আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিঠিটি তার জন্যই লেখা ছিল।

আমায় পছন্দ কর আর নাই বা কর....আমি সেই আমিই থাকবো। অচেনা তুমি, ছয়টি মাস পার হয়ে গেল। আমাদের অসমাপ্ত ভালোবাসাকে অসম্পূর্ণ রেখে তুমি চলে গেলে। আজো বুঝি না কেন চলে গেলে। নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করি কে জানে।

ভেতরের কথা জানি না, বাহ্যিক ভাবে কোন পরিবর্তন আসেনি আমার মাঝে। এখনো হোঁচট খাইনি এই কোলাহলের নগরীতে। তবে হ্যাঁ আজ আমি মিথ্যে বলতে শিখেছি। শিখেছি কিভাবে চোখের পানি আটকে, ঠোঁটের কম্পন লুকিয়ে বলতে হয় “আমি ভালো আছি। ” এমন কি আজ সবচেয়ে কাছের বন্ধুকেও এভাবে অনর্গল মিথ্যে বলে যাই।

‘ভাগ করলে কষ্ট কমে’ এই মহৎ বাণীটি মুছে ফেলেছি জীবনের খাতা থেকে। এখন আর সেই আগের মত চোখ নামিয়ে, ঠোঁট ফুলিয়ে কোন আব্দার করিনা। স্বপ্ন নামের প্রজাপতিটাকে আর তাড়িয়ে বেড়াই না। কেন না প্রজাপতিটা ঠিক তোমার মত আমার স্পর্শের বাইরে। ................................................................................................. ভেব না বলছি তোমায় স্পর্শ করার আকুতি আছে আমার মাঝে, না আছে তোমার ভালোবাসা পাবার ইচ্ছা।

মিথ্যে আশা আজ আমি আর করিনা। হ্যাঁ তুমিই আমায় বাস্তবতা শিখিয়েছ। বুঝিয়ে দিয়েছো যে কতটা বোকা ছিলাম আমি, কতটা সহজ ছিল আমায় ভাঙ্গা। ................................................................................................. অবাক হলে? ঠিক ধরেছ। এখনো ভাঙ্গিনি আমি।

এখনো ঝুলে আছি প্রানপণে। থাকবো না কেন, ভেবেছিলাম তুমি চলে গেলে জীবনটা বুঝি এখানেই থেমে যাবে। কিন্তু না, দেখ আমি বেঁচে আছি। আমার স্বত্তা, আমার অস্তিত্ব এখনো জানান দিচ্ছে যে আমি বেঁচে আছি। তাহলে কেন অর্ধমৃত জীবন ধারণ করবো।

অনেক কষ্ট এভাবে এগিয়ে চলা। জানো তো, একটি গাছের শেকড় উপঁড়ে তাকে অন্যস্থানে প্রতিস্থাপন করলে খুব কম সময়ই তা বেঁচে থাকে। মৃত্যু যখন আবধারিত তখন বিষাক্ত মাটিতে তিলতিল করে মরার চেয়ে একবার বাঁচার চেষ্টা করলে ক্ষতি কি! পুরনো মৃত স্মৃতিগুলোকে তো পুনরুজ্জীবিত করতে পারবো না, তারচেয়ে নতুন করে শুরু করে দেখি। ................................................................................................... স্বস্তির শ্বাস ফেলছো, ভাবছো ভুলে গেছি তোমায়? না ভুলিনি, পাবার আশাও করিনা। হয়তোবা পেতেও চাই না।

জানি না কি চাই আমি। আমার ভাষা আজ আমার কাছেই অস্পষ্ট। জানিনা কেন আজো কেদেঁ বেড়াই, কেন জীবনটাকে ছুঁড়ে ফেলছি এখানে সেখানে। সবটা কি তোমার দোষ ছিল? না, কিছুটা আমার বোকামিও বটে। কেন যে ভুলে গিয়েছিলাম এসময়ের ভালোবাসা সৈকতের পাড়ে তৈরি বালিঘরের মত।

ভাটার টানে ঠিক একদিন হারিয়ে যাবে। নীলচে আকাশ আর সাদা মেঘের খেলা দেখতে দেখতে খেয়াল করিনি কখন যে ভাটা এল। হ্যাঁ, আমায়ও টেনে নিয়েছিল প্রায়। হয়তো ভেসে যেতাম যদি আমার জীবনের সেই প্রিয়মুখগুলো সামনে এসে না দাঁড়াতো। ................................................................................................... কিন্তু দেখ কেমন পোড়া কপাল আমার, জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় মুহূর্তগুলো যে তোমার সাথে।

তাই ভুলতেও পারিনা তোমায়। সবাই বলে নতুন মুহূর্ত দিয়ে পুরনো স্মৃতি মুছে ফেল। আমি বলি তা কি এতই সহজ? নতুন বইয়ের নতুন পাতা তো আকর্ষণীয় হবেই, তাই বলে কি তা কখনো পুরনো সেই বইয়ের পাতার স্পর্শ, তার মাঝে বোনা স্বপ্ন ও গল্পগুলো ভুলিয়ে দিতে পারে!? তবে একটি উপায় আছে, বইটি পুড়িয়ে দিলেই চলে। কিন্তু তুমি তো আমায় চেন, সেই সাহস অন্তত আমার নেই। পুরনো জিনিসগুলোকেই আকঁড়ে রাখতে আমি বেশি পচ্ছন্দ করি।

ভয় হয় যদি এই মুহূর্তগুলো ফিরে না আসে তো কি নিয়ে আমি এগিয়ে যাব। স্মৃতিশূণ্য হয়ে কি মানুষ বাঁচে? না,তা সম্ভব নয়। মাঝে মাঝে সেই স্মৃতির পাতা উলটে নিজমনে মুচকি হেসে উঠি। সবাই ভাবে শোকে পাগল হয়ে গেলাম নাকি, না… এতটা পাবার যোগ্য তুমি নও। বুঝে উঠি না তুমি আজ আমার কাছে কি।

বলব না তোমায় ভালোবাসি, কিন্তু এটাও বলব না যে তোমায় ঘৃণা করি। অদ্ভুত…তাই নাহ? .................................................................................................. যাই হোক দিনতো কেটে যাচ্ছে। এইবা কম কি। কিন্তু জানো মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হয় এ ভেবে, একদিন আমার জীবনে নিশ্চয়ই এমন এক মানুষ আসবে যে আমায় অনেক বেশি ভালোবাসবে। তবে আমি কি পারবো সেই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে, তাকে সেভাবে ভালোবাসতে? যে বিশ্বাস তুমি ভেঙ্গেছ তা জোড়া লাগিয়ে তাকে বিশ্বাস করতে? জানিনা…ভালোবাসা নামক অনুভূতিটাকে আজ আমি ভীষণ ভয় পাই।

সেই ঘুটঘুটে অন্ধকার কিংবা সেই আটতলা ছাঁদ থেকে নেমে যাওয়া উচ্চতার চেয়েও বেশি। তাও ঠিক করেছি দেখে যাব শেষটা। এতো সহজে হারব না তোমার কাছে। হয়তো জীবনের সাথে যুদ্ধ করার মানসিকতা নেই, মেনে নিচ্ছি সব। তাও হারব না আমি…কিছুতেই না।

ইতি, সেই আমি। আমার লেখা এই চিঠি ১৭ মার্চ ভালোবাসার ডাকপিয়নে প্রকাশিত! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.