আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাকড়সার যৌন জীবন

এক্সট্রা এনার্জি এক্সচেঞ্জার মাকড়সার যৌন জীবন ভারি বিচিত্র। বিশেষ করে আরগিওপ ব্রুয়েন্নিচি জাতের মাকড়সার। ওদের মধ্যেকার বুদ্ধিবিবেচনাসম্পন্ন পুরুষরা স্ত্রীদের প্রতি বিশ্বস্ত থাকে। পুরুষদের যৌনকর্মের ব্যাপারটা জীবদ্দশায় বড়জোর দুই পর্বের হয়ে থাকে। কারণ সঙ্গমকর্মের মধ্য দিয়ে তাদের যৌনাঙ্গ বিনষ্ট হয়ে যায়।

অনেক ক্ষেত্রে প্রথম দফা মিলনের পরই পুরুষকে মেরে খেয়ে ফেলে স্ত্রী মাকড়সা। প্রথম দফা মিলনের সময় এই সংহার পর্বটি যদি না হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে পুরুষের সামনে খোলা থাকে দুটি পথ হয় একই স্ত্রীর সঙ্গে ফের মিলিত হওয়া, নয়ত নতুন সঙ্গিনীকে খুঁজে বের করা। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, আরগিওপ ব্রুয়েন্নিচি জাতের মাকড়সার যৌনমিলনগত আচরণের ক্ষেত্রে বাছবিচারের ব্যাপারটা পুুরুষরা প্রথম যে স্ত্রী মাকড়সার সঙ্গে মিলিত হয়ে থাকে তার আকার ও বয়সের ওপর নির্ভর করে। স্বগ্রোত্রভুক্ত মাকড়সার ক্ষেত্রে একগামী হওয়ার অর্থ হলো পুরুষদের জীবন অত্যন্ত স্বল্পস্থায়ী হতে পারে।

এতে অবশ্য পিতৃত্বের সম্ভাবনা বাড়ে। ব্ল্যাক উইডো গোত্রের পুরুষ মাকড়সারা নিজেদেরকে খাওয়ার সুযোগ করে দিয়ে মিলনের স্থায়ীত্বকাল বাড়াতে এবং সেই কারণে নিষিক্তকরণ প্রক্রিয়াটি সফল করে তোলার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। আরগিওপ ব্রুয়েন্নিচির মতো একগামী মাকড়সারা একটা বিশেষ ধরনের উপাঙ্গ গড়ে তুলেছে যা স্ত্রী মাকড়সার জননেন্দ্রীয়ে পুরুষ মাকড়সার শুক্রাণু স্থানান্তরের কাজে ব্যবহার করা হয়। এই বিশেষ উপাঙ্গ আসলে হলো এক বিশেষ জননেন্দ্রীয়। মিলনের সময় এগুলো সাধারণত নষ্ট হয়ে যায়।

কিংবা আরও স্পষ্টভাবে বললে স্ত্রী মাকড়সার জননেন্দ্রীয়ের ভেতরেই খসে পড়ে একটা ছিপির মতো বস্তু তৈরি হয়। এই ছিপির কারণেই পরবর্তীকালে বিভিন্ন পুরুষ মাকড়সা একই স্ত্রী মাকড়সার সঙ্গে মিলিত হয়ে তার ডিম্ব নিষিক্ত করতে পারে না। পরিণতিতে প্রতিটি পুরুষ মাকড়সা গোটা জীবদ্দশায় মাত্র দু’বার মিলিত হতে পারে। তবে কথা হলো মিলনের পর্বটি খুব বেশিক্ষণ ধরে চলতে থাকলে স্ত্রী মাকড়সা সাধারণত পুরুষটিকে খেয়ে ফেলে। মিলনের প্রথম পর্বে পুরুষ মাকড়সা যদি বেঁচে যায় তখন তার সমানে দুটি পথ খোলা থাকে যার একটিকে তারা বেছে নিতে পারে।

সেটা হলো সেই স্ত্রীর সঙ্গে আবার মিলিত হওয়া কিংবা মিলনের জন্য ভিন্ন একটি মাকড়সাকে খুঁজে নেয়া। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে, আরগিওপ ব্রুয়েন্নিচি মাকড়সার যৌন মিলন কৌশল মোটেও এলোমেলো নয়, বরং সৃশৃঙ্খল। স্ত্রী মাকড়সাটি কুমারী, না ইতোমধ্যে অন্যের সঙ্গে মিলিত হয়েছে, তার বয়স, ওজন, অন্য স্ত্রী মাকড়সার প্রাপ্যতা এবং দিনের তখন কোন সময় এসব অবস্থার ভিত্তিতে পুুরুষ মাকড়সারা মিলনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। দেখা গেছে, বয়স যাই হোক না কেন সবচেয়ে বেশি ওজনের স্ত্রী মাকড়সারই গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। আরও দেখা গেছে একই স্ত্রী মাকড়সার সঙ্গে পুরুষ মাকড়সার দু’বার মিলিত হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে যদি সময়টা দিবসের প্রথম দিকে হয়, যদি স্ত্রী মাকড়সাটি ভারি শরীরের হয় এবং যদি নিকটতম অন্যান্য স্ত্রী মাকড়সার বয়োপ্রাপ্তি না হয়ে থাকে।

পুরুষরা দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্ধান করে চলে যদি সময়টা দিনের শেষভাগ হয় এবং প্রথম স্ত্রীটি ওজনে হাল্কা হয়ে থাকে। আরও লক্ষ্য করা গেছে যে, পুরুষরা দ্বিতীয় সঙ্গিনী হিসাবে ভারি ওজনের স্ত্রী মাকড়সার সঙ্গে জুটি বাঁধতেই বেশি পছন্দ করে। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ একগামী পুরুষ মাকড়সাকে প্রথম দফা মিলনের পর স্ত্রী মাকড়সারা খেয়ে ফেলে। এই শ্রেণীর পুরুষের একটা প্রবণতাই থাকে সবচেয়ে বয়স্ক ও ভারি ওজনের স্ত্রী মাকড়সার সঙ্গে মিলিত হওয়া। সূত্রঃ সায়েন্সটেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বের এমন সব খবরা খবরের সাথে নিজেকে আপডেট রাখতে যোগ দিন সায়েন্সটেক পেজে।

সায়েন্সটেক একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।