্চয়ই আমরা তা কেউ চাই না। আপনি হয়তো বলতে পারেন, বন্ধু সব সময় আমার জন্য ভালো কিছু করবে- তা কিভাবে বিশ্বাস করবো? ভালো কথা। আমরা আবারো বলবো ভালো বন্ধুকে বিশ্বাস করুন।

কারণ এটা নিশ্চিত যে, ভালো বন্ধু আপনার কখনো ক্ষতি করবে না। খ. গুরুত্বপূর্ণ দিন মনে রাখুন আপনার বন্ধুর জন্ম, বিবাহসহ স্মরণীয় দিনগুলো মনে রাখুন। এ দিনে তাকে সম্ভাষণ জানান। উপহারও পাঠাতে পারেন। অনেকে উপহার দেয়ার ক্ষেত্রে দামের বিষয়টি মুখ্য মনে করেন।

আসলে ভালো বন্ধু টাকা দিয়ে বিবেচিত হয় না। আন্তরিকতাই মুখ্য। তাই উপহার দেয়ার ক্ষেত্রে আপনার সাধ্যের ব্যাপারটি খেয়াল রাখুন। আপনি সাধারণ একটি কার্ডও পাঠাতে পারেন। গ. সমস্যার সময় সাহায্য করুন এ বিষয়ে ব্যাখা দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

শুধু বলবো, বন্ধুকে যে কোনো উপায়ে যতভাবে সম্ভব সাহায্য করতে চেষ্টা করুন। ঘ. যোগাযোগ রক্ষা করুন Out of sight out of mind-ইংরেজি এ প্রবাদটি আমরা সবাই জানি। সেজন্য যেখানেই থাকুন না কেন- যোগাযোগ রক্ষা করুন। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে ফোন বা ই-মেইলে যোগাযোগ করা খুবই সোজা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার তো আছেই।

এছাড়া ব্লগে আপনার দিনলিপি লিখেও বন্ধুকে শেয়ার করতে পারেন। ঙ. আনন্দগুলো ভাগাভাগি করুন আপনার আনন্দের বিষয়গুলো বন্ধুর সাথে ভাগাভাগি করুন। তার চিন্তা-ভাবনাও শুনুন। বন্ধুর উল্লেখ্যযোগ্য অর্জনে বাহবা দিন ও মজা করুন। রাসুল সা:-এর সাহাবিরা যখন একত্রিত হতেন, তখন পরস্পর অনেক বিষয় শেয়ার করতেন।

এমন কি তাদের আলোচনায় স্ত্রীদের সাথে সম্পর্কের বিষয়ও চলে আসত। চ. সুস্থ প্রতিযোগিতা বজায় রাখুন অনেক সময় দুই বন্ধুর অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে ভালো বন্ধুত্বও নষ্ট হয়ে যায়। তাই বন্ধুর সাথে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সচেতন থাকুন। পরষ্পরকে ছাড় দিন। ছ. টাকা-পয়সার লেনদেন টাকা পয়সার লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন।

সম্ভব হলে বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার না করাই ভালো। তবে খুব প্রয়োজন হলে করতে পারেন। সেক্ষেত্রে যথাসময়ে পরিশোধ করতে চেষ্টা করুন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে বন্ধুদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি ও মন কষাকষির সৃষ্টি হয়। যার ধারাবাহিকতায় বন্ধুত্ব ভেঙে যায়।

পরিশেষে বলবো, সম্পর্ক তথা বন্ধুত্ব অটুট রাখতে চাই পারস্পরিক আস্থা, বিশ্বাস, দায়িত্বশীলতা ও সম্মানবোধ। যার মাধ্যমে সম্পর্ক হবে আরো বেশি শক্তিশালী ও দৃঢ়তর। সংগ্রহীত ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।