আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিক্সিংয়ের টাইমলাইন

ম্যাঅ্যাও. একটি নিষ্পাপ শব্দ ২৭ নভেম্বর, ২০০০: আজহার ও শর্মা আজীবন নিষিদ্ধ ভারতীয় অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। অন্যদিকে অজয় জাদেজা, মনোজ প্রভাকর, অজয় শর্মা ও ভারতীয় দলের সাবেক ফিজিও আলী ইরানির বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যায় জুয়াড়িদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার। নয়ন মঙ্গিয়া অবশ্য অভিযোগ থেকে মুক্তি পান। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকায় আজহারকে ক্রিকেট থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। আজীবন নিষিদ্ধ হন অজয় শর্মাও।

অজয় জাদেজাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। প্রভাকর ও ইরানিকে পাঁচ ভারতীয় ক্রিকেটের কোনো দায়িত্ব পাওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। ২০০৩ সালের জানুয়ারিতে দিল্লির আদালত এক রায়ে বলেন, অজয় জাদেজার বিরুদ্ধে জুয়াড়িদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর চার মাস পর জাদেজাকে ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেন আদালত। ২২ জুন, ২০০২: বিশ্বকাপ ম্যাচ নিয়ে প্রতিবেদন ১৯৯৯ বিশ্বকাপের বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পাকিস্তানের ‘ভান্ডারি কমিশন’।

তবে প্রতিবেদনে জানানো হয়, ম্যাচটি পাতানোর তেমন বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ১৭ আগস্ট, ২০০৪: ওদুম্বে নিষিদ্ধ সাবেক অধিনায়ক মরিস ওদুম্বেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে কেনিয়া ক্রিকেট সংস্থা। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় জুয়াড়িদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। ১২ অক্টোবর, ২০০৬: গিবসকে জিজ্ঞাসাবাদ ২০০০ সালের ভারত সফরের ব্যাপারে দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার হার্শেল গিবসকে দুই ঘণ্টার বেশি সময় জিজ্ঞাসাবাদ করে দিল্লি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ডেরেক ক্রুকস ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত বলে অভিযোগ করেন গিবস।

তবে ক্রুকস ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জানান, কিং কমিশনে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন তিনি। ১৩ মে, ২০০৮: স্যামুয়েলস নিষিদ্ধ দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারলন স্যামুয়েলস। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ২০০৭ সালে ভারত সফরের ওয়ানডে সিরিজে ভারতীয় জুয়াড়িদের কাছে অর্থের বিনিময়ে ম্যাচসংক্রান্ত তথ্য পাচার করেছিলেন। ১৫ মে, ২০১০: বাদ গেল না কাউন্টিও এসেক্সের দানিশ কানেরিয়া ও মারভিন ওয়েস্টফিল্ড গ্রেপ্তার হন। কিন্তু ফিক্সিংয়ের প্রাথমিক তদন্তের পর তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

২৯ আগস্ট, ২০১০: পাকিস্তান ক্রিকেটে তোলপাড় লর্ডস টেস্টে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার খবর ফাঁস করে দেয় ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ‘নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ ট্যাবলয়েডটির ছদ্মবেশী সাংবাদিকের পাতানো ফাঁদে পা দেন বাজিকর মাজহার মজিদ। তাঁর কাছ থেকেই টাকা খেয়ে নির্দিষ্ট ওভারের নির্দিষ্ট বলে মোহাম্মদ আমির ও মোহাম্মদ আসিফকে নো বল করতে বলেন সে সময়কার পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান বাট। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বাটকে ১০ বছর, আসিফকে সাত ও আমিরকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। এই তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে ইংল্যান্ডে কারাভোগ করতে হয়। ২০১১ সালের নভেম্বরে বাটকে আড়াই বছর, আসিফকে এক বছর ও আমিরকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন যুক্তরাজ্যের সাউথওয়ার্ক ক্রাউন আদালত।

কারাগারে ভালো আচরণ করলে বিদেশি নাগরিকদের আগেই ছেড়ে দেওয়ার আইন আছে যুক্তরাজ্যে। ওই আইনের কল্যাণে অর্ধেক সাজা খাটার পর মুক্তি পান আমির, আসিফ ও বাট। ক্রিকেটে দুর্নীতির কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের কারাভোগের ঘটনা এটাই প্রথম। ১৪ মে, ২০১১: আইপিএলে ফিক্সিং ভারতীয় একটি সংবাদ চ্যানেল ‘স্টিং অপারেশন’ চালিয়ে দাবি করে, আইপিএলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়, ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক ও আয়োজক অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পরই আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডাকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা।

১৬ মে ২০১৩: ভারতীয় ক্রিকেটে তোলপাড় স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে রাজস্থান রয়্যালসের তিন ভারতীয় ক্রিকেটার শ্রীশান্ত, অঙ্কিত চাভান ও অজিত চান্ডিলাকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। তবে ব্যাপারটা শুধু তিন ক্রিকেটার আর জুয়াড়িদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। জুয়াড়িদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে পাকিস্তানি আম্পায়ার আসাদ রউফ, বলিউডের অভিনেতা বিন্দু দারা সিং, চেন্নাই সুপার কিংসের শীর্ষ কর্মকর্তা গুরুনাথ মায়াপ্পন, রাজস্থান রয়্যালসের অন্যতম মালিক রাজকুন্দ্রার নাম উঠে এসেছে। রাজস্থান রয়্যালসের মালিকানা থাকায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে বলিউডের অভিনেত্রী শিল্পা শেঠিকেও। ৩১ মে ২০১৩: বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্ধকার জগৎ বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্ধকার জগত্ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘প্রথম আলো’ আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগ আকসুর কর্মকর্তাদের কাছে দেওয়া মোহাম্মদ আশরাফুলের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ফিক্সিংয়ের শিকড় শুধু বিপিএলে নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও বিস্তৃত।

বেরিয়ে আসে দুই সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন ও খালেদ মাসুদ পাইলট এবং সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ রফিকের নাম। এর চার দিন পর মিরপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান আনুষ্ঠিকভাবে জানান, দোষ স্বীকার করে আকসুর কাছে স্বীকারোক্তি দেওয়ায় ক্রিকেটে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ থাকবেন আশরাফুল। শুধু বিপিএল নয়, আকসু যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে বড় ধরনের তদন্তে নেমেছে, সেটাও স্বীকার করেন বিসিবির প্রধান। এর ঘণ্টা খানেক পর দোষ স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা চান বাংলাদেশের বহু অর্জনের সাক্ষী আশরাফুল। (সংকলিত)  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।