আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পশুর সঙ্গেই মানবেতর রাতযাপন হাটের গরু ব্যবসায়ীদের ।

আমরা হেরে যাইনি। এশিয়া কাপ না জিতলেও তোমরা আমাদের হৃদয় জয় করেছ। আমরা গর্বিত ‘ওদের পাশেই খাই, ওদের পাশেই ঘুমাই। সন্তানের মতো লালন-পালন করছি তো, এ জন্যি তেমন কষ্ট লাগে না। সারাটা দিন তো ওদের পেছনেই থাকি।

নাওয়া-খাওয়া, ঘুমের কথা মনে অয় না (হয় না)। ’ গতকাল এমনটাই জানলেন, গাবতলীসহ রাজধানীর বিভিন্ন পশুর হাটে আসা ব্যবসায়ীরা। দেশের নানা স্থান থেকে নগরীতে আসা পশু ব্যাসায়ীদের বিপাকে পড়তে হয়েছে। তাদের নেই কোনো থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তায় এবং হাটে বিক্রি করতে আনা গরু-ছাগলের সঙ্গে তাদের রাত কাটাতে হচ্ছে।

অনেকেই দু’পাশে সারিবদ্ধ করে রাখা গরুর মুখের সামনে রাতযাপন করে। অনেক ব্যবসায়ীকে দেখা গেছে, সারারাত আড্ডা বা গান শুনে সময় কাটাচ্ছে। তবে হাটগুলোর পাশে খাবারের দোকান থাকায় খাবারের তেমন সমস্যা না হলেও ব্যাপারীদের চরম ভোগান্তি রয়েছে রাতযাপন নিয়ে। অনেকের আবার হোটেল খাবার খাওয়া সাধ্য না থাকায় তাদের পড়তে হয়েছে বিপাকে। কথা হয় আরমানিটোলা হাট, তালতলা গরুরর হাট, মেরাদিয়া ও গাবতলী গরুর হাটসহ বিভিন্ন হাটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে।

ইজারাদাররা বলছেন, আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছি। জায়গা স্বল্পতার কারণে অনেক কিছু চেষ্টা করেও পারছি না। তবে গরু ব্যবসায়ীদের থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার জন্য ইজারাদাররা দায়ী করলেন সিটি করপোরেশনকে। প্রতি বছর গরুর হাটে আসা ব্যবসায়ীদের অভিযোগের অন্ত থাকে না। কিন্তু কারও যেন নজর নেই তাতে।

আগারগাঁও তালতলা খালি জায়গার হাটের কয়েকজন জানান, তারা ড্রেনের পাশেই রাতে ঘুমান। আক্কাস আলি বলেন, রাইতটা কোনোভাবে পার করলেই হলো। তবে ক্ষুব্ধ অনেক ব্যবসায়ী বলেন, ইজারাদারদের এদিকে কোনো নজরই নেই। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্ধারিত এলাকার বাইরেও যে যেখানে পারছে হাট বসিয়ে দিয়েছে। উত্তরার মতো অভিজাত এলাকায় একেবারে আবাসিক এলাকার রাস্তা দখল করে হাট বসানো হয়েছে।

আগারগাঁওয়ের বিশ্বব্যাংক-এডিবি কার্যালয়ের ফটকের সামনেও রাস্তাজুড়ে বসেছে পশুর হাট। বনানীর হাট নির্ধারিত সীমানা ছাড়িয়ে আরও প্রায় এক কিলোমিটার বিস্তৃত হয়েছে। এসব আবৈধ হাটের ব্যবসায়ী রয়েছেন আরও বড় দুর্ভোগের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকেও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। রাতে রাস্তায় থাকা অনেক ব্যবসায়ীকে তাদের কাছে জবাবদিহিতাসহ দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের দিতে হচ্ছে দৈনিক চা-পান বাবদ খরচ।

না দিতে চাইলে তাদের থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে তারা। আরমানিটোলা হাটের দক্ষিণ প্রান্ত কাজী আলাউদ্দিন রোড। এ রোড থেকে নয়াবজার রাস্তাটি পুরো সোজা। রাস্তার দু’পাশে বাঁশের বেড়া দেয়া হয়েছে। সারি সারি করে গরু বাঁধা।

মাঝখান দিয়ে চলাচলের রাস্তা। আর চলাচলের রাস্তায় রাতে অনেক ব্যবসায়ী ঘুমান বলে জানান। দিনে সেখান দিয়েই মানুষ যাতায়াত করছে। পাশাপাশি কোরবানি পশু আনা-নেয়া করা হচ্ছে। হাটে হাঁটলে কিছুক্ষণ পরপরই শোনা যাবে, ‘ভাই সরেন, গরু আইতাছে।

’ ফাঁকে ফাঁকে খরকুটো দিয়ে উঁচু করে বসেছেন ব্যাপারীরা। সেখানেই তারা রান্না করেন গরুর এবং নিজেদের খাবার। ঘুমানও এখানেই। কুষ্টিয়ার একজন ব্যাপারীর সহযোগী রহিম জানালেন, গরু রেখে অন্যত্র যাওয়ার সুযোগ নেই।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।