আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে শিবির এ কি তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে! ঘটনাটা কি?

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে আবারও তা-ব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীরা। তা-বে অত্যন্ত স্পর্শকাতর স্থান হিসেবে বিবেচিত জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকা, মতিঝিল, দৈনিক বাংলা মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল, উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকা, সচিবালয়ের আশপাশের পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রায় দেড়ঘণ্টা অচল ছিল বায়তুল মোকাররমসহ আশপাশের এলাকা। জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশ সাংবাদিক পথচারীসহ অন্তত অর্ধশত আহত হয়েছেন। আহত ২০ পুলিশের মধ্যে ১৫ জনকে রাজারবাগর পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পরে হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। হামলাকারীরা পুলিশের গাড়িসহ অন্তত ১০ যানবাহনে ভাংচুর ও অন্তত ৫ যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জ করতে হয়েছে। কারাবন্দী যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পক্ষে এক সাক্ষীকে ডিবি পুলিশ কর্তৃক আটক করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীরা তা-ব চালিয়েছে বলে জানা গেছে।

পুলিশ ৩৩ জনকে আটক করেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনার সূত্রপাত। প্রসঙ্গত, সোমবার আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর সাক্ষ্য গ্রহণ চলছিল। সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী সুখরঞ্জন বালী।

সাঈদীর আইনজীবীর অভিযোগ সুখরঞ্জন বালীর সাঈদীর পক্ষের সাফাই সাক্ষী। তাঁকে সাদা পোশাকের পুলিশ ভাগিয়ে নিয়ে গেছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধাপরাধীরা সাক্ষীকে মোটা অঙ্কের টাকার লোভ দেখায়। যাতে সাক্ষী রাষ্ট্রের বিপক্ষে এবং আসামির পক্ষে অবস্থান নেন। তাতে সাক্ষী রাজি না হলে আসামি পক্ষের লোকজন সাক্ষীকে সপরিবারে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে সাক্ষী আসামির পক্ষে অবস্থান নেয়। সাক্ষী নিজের নিরাপত্তাও দাবি করে। দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর পক্ষের আইনজীবীদের দাবি, আসামির পক্ষে সাক্ষ্য দেয়ার প্রেক্ষিতেই ডিবি পুলিশ রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীকে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে উচ্চ আদালত চত্বর থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে, যাতে সাক্ষী আসামির পক্ষে আর সাক্ষ্য দিতে না পারেন। এমন ঘটনায় আদালতে প্রচুর হট্টগোল হয়। এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া এ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিসের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জনকণ্ঠকে জানান, রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাক্ষী সুখরঞ্জন সম্পর্কে তারা অবগত নন।

ডিবি সুখরঞ্জনকে গ্রেফতার বা আটক করেছে কি-না সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য জানা নেই বলেও তিনি জানান। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ ৩৩ জনকে আটক করেছে। হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এমন ঘটনার প্রেক্ষিতেই কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আচমকা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও তার আশপাশের এলাকা, দৈনিক বাংলা মোড়সহ আশপাশের পুরো এলাকার প্রতিটি রাস্তার গলিতে তাৎক্ষণিকভাবে অবস্থান নেয় জামায়াত-শিবির-জঙ্গী ও স্বাধীনতা বিরোধীরা। তারা চোখের পলকে রাস্তায় নেমে পড়ে।

নেমেই বন্ধ করে দেয় সব ধরনের যানবাহন চলাচল। তারা কয়েকটি ধাপে কাজ শুরু করে। প্রথম ধাপের নেতাকর্মীরা রাস্তা দখলে নেয়। দ্বিতীয় ধাপের নেতাকর্মীরা যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। আর তৃতীয় ধাপের নেতাকর্মীরা যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হয়। পুলিশ এ্যাকশনে যাওয়ার আগেই হামলাকারী জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীরা বায়তুল মোকাররমসহ আশপাশের এলাকার গলি থেকে বের হয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালায়। হামলাকারীরা পুরানা পল্টন মোড় এলাকায় থাকা পুলিশের ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৪-১৭২৫ নম্বরের একটি পিকআপ ভ্যানে বেপরোয়া ভাংচুর চালায়। এছাড়া অন্তত ১৫ গাড়িতে বেপরোয়া হামলা চালায়, যানবাহনের দরজা জানালা ভাংচুর করে। ভাংচুরকালে হামলাকারীরা পুলিশের পিকআপসহ অন্তত ৫ গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।

হামলায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে যায় পুরো এলাকার স্বাভাবিক জনজীবন। এক পর্যায়ে পুলিশ হামলাকারীদের ওপর চড়াও হয়। হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশের লাঠিচার্জে হামলাকারীরা আবার বিভিন্ন গলিতে ঢুকে পড়ে।

এরপর গলি থেকে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল লাঠিসোটা নিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালায়। হামলায় সাংবাদিক, ২০ পুলিশ, পথচারীসহ অন্তত অর্ধশত আহত হয়। আহত ২০ পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের দেখতে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ।

আহতদের সুচিকিৎসার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে হাজির হয় অতিরিক্ত পুলিশ। জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীদের বেপরোয়া হামলার মুখে পুলিশ লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে হামলাকারীরা আবার বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়। চালাতে থাকে চোরাগোপ্তা হামলা।

হামলাকারীরা দৈনিক বাংলা মোড়ে ১টি, সিটি সেন্টারের সামনে ১টি এবং জনতা ব্যাংকের সামনে ৩টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। সংঘর্ষকালে পুলিশ ৩৩ জনকে আটক করে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে দেড়ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীদের সংঘর্ষের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.